দিনব্যাপী নানা আয়োজনে ঢাবিতে ইরানি নববর্ষ উদযাপন
দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ইরানি নওরোজ ও বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হয়।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ এবং ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের কালাচারাল সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাফ্ফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে নববর্ষ উদযাপিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে নওরোজের বিশেষ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা তুলে ধরেন; সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্যে ছিল নওরোজ পরিচিতি, ফারসি ও বাংলা সংগীত, নাটিকা, হাফত সিন, কবিতা আবৃত্তি, ছোটগল্প ও শাহনামেখানি ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এবং ঢাকাস্থ ইরানি রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভুশি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইরানি কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়েদ রেজা মির মোহাম্মাদি।
বক্তারা ইরানি নওরোজের সঙ্গে বাংলা নববর্ষের সাযুজ্যতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, প্রাচীন সভ্যতার লীলাভূমি ইরান। দেশটির ভাষা হলো ফারসি। পৃথিবীর সুমিষ্টতম ভাষা। প্রেম, লালিত্য, মাধুর্য, কাব্য-সাহিত্য ও দর্শনের ভাষা হিসেবে ফারসি বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। পারস্যের সাহিত্য মানবিকতা, মূল্যবোধ ও সমৃদ্ধতার দিক থেকে গোটা পৃথিবীতে এক অনন্য উচ্চতায় সমাসীন। দেশটির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ঈর্ষণীয়; নওরোজ বা নববর্ষ পারস্যের বা ইরানের সবচাইতে বড় জাতীয় উৎসবের নাম। ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও নওরোজের কদর তাদের কাছে সবচেয়ে বেশি। সমগ্র জাতি বিশেষ উদ্দীপনায়, ব্যাপক আগ্রহভরে নওরোজ পালন করে থাকে এবং নওরোজের অনুষ্ঠানমালা হৃদয় দিয়ে উপভোগ করে থাকে।
তারা আরও বলেন, বাঙালির নববর্ষের আচার-অনুষ্ঠানের মতো সেখানে নেই কোনো ফতোয়ার থাবা, নওরোজকে বিতর্কিত করবার, অথবা প্রশ্নবিদ্ধ করবারও নেই কোনো অপপ্রয়াস। বাদশাহ জামশিদের আমলে শুরু হয়ে পরবর্তীতে ইসলামি আচার-রীতির সংযোজনের মাধ্যমে এই নওরোজ পরিণত হয় এক পরিশীলিত, উপভোগ্য উৎসবে যেখানে জাতীয় চেতনায় শাণিত হয়ে ঐক্যবদ্ধ হয় গোটা ইরানি জাতি।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং ইরান দূতাবাসের কালাচারাল সেন্টারের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে জাতিসংঘের ইউনিসেফ ২১ মার্চ নওরোজের দিনটিকে ‘বৈশ্বিক ঐতিহ্যিক উত্তরাধিকার’ হিসেবে ঘোষণা করে। ইউনিসেফ কর্তৃক এ ঘোষণার পর ইরান সরকারের ব্যবস্থাপনা ও আতিথ্যে বর্তমানে আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশে নওরোজ উৎসব পালিত হচ্ছে।
এমএমএ/