কুবিতে জুনিয়রকে মারধর, ছাত্রলীগ নেতাকে হল ছাড়ার নির্দেশ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সিনিয়র কর্তৃক জুনিয়রকে মারধরের ঘটনায় আইন অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নেওয়াজ শরিফ ফাহিমকে হল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (২৫ মার্চ) মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট মোকাদ্দেস-উল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত প্রাথমিকভাবে এ সিদ্ধান্ত নেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মীরহাম রেজা শুক্রবার দুপুরে ক্যান্টিন বয়কে হলের অভ্যন্তরে উচ্চস্বরে ডাকায় আইন অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নেওয়াজ শরিফ ফাহিম (২০১৬-১৭ সেশন) তাকে ধমকের সুরে শাসান। পরবর্তীতে তাদের দুইজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হলে মীরহামের বিভাগের (প্রত্নতত্ত্ব) সিনিয়র ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমেদ (১৮-১৯ সেশন) তার জুনিয়রকে কেন ধমক দেওয়া হয়েছে তা জানতে চান। যা নিয়ে দুই দফা ফাহিমের সঙ্গে সেলিমের বাকবিতণ্ডা হয়। ঘটনার এক পর্যায়ে ফাহিম হল গেইটে প্রথমে সেলিমকে মারধর করেন পরবর্তীতে সেলিমও ফাহিমের গায়ে হাত তোলেন।
এ বিষয়ে প্রথমে বাকবিতণ্ডায় জড়ানো শিক্ষার্থী মীরহাম রেজা বলেন,‘ ক্যান্টিনে কিছু টাকা বাকি থাকায় ক্যান্টিন বয়কে ডাকতেছিলাম। তখন উনি (ফাহিম) আমাকে বলেন-তুই আমারে চিনস? তুই এমনে কথা বলস কেনো? আর একটা কথা বললে তোর হাত পা-কেটে ফেলব। উনাকে আমি চিনতাম না, উনাকে সালাম না দেওয়ায় এমন আচরণ করে আমার সাথে।’
মীরহামের বিভাগের সিনিয়র সেলিম আহমেদ বলেন, বিভাগের জুনিয়রকে ধমকানো হয়েছে জানতে পেরে আমি তার (ফাহিম) কাছে বিষয়টি কি হয়েছে জানতে চাই। কিন্তু উনি আমাকে কথাবার্তার এক পর্যায়ে পাঞ্জাবি ধরে হল গেইটে মারধর করেন।
এ বিষয়ে মারধরকারী সিনিয়র শিক্ষার্থী ফাহিম বলেন, হলের সিনিয়র হওয়ায় আমি তাকে (মীরহাম) সতর্ক করার জন্য প্রভোস্টের রুমের সামনে উচ্চস্বরে কথা না বলতে নিষেধ করি। কিন্তু সে আমার সাথে উদ্ধতপূর্ণ আচরণ করার পাশাপাশি তার বন্ধুদের নিয়ে আসে আমাকে মারার জন্য। কিন্তু সেলিম আমাকে একই বিষয়ে জিজ্ঞেস করে আমার উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করে। যেটা নিয়ে সে এক পর্যায়ে আমার দিকে তেড়ে আসলে আমি তাকে আঘাত করি। পরবর্তীতে সেও আমাকে পাল্টা আঘাত করে।
হল ছাড়ার নির্দেশনার বিষয়ে ফাহিম বলেন, জুনিয়রকে মারধর করাটা আমার ঠিক হয়নি। তাই স্যাররা হয়তো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু এটা যদি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয় তবে আমার আক্ষেপ থাকবে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম বলেন, আমরা প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফাহিমকে (প্রথমে মারধরকারী) এই মাসের মধ্যে হল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। পরবর্তীতে হল বডির সবাইকে নিয়ে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাব।
এসআইএইচ