মেট্রোরেল: স্টেশন বন্ধ, তবুও লাইনে যাত্রীরা

রাজধানীবাসীর দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্নপূরণের পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন অধ্যায় সূচিত হয়েছে বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) মেট্রোরেলের উদ্বোধনের মাধ্যমে। এরপর আজ বৃহস্পতিবার সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে মেট্রোরেল।
চালু হওয়ার প্রথমদিন সকালেই আগারগাঁও স্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে হাজার হাজার মানুষ। কিছু মানুষ মেট্রোরেলে উঠতে পারলেও অনেকেই উঠতে পারেনি।
যারা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট পাননি তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মেট্রোরেলের চড়তে না পেরে সাধারণ ভ্রমণ যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা এখনো লাইনে দাঁড়িয়ে আছি কর্তৃপক্ষ আমাদের লাইনে এসে ঘোষণা না করে মেট্রোরেলের গেটে তালা মেরে রেখেছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে (২৯ ডিসেম্বর) আগারগাঁও স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, মেট্রোরেলে চড়তে ভোর থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছে যাত্রীরা। কেউ অফিসগামী, কেউবা এসেছেন পরিবারসহ। অনেকে শুধু মেট্রোরেলে ঘোরাঘুরি করতে এসেছেন। অনেকে আবার গ্রাম থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেকে মেট্রোরেলে উঠে আর নামেননি। কয়েক ধাপের টিকিট কেটে ঘুরাঘুরি করেছেন তারা। যার কারণে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ নির্দিষ্ট সময়ে মেট্রোরেলে চড়তে পারেনি। এজন্য তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
শীতের সকালে ভোর থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে প্রথমবারের মতো মেট্রোরেলে চড়তে এসেছেন লালবাগের জব্বার হোসেন। জব্বার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি ১২টার সময় জানতে পারলাম আপাতত মেট্রোরেল বন্ধ। সারাদিনটা আমার নষ্ট হলো।
মহাখালী থেকে মেট্রোরেলের চড়তে এসেছেন জাকির হোসেন। জাকির হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, চার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও মেট্রোরেলের টিকিট পাইনি এখনো দাঁড়িয়ে আছি।
দেখা গেছে, প্রথম দিনেই এতো মানুষের ভিড়ে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ধীর গতিতে স্টেশনে যাত্রী ঢুকিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে স্টেশনের বাইরে অপেক্ষমান যাত্রীর সংখ্যা এবং লাইন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে।
মেট্রোরেলে পরিবার নিয়ে দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও আবার আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ি দুই ধাপে ভ্রমণ করেছেন নজরুল আহমেদ। নজরুল আহমেদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি একটি ব্যাংকে কর্মরত রয়েছি। আমার পরিবার গ্রামের বাড়িতে থাকে। দুই সন্তানের দাবি, তাদের নিয়ে মেট্রোরেলের চড়তে হবে এজন্য তাদের নিয়ে মেট্রোরেলে কয়েক ধাপে ভ্রমণ করেছি।
এদিকে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক ভ্রমণ যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। মেট্রোরেলের যাত্রী সংখ্যা বাড়ালে সবাই মোটামুটি চড়তে পারত— আগামী দিন থেকে যেন এমনটা হয়।
টিকিটের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা চঞ্চল হোসেন বলেন, টিকিট বন্ধ করার আগে লাইনে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের ঘোষণা করা উচিত ছিল যে আজ আর মেট্রোরেল চলবে না। তারা মেট্রোরেল গেটে তালা মেরে রেখে চলে গেছে।
এর আগে ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ২৯ তারিখ সকাল থেকে আমাদের যে কর্মসূচি আছে, সেখানে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ চার ঘণ্টা মেট্রোরেল চালানো হবে। প্রথমদিকে কোনো স্টেশনে ট্রেন দাঁড়াবে না। উত্তরা থেকে একটি ট্রেন, আরেকটি ট্রেন আগারগাঁও স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করবে। উভয়দিকে ট্রেনগুলো প্রতি ১০ মিনিট পরপর চলাচল করবে।
কেএম/আরএ/
