শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত সংস্কার জরুরি 

বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যে অবস্থা; প্রথমত, আমরা কভিড-১৯ এর ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছি। বাংলাদেশ ভালোভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, যদিও গতিটা মন্থর ছিল। এরসঙ্গে হঠাৎ করে যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক টানাপড়েন; এগুলোর ফলে বিশ্বে আরও নানারকম সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এসব মিলে বাংলাদেশেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

আমাদের নিজস্ব যে চ্যালেঞ্জগুলো ছিল আর্থিক খাতে সমস্যা, দুর্নীতি, অর্থের অপচয়, মুদ্রাপাচার, কর্মসংস্থানের অপ্রতুলতা এগুলো তো ছিলই। এরসঙ্গে এখন বৈশ্বিক সমস্যাগুলো যেমন জ্বালানির দাম বেড়ে গেছে; গম, চাল, সয়াবিন তেলসহ খাদ্য পণ্যের দাম বেড়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের বাণিজ্য ও রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছুটা প্রভাব পড়ছে। এর ফলে আমরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। বাংলাদেশের জন্য যেটা একটু ভালো ছিল, আমাদের যে পারফরম্যান্স ছিল, সেটা এখন করা কঠিন হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে আমি চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব। তারপর ব্যাংকিং খাতে যে সমস্যা, সেগুলো সম্পর্কে আলাপ করব।বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ দুই ধরনের এক. অভ্যন্তরীণ, দুই. বৈশ্বিক। এখন মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, আমাদের টাকার বিনিময় হার, সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থানের সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে আরও প্রকট হয়ে উঠছে। ব্যাংকিং খাতের সমস্যাগুলো তো আরও প্রকট।

আমাদের যেটা প্রয়োজন, সেটা আমি যদি মোটা দাগে বলি, আমাদের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। সমন্বিত পদক্ষেপ বলতে বাংলাদেশ ব্যাংক ভূমিকা পালন করবে, অন্যরা কেউ কিছু করবে না, তা নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক বিষয়ের সঙ্গে জড়িত; এনবিআর আছে, কাস্টমস আছে, এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো আছে এদের সবাইকে একযোগে একসঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রা সরবরাহ, বিদেশি মুদ্রাবাজার দেখবে এগুলোর সমস্যা সমাধান করে চলবে সেইসঙ্গে। রপ্তানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং হচ্ছে কি না, আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিং হচ্ছে কি না। ইমপোর্টে যথাযথ মাল আসছে কি না, মূল্যটা সঠিক কি না, পরিমাণটা সঠিক কি না এগুলোর সমাধান এককভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে সম্ভব নয়। এখানে সব মন্ত্রণালয় ও সব সংস্থার একইসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি একটা উদাহরণ দিলাম। সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।  দুঃখজনক হলেও সত্য যেটা, আমাদের সমন্বয়টা হচ্ছে না। অনেকে ভাবে, জিনিস পত্রের দাম বেড়ে গেছে, বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে এটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখবে। তারা দেখবেই। সঙ্গে সঙ্গে যারা পণ্য সরবরাহ করে, যারা পরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণ করে, সেইসঙ্গে প্রতিযোগিতা কমিশন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংস্থা তাদেরও তো কাজ আছে। অতএব নিজেদের মতো করে যদি সবাই মনে করে আমাদের কাজ চলবে, আমরা করতে থাকব, তাহলে চলবে না।

