শাবি শিক্ষার্থীদের ভরসার আশ্রয়স্থল বিশ্ববিদ্যালয় বাস
গণপরিবহনের ভাড়া দিনের পর দিন বাড়তে থাকায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসার আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদালয়ের বাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন বিশ্ববিদালয় গেইট থেকে সিলেট নগরীর বিভিন্ন স্থানে টিউশন পড়াতে যায় প্রায় চার হাজারের অধিক শিক্ষার্থী। সম্প্রতি সিলেটে সিএনজি ভাড়া বৃদ্ধিতে কয়েকদফা চেষ্টা করেও ভাড়া হ্রাস সম্ভব হয়ে উঠে নি।
ফলে আগে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় গেইট থেকে আম্বরখানা যাওয়া যেত মাত্র ১৫টাকা দিয়ে সেখানে তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ টাকায়। ফলে এই বৃদ্ধি হওয়া ভাড়ায় অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। আর তাই শিক্ষার্থীরা এখন ভাড়া বাঁচাতে একমাত্র ভরসার আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিয়েছে বিশ্ববিদালয়ের পরিবহন বাস।
এদিকে জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় ২০ শতাংশ জ্বালানি সঞ্চয় করার নির্দেশ দিয়েছেন সরকার। আবার জ্বালানি দাম বেড়েছে ৪৫ শতাংশ। ফলে এ দুয়ে মিলে দাঁড়িয়েছে ৬৫ শতাংশ। আর এই ৬৫ শতাংশকে বাদ দিয়েই আগের চেয়ে বেশি বাস চালানো করছে পরিবহন দপ্তর।
এতে শিক্ষার্থী পরিবহনে যেন কোনো গাফিলতা না হয় সে দিকে তৎপর রয়েছেন গত ০৮ ফেব্রয়ারি নতুন পরিবহন প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। দায়িত্ব পাবার পর শিক্ষার্থী পরিবহন ট্রিপে বাড়িয়েছেন আরও দুটি বাস।
প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে আড়াই হাজার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি আবাসিক হলে থাকেন। এর বাইরে বাকি সাড়ে ছয় হাজার শিক্ষার্থী নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্যাম্পাসে আসেন। প্রতিদিন ৭ নির্দিষ্ট সময়ে সিলেট শহর ও শহরতলির ১৬টি স্থান থেকে শিক্ষার্থীরা বাসে যাতায়াত করেন।
বিশ্ববিদালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী সাবিহা সায়মন পুস্প বলেন, আগে টিউশনে যেতাম সিএনজি দিয়ে। এখন যেভাবে সিএনজি ভাড়া বেড়েছে তাতে বিশ্ববিদ্যালয় বাস ছাড়া উপায় নেই। তাই প্রতিদিন বাস ব্যবহার করি। বিশ্ববিদালয় বাস ব্যবহার না করলে একদিকে যেমন গণপরিবহনে ভোগান্তি আছে তেমনি নিরাপত্তাহীনতাও আছে। সব দিক বিবেচনা করে বিশ্ববিদালয় বাসই এখন শিক্ষার্থীদের ভরসার আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
নতুন পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি দায়িত্ব পেয়েছি মাসখানেক আগে। দায়িত্ব পাবার পর থেকেই সর্বোচ্চটা দিয়ে যাবার চেষ্টা করছি। আমাদের ২০ শতাংশ জ্বালানি সঞ্চয় করতে বলা হয়েছে, সেই সঙ্গে জ্বালানি দাম ও বেড়েছে ৪৫ শতাংশ। ফলে এই ৬৫ শতাংশ এর কথা চিন্তা করেই আমাদের পরিবহন ব্যবহার পরিচালনা করতে হচ্ছে।
কিন্তু এত কিছুর পরেও আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চলাফেরায় কোনো বাস কমাইনি। বরং বাড়িয়েছি। আর এ বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ। সুতরাং আমার অনুরোধ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাই যেন তার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করেন এবং সম্পদের সুষ্ঠ ব্যবহারে সবাইকে সহযোগিতা করার আহবান জানাই।
এএজেড