বিলম্ব ফি তিনগুণের বেশি, বিপাকে জবি শিক্ষার্থীরা

করোনা পরবর্তী সময়ে অসহনীয় বিলম্ব ফি দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। সেমিস্টার ফি দিতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থীর বিলম্ব ফি দ্বিগুণ থেকে তিনগুণে দাঁড়িয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় মেস ভাড়া নিয়ে। সেক্ষেত্রে মাস শেষে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে থাকা-খাওয়া বাবদ গুণতে হয় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পুরো টাকাই আসে টিউশন থেকে। এ টাকা থেকেই দিতে হয় সেমিস্টার ভর্তি ফি, পরীক্ষার ফিসহ লেখাপড়ার খরচাদি। অনেক ক্ষেত্রে সময়মতো ফি পরিশোধ না করতে পারলে শিক্ষার্থীদের জন্য বিলম্ব ফি হয়ে উঠে ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা।’
নির্ধারিত সময়ের পরে প্রথম মাসে বিলম্ব ফি বাবদ ৩০০ টাকা করে নেওয়া হয়। পরবর্তী মাসগুলোতে ১০০০ টাকা হারে বিলম্ব ফি যোগ হতে থাকে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার বরাবর জরিমানা মওকুফের আবেদন করলে সেটি নাকোচ করে দেন এবং উপাচার্য বরাবর আবেদন করার পরামর্শ দেন। উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করার প্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী তাদের সমস্যার সমাধান খুঁজে পাচ্ছেন না।
অতিরিক্ত বিলম্ব ফি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের জহিরুল ইসলাম বলেন, আর্থিক অভাবের জন্য নির্ধারিত সময়ে ভর্তি হতে পারিনি। কিন্তু যখনই টাকা যোগাড় করে ভর্তি হতে গেলাম দেখি ১ হাজার ১৩৫ টাকা ভর্তি ফি এর বিপরীতে ৩ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা এসেছে। একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এত টাকা জরিমানা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ভর্তি না হতে পারলে পুরো একটা বছর নষ্ট হয়ে যাবে। যে কারণে মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে দিন যাচ্ছে। ডিপার্টমেন্ট ও প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেও কোনো ফল পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিৎ সমস্যার সমাধান করা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের একজন শিক্ষার্থী বলেন, আমি যথাসময়ে সেমিস্টার ফি পরিশোধ করলেও এবার আর্থিক সমস্যা ও পারিবারিক অস্বচ্ছলতার জন্য দিতে বিলম্ব হওয়ায় ১ হাজার ৯৩৫ টাকা সেমিস্টার ফির বিপরীতে বিলম্ব ফি ৩ হাজার ৩০০ টাকা হয়েছে। মোট ৫ হাজার ২৩৫ টাকা পরিশোধ করতে হবে যা আমার পক্ষে দেওয়া অসম্ভব। আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। যার দরুণ লেখাপড়ায় বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একটা যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, শিক্ষার্থীরা যেন সঠিক সময়ে ফি পরিশোধ করে এজন্যই এ জরিমানা ফি। শিক্ষার্থীদের মোবাইলের খরচ মাসে অনেক টাকা আসে। আর সেমিস্টার ফি অল্প টাকা সঠিক সময়ে দিলেই হয়। তারপরেও বিলম্ব করলে প্রথম মাসের জন্য ৩০০ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি মাসের জন্য ১০০০ টাকা করে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারকে বার বার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
এসএন