একসঙ্গে সবাই মিলিত হয়ে সমন্বিতভাবে করবে, সেটা কিন্তু হচ্ছে না।শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, এখানে কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ এনজিও আছে। বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তাদেরও ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে লোকাল লেভেলে যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো কাজ করে, তাদের হেল্পনিতে হবে।উদাহরণ দেওয়া যাক। প্রাইমারি হেলথের টিকা, কলেরা টিকা এসব যে স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা দিয়েছেন, তাদের পাশে রেখে কাজ করতে হবে। প্রাইভেট সেক্টরের প্রতিষ্ঠান আর চেম্বারগুলো সব সমস্যা সমাধানে সরকারকে সুষ্ঠুভাবে সহায়তা করতে পারবে, এটা একটা ভুল ধারণা। এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে নীতি-কৌশল অবলম্বন করা দরকার এবং সবার অংশগ্রহণমূলক প্রচেষ্টা নিশ্চিত করতে হবে।এখন আসি আমাদের বর্তমান প্রসঙ্গ নিয়ে। মোটামুটি আমাদের ইতিবাচক দিক আছে। ভবিষ্যতে কী হবে সেটা বলা মুশকিল।

এখানে বেশি দরকার হলো আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। এখানে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যেটাকে আমরা লিজিং কোম্পানি বলি  সেখানকার নীতিমালা আছে, পুঁজিবাজারের নীতিমালা আছে। আর্থিক খাতে, বিশেষ করে ব্যাংক খাতে নিয়ন্ত্রণ, পরিবীক্ষণ আরও সুদৃঢ় করতে হবে। সময় এসেছে ব্যাংক খাতে সময়োপযোগী সংস্কার করার। বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও শক্তভাবে কাজ করতে হবে। খেলাপিঋণ বেশি, তারপর ব্যাংকিং খাতে নানারকম দুর্নীতি হচ্ছে। ব্যাংক ঋণ নিয়ে বাইরে অর্থপাচারও হয়ে যাচ্ছে।অন্যদিকে কুটির শিল্প, ছোট ও মাঝারিশিল্পগুলো তাদের চাহিদা অনুপাতে ঋণ পায় না। তাদের বলা হচ্ছে, এই করো, সেই করো, এই কাগজ নিয়ে এসো ইত্যাদি। ইদানীং বাংলাদেশ ব্যাংক ২৫ হাজার কোটি টাকার পুনরর্থায়ন করার ঘোষণা দিয়েছে। সেটা যথাসময়ে যথাযথভাবে উপযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে বিতরণ করতে হবে।  

কভিড-১৯ এ একটা প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে। সেটা কী হলো? বেশির ভাগ টাকা তো ব্যাংকের মাধ্যমে চলে গেছে বড়দের কাছে। বড় বড়গার্মেন্টে, বড় বড় এক্সপোর্টে। ছোট শিল্পগুলো কিন্তু কর্মসংস্থান বেশি করে, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা তারা বাড়ায়। সঙ্গে সঙ্গে পণ্য উৎপাদনে সহায়তা করে। সেটা উৎপাদন খাতে যদি বেশি দেওয়া হয়, তাহলে মূল্যস্ফীতি ও কিছুটা হ্রাস হবে। কারণ মূল্যস্ফীতিটা অনেকটা সরবরাহের ব্যাপার। আমাদের পণ্য সরবরাহ যদি বৃদ্ধি পায়, তাহলে মূল্যস্ফীতি কমবে।  কুটিরশিল্প, ছোট ও মাঝারি শিল্প সম্পর্কে অনেক কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে মোটেও সঠিক নয়। ব্যাংকিং খাত অত্যন্ত কনজারভেটিভ। তারা সহজে ছোট শিল্পকে ঋণ দিচ্ছে না। তাদের পেছনে ব্যাংকের সময় ব্যয় হয় বেশি, সুপারভাইজ করা কঠিন, ছোট অঙ্কের টাকায় মুনাফা কম এ সব ব্যাংকের যুক্তি, যেগুলো খোঁড়া যুক্তি। অথচ ছোট ঋণগ্রহণকারীদের পরিশোধের হার অত্যন্ত সন্তোষজনক। অন্যদিকে, বড় বড় ঋণগ্রহীতার অনাদায়ি ঋণের ভারে দেশের উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতে বড় বড় শিল্পকে নানারকম সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। যারা এক্সপোর্ট করে, তাদের আরও বেশি সুবিধা দেওয়া হয়।

