চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি

সরকারিসহ সব ধরনের চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে চাকরি প্রত্যাশীরা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী ২৮ জানুয়ারি ঢাকায় শিক্ষার্থী সমাবেশসহ সব জেলা, বিভাগী শহর ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে; এ ছাড়া সরকারকে স্মারকলিপিও দেবেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় ও সংবাদ সম্মেলন এমনটা জানিয়েছে দেশের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে সদ্য গঠিত ‘চাকুরীতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ’।
এ সময় সংগঠনটির আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম শুভ বলেন, আমাদের এই প্ল্যাটফর্মটি কোনো সংগঠনের নয়, এটি এদেশের চাকরিপ্রত্যাশী প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর।
ইতোপূর্বে যারা এই দাবিতে আন্দোলন করেছে, আমরা তাদের দাবির সঙ্গে সংহতি জ্ঞাপন করছে। প্রয়োজনে তাদের নিয়ে আন্দোলনে যাব। ইতিমধ্যে ৪১ জেলায় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিগগিরই বাকি জেলাগুলোতে কমিটি গঠন করা হবে। আগামী ২৮ জানুয়ারি সারা দেশে কর্মসূচি পালন করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিশ্বের ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর, কোনো কোনো দেশে তা উন্মুক্ত। দক্ষিন এশিয়ার দেশেগুলোর মধ্যে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিভিন্ন রাজ্য ভেদে চাকরিতে আবেদনের বয়স সীমা ৩৫-৪৫ বছর, মালদ্বীপে ৪৫ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৩৫ বছর, নেপালে ৩৫ বছর, এমনকি আফগানিস্তানেও ৩৫ বছর। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু বাংলাদশে এবং পাকিস্তানেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর।
বিসিএসে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর হলেও জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে (বিজেএস) আবেদনের বয়সসীমা ৩২ বছর, সরকারি নার্সিংয়ে ৩৫ বছর এবং বেসরকারি স্কুল-কলেজে ৩৫ বছর, যা বৈষম্যমূলক বলে চাকরি প্রত্যাশীদের দাবি।
বাংলাদেশের জাতীয় যুব নীতিতে ১৮-৩৫ বছর বয়সীদের যুবক বলা হলেও ৩০ বছরে বেশি হলে কেন তাদেরকে চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, এমন প্রশ্ন রাখেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।
নিজেদের দাবির পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩২ বছর আগে ২৭ বছর থেকে ৩০ বছর করা হয়। ওখন বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৫৭ বছর। গড় আয়ু বেড়ে ৭৩ বছর হলেও চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানো হয়নি।
সংবাদ সম্মেলন থেকে চাকরিতে আবেদন ফি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধুর নামে বঙ্গবন্ধু ল’ কমপ্লেক্স, বঙ্গবন্ধু চেয়ার এবং একটি ম্যুরাল স্থাপনের দাবি জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ’ ও ‘চাকরিপ্রত্যাশী যুবপ্রজন্ম’ ব্যানারে আন্দোলন করে আসছেন অনেক চাকরিপ্রত্যাশী।
এমএমএ
