বশেমুরবিপ্রবি’র সাংবাদিক সমিতির বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
![](https://admin.dhakaprokash24.com/logo/placeholder.jpg)
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) সাংবাদিক সমিতির বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, উপদেষ্টাদের সঙ্গে অসদাচরণ এবং রাতে অফিসে সাধারণ সম্পাদক পরান কর্তৃক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর দের উপর হামলাসহ একাধিক কারণে এই কমিটিকে বিলুপ্ত করা হয়৷
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং আজীবন উপদেষ্টা মো. রেজোয়ান হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়।
উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে শাফিউল কায়েস (আহ্বায়ক), সাগর দে (সদস্য সচিব) ও আব্দুস সালাম (সদস্য) কে নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, “বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতি-২০১৫ সালে গঠন করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষার্থে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে একতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির লক্ষ্যে। কিন্তু জিনিয়া-পরান কমিটি বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি কলহে লিপ্ত হতে দেখা যায়, যা সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ম করে এবং সাংবাদিক সমিতি যে লক্ষ্যে গঠন করা হয়েছিল তার সম্পূর্ণ পরিপন্থী কাজ এটি। জিনিয়া-পরান ক্ষমতায় আসার পর থেকে সাংবাদিক সমিতির একক নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে বিভিন্ন কৌশলে সংগঠনের সিনিয়রদের মাইনাস করার খেলায় মেতে ওঠে।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাইনুদ্দিন পরান সামান্য মতবিরোধের জেরে সাগর দে কে জনসম্মুখে বেধড়ক মারধর করে এবং দ্রুত পালিয়ে যায়। এমন ঘটনা সাংবাদিক সমিতির ইতিহাসে এই প্রথম। এ ছাড়াও কিছুদিন আগে সাংবাদিক সমিতির সদস্য শাফিউল কায়েসকে নিউজ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এবং ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে নানাভাবে হেনস্থা করা হয়। সমিতিতে নতুন সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে জিনিয়া-পরান কমিটি তাদের অনুগতদের সমিতিতে অন্তর্ভুক্ত করে দলীয়করণ শুরু করে, যাতে করে একচেটিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুবিধা হয়। মেয়াদ শেষ হবার পরেও সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়োগসহ নানা স্বেচ্ছাচারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে এই কমিটির বিরুদ্ধে।
এ ছাড়াও মুজিববর্ষ উপলক্ষে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশের জন্য ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে একটি ভালো অঙ্কের টাকা পায় সাংবাদিক সমিতি। এ ছাড়াও সাংবাদিক সমিতির সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে একটি বাৎসরিক বাজেট পাস করার জন্য এই কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কয়েকবার সাক্ষাৎ করেছে। তবে সাক্ষাতের ফলাফল কি, টাকা আদৌ পাওয়া গেছে কিনা, পাওয়া গেলেও কত টাকা পাওয়া গেছে সে সম্পর্কে উপদেষ্টারা বা সমিতির অন্যান্য সদস্যরা অবগত নয়। সর্বশেষ সাংবাদিক সমিতির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জিনিয়া-পরান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার জন্য কার্যনির্বাহী মিটিং ডেকে তাদের ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়ার মতো গঠনতন্ত্র বিরোধী ও স্বৈরাচারী নজির স্থাপন করে।”
এ ব্যাপারে বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং আজীবন উপদেষ্টা মো. রেজোয়ান হোসেন জানান, ‘দীর্ঘদিন এই কমিটির নামে অনেক অভিযোগ ছিল। মেয়াদ শেষ হবার পরেও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল এরা। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছি এবং একটি নিরপেক্ষ ও সর্বজন গ্রাহ্য সাংবাদিক সমিতি গঠনের জন্য আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন ঘটনা সাংবাদিক সমিতিতে এই প্রথম। ক্ষমতার অপব্যবহার চুড়ান্ত পর্যায়ে গেলে একজন সেক্রেটারি তার সংগঠনের সদস্যকে পেটাতে পারে।’
এদিকে এ বিষয়ে বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পরান বলেন, ‘কমিটি বিলুপ্ত যে করেছে সেটা সম্পূর্ণ অনিয়ম৷ সমিতির বাকি সদস্য যারা আছে তারা বাকি সিদ্ধান্ত নিবে৷ এই যে সিদ্ধান্তের সঙ্গে সালাম নামের যে ছেলের নাম আসছে সে নিজেও জানে না এটা৷ এ রকম একটা বিষয় সম্পূর্ণ অনিয়ম অগণতান্ত্রিক এবং তার (উপদেষ্টা) কোনো এখতিয়ারই নেই এটা করার৷ কমিটির কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে সেটা কার্যনির্বাহী কমিটি সিদ্ধান্ত নিবে৷’
হামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘হামলা বলতে এখানে কোনও হামলার ঘটনা ঘটেনি৷ সমিতির যে ইন্টার্নাল মিটিং ছিল সেখানে মতবিরোধ ছিল৷ এতটুকুই৷ মতবিরোধে কিছু উচ্চবাচ্চ হইছে৷ যাস্ট এটাই৷ ওই ধরনের কিছু ঘটেনি৷ এটাকে অন্যখাতে প্রবাহিত করার জন্য এমন ঘটনা সাজানো হয়েছে৷”
এসআইএইচ
![Header Ad](https://admin.dhakaprokash24.com/images/single-post-anniversary.jpeg)