র্যাব পরিচয়ে ৭১ লাখ টাকা লুট, গ্রেপ্তার ৮
কেরানীগঞ্জের কোনাখোলা এলাকায় গত ৩১ জানুয়ারি দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে র্যাব পরিচয়ে ৭১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত দল। এ ঘটনায় ডাকাত দলের ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সুজন মন্ডল (৩৯), আলামিন ওরফে রেহান, কবির (৪৬), মিল্টন (৪৩), জাবেদ ওরফে সিরাজুল (৪০), নয়ন ওরফে বাবু (২৮), কামাল (৪৫) ও আ. রহমান ওরফে সাজ্জাদ (৪৫)।
পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা-নবাবগঞ্জ ও ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে সক্রিয় একাধিক ডাকাত চক্র। ডাকাতরা র্যাব পরিচয়ে ঢাকা-নবাবগঞ্জ রোড এবং ঢাকা-মাওয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যাতায়াতকারী বাস থামিয়ে ব্যবসায়ীদের জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে ডাকাতি করে আসছিল। তাদের মূল টার্গেট ছিল স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি দুপুরে দোহারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী নাহিদ ও খোকন স্বর্ণ বিক্রির জন্য ঢাকার তাঁতীবাজারে যায়। স্বর্ণ বিক্রি শেষে নাহিদ ৪০ লাখ টাকা ও খোকন ৩১ লাখ টাকা সঙ্গে নিয়ে দোহারের উদ্দেশে নবকলি বাসে উঠেন। বাসটি কেরানীগঞ্জের কোনাখোলা এলাকায় পৌঁছালে একটি সাদা মাইক্রোবাস বাসটিকে থামায়। র্যাবের পোশাক পরা ৫ জন বাসে প্রবেশ করে যাত্রীদের জানায়, বাসটিতে দুইজন আসামি আছে। পরে বাসে থাকা স্বর্ণ ব্যবসায়ী নাহিদ ও খোকনকে তারা অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগসহ জোর করে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তোলে। সত্যিই তারা র্যাব সদস্য কি না জানতে চাইলে দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে বেধড়ক পেটানো হয়। তাদের সঙ্গে থাকা ৭১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে নির্জন এলাকায় হাত পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে যায় কথিত র্যাব।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দুজন বাদী হয়ে মামলা করে। এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে র্যাব পরিচয়ে ডাকাতি করা দুর্ধর্ষ ডাকাত দলের সন্ধান পায় ঢাকা জেলার পুলিশ। কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাবুদ্দিন কবীর, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন-অর রশিদের সমন্বয়ে গঠিত আভিযানিক দল কেরানীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এবং ডিএমপির বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ঢাকা-মাওয়া এবং ঢাকা-নবাবগঞ্জ সড়কে কিছু ব্ল্যাক স্পট চিহ্নিত করেছে পুলিশ। যেখানে ডাকাতির ঘটনা বেশি হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁতীবাজারে আসা স্বর্ণ ব্যবসায়ীরাই ডাকাত দলটির মূল টার্গেট।
আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
কেএম/এসজি