বৃহস্পতিবারে বাজারদর
পেঁয়াজ-বেগুন-মরিচের দাম কমল
রমজান মাসের প্রথম দিনে হঠাৎ করে বিভিন্ন পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। বিশেষ করে বেগুন, মরিচ ও শসার কেজি একশ টাকা বিক্রি করতে দেখা যায়। পঞ্চম রোজায় এ সব পণ্যের দাম অর্ধেক অর্থাৎ ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ১০০ টাকা ডজনের লেবুর দামও কমে ৪০ থেকে ৭০ টাকা, আর পেঁয়াজের কেজি কমে ২৫ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আদা, রসুনের দামও কেজিতে কমেছে ২০ টাকা পর্যন্ত। পাকিস্তানি মুরগির দামও কেজিতে ২০ টাকা কমে ৩০০ টাকা, ডালে ৫ টাকা কমে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। তবে চাল, মাছ, মাংসের দাম আগের মতো স্থির।
ক্রেতারা বলছেন, রোজার প্রথমে অনেক দাম বাড়লেও বর্তমানে আগের অবস্থায় চলে এসেছে। একটু স্বস্তি ফিরে এসেছে বাজারে। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
পেঁয়াজের কেজি ২৫ টাকা
দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বেশি হওয়ায় প্রতি সপ্তাহে কমছে পেঁয়াজের দাম। রমজান মাসে চাহিদা অনেক বাড়লেও পেঁয়াজের দাম কমছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ৫ টাকা। ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। মেসার্স মাতৃ ভান্ডারের কালাম শেখ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘আগের সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৪০ টাকা বিক্রি করা হলেও বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।’ এদিকে আদার দামও কমে ৮০ থেকে ১২০ টাকা, রসুন ৬০ থেকে ১২০ কেজি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
এ ছাড়া আগের মতোই আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, টমেটোর দাম কমে ২০ থেকে ২৫ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুনের দাম কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে।
তবে প্রথম রমজানে শসার কেজি ১০০ টাকা হলেও বর্তমানে কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাঁজর ৩০ টাকা, মুলা ২০ টাকা কেজি, শাকের আঁটি ৮ থেকে ১০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস বিক্রি করা হচ্ছে।
একইভাবে প্রথম রমজানে মরিচের কেজি ১০০ টাকা হলেও বর্তমানে কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। করলার দাম কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সজনে ডাঁটার দাম কমে ৬০ টাকা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
আগের দামে চাল
বোরো মৌসুম ঘনিয়ে এলেও কমছে না চালের দাম। তবে কয়েক দিনের নতুন ধান উঠলে কমবে বলে ব্যবসায়ীরা জানা। বর্তমানে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল। কারওয়ান বাজারের কুমিল্লা রাইস এজেন্সির মো. আবুল কাসেমও ঢাকাপ্রকাশকে জানান, ‘আগের সপ্তাহের মতো মিনিকেট ৬৫ টাকা কেজি, বিআর-২৮ চাল ৪৭ থেকে ৫০ টাকা, পারিজা ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।’
আগের দামে ভোজ্যতেল
সরকারের ভ্যাট কমানো ও বাজার মনিটরিংয়ের প্রভাবে সয়াবিন তেলের দাম আগের মতোই। তবে মিলমালিকরা আবার দাম বাড়ানোর সুযোগ নিচ্ছে। হাজী মিজান এন্টারপ্রাইজের মালিক মিজান বলেন, ‘আগের প্যাকেটজাত এক লিটার তেল ১৫৮ টাকা, ২ লিটার ৩১৫ টাকা, ৫ লিটার ৭৪০ থেকে ৭৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘রজমানের প্রথমে ছোলার কেজি ৭৫ টাকা বিক্রি করা হলেও বর্তমানে ৭০ টাকা, ১০০ থেকে ১২৫ টাকার মসুর ডাল ১২০ টাকা, খেসারি ডাল ৮০ টাকা। চিনির কেজি ৭৮ টাকা ও প্যাকেট চিনি ৮৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
স্থিতিশীল মাছের দাম
আগের সপ্তাহে মাছের দাম কিছুটা কমলেও বর্তমানে স্থিতিশীল বলে বিক্রেতারা জানান। কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আবু বকর বলেন, ‘আকারভেদে রুই ও কাতলা ২০০ থেকে ৪৩০ টাকা কেজি, চিংড়ি আকারভেদে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, চাষের শিং মাছ কেজি ৩০০ টাকা, দেশি শিং ৬০০-৭০০ টাকা, চাষের কই ৩০০ টাকা ও দেশি ৫০০ টাকা, দেশি শোল ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, ট্যাংরা ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা, আইড় ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।’
তবে ইলিশ মাছে রমজানের ঝাঁজ লেগে গেছে সপ্তাহের ব্যবধানে। আগে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা এক কেজির ইলিশ মাছ হয়েছে ১৪০০ টাকা কেজি। তবে দেড় কেজি হলে ১৫০০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। বৈশাখ ঘনিয়ে আসায় সামনে আরও দাম বাড়বে।
কমেছে মুরগির মাংসের দাম, স্থিতিশীল গরু-খাসির মাংস ও ডিমের দাম
আগের সপ্তাহের মতোই গরুর মাংস ৬৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৬৫০ টাকা কেজি, খাসির মাংস ৯৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান জনপ্রিয় মাংস বিতানের নুরুল ইসলাম। আগের সপ্তাহে বয়লার ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা কেজি, পাকিস্তানি কর্ক ৩০০, দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হলেও রমজানে কেজিতে বেড়ে যায় ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু পঞ্চম রমজানে সেই বাড়তি ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা কমে দেশি মুরগির কেজি ৫৫০ টাকা, পাকিস্তানি ২৮০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা, পোল্ট্রি মুরগি ১৬৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। যা মূল্য তালিকার চেয়ে কম দাম। আগের সপ্তাহের মতোই ডিমের ডজন সর্বোচ্চ ১০০ টাকা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
জেডএ/আরএ/