অসম একটা উন্নয়নের প্রচেষ্টা বা অসম উন্নয়নের দিকে আমরা চলে যাচ্ছি। এদিকে আবার ডিফল্ট ঋণ শোধ করার জন্য ৯ বছরের সময় দেওয়া হয়েছে। তারপর ঋণ পুনঃতফসিল করার সময়ে ডাউন পেমেন্টের পরিমাণও কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অযাচিতভাবে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে বড় বড় খেলাপি ঋণ গ্রহীতাকে। এমনিতে অর্থনৈতিক বৈষম্য আছে, বিশেষ করে আয়ের বৈষম্য। এরসঙ্গে ব্যাংক ঋণের অযাচিত সুবিধা এবং সরকারি প্রণোদনার বিশেষ সুবিধা পেয়ে এক শ্রেণি সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে, দিনদিন সম্পদের বৈষম্যও প্রকট হচ্ছে। ২০২২ সালে অর্থনীতিতে তিন জন অর্থনীতিবিদ নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তাদের অবদান ব্যাংকিং খাতের কার্যকলাপ সম্পর্কে। তাদের যুক্তির মূল বক্তব্য হচ্ছে, ব্যাংকিং খাত সমস্যা সংকুলান হলে অর্থনৈতিক মন্দা বেশি প্রকট হবে। আমি বারবার বলেছি, ব্যাংকিং খাত ঠিক করতে হবে, ব্যাংকিং খাত ঠিক না করলে আমাদের অর্থনীতির দ্রুত অগ্রগতি হবে না।

জ্যাঁতি হল, যিনি ২০১৪ সালে নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন, তিনি বাজারের ক্ষমতা এবং আর্থিক নিয়ম বিধির ওপর তার গবেষণার জন্য এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। তার কাজ বেশির ভাগ ছিল বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা ২০০৭-০৮ সম্পর্কিত। তিনি একটা বই লিখেছিলেন ২০১০ সালে, নাম ব্যালান্সিং দ্য ব্যাংক । বইয়ের মধ্যে তিনি অর্থনৈতিক মন্দার জন্য খেলাপিঋণ, অর্থের অপচয়, করাপশন, অর্থপাচার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলাপ করেছেন। সবকিছু পর্যালোচনা করে এটাই প্রতীয়মান হয় যে ব্যাংকিং খাতকে যদি যথাযথভাবে পরিচালনা না করা হয়, তাহলে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া অত্যন্ত দুরূহ হবে।

লেখক: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক

Header Ad
Header Ad

জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের

জাতীয় পার্টি (জাপা) কোনো সুবিধাবাদী দল নয় বলে দাবি করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের নামে অনেক ধরনের অপপ্রচার করা হচ্ছে। কিছু মানুষ আমাদেরকে নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করছেন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যমে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে জানাশোনা কথাকে তারা ভুলভাবে তুলে ধরছেন। তাদের কথা হলো- আমরা সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমরা বলতে চাই জাতীয় পার্টির সিংহভাগ মানুষ সব সময় জনগণের পাশে ছিল। জনগণের স্বার্থে তারা সংগ্রাম করেছে। আগামীতেও তারা জনগণের পাশেই থাকবে।

 

Header Ad
Header Ad

প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি

ছবি: সংগৃহীত

ওপার বাংলার জনপ্রিয় নির্মাতা সৃজিত মুখার্জিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর সমস্যা নিয়ে শুক্রবার মধ্যরাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। পরে চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য আইসিইউতে নিয়ে যান।

পরিচালকের ঘনিষ্ঠ সুত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গতকাল রাতে হঠাৎই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় সৃজিতের। সেই সঙ্গে বুকে হালকা ব্যথাও অনুভব করছিলেন পরিচালক। এরপর রাত সাড়ে ১২ টার দিকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে।

সেখানে রাতেই বেশ কিছু টেস্ট করানো হয়। শনিবার টেস্টের রিপোর্ট পাওয়ার কথা রয়েছে। আর তা দেখে চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নেবেন কতদিন পরিচালককে হাসপাতালে থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: অন্তরঙ্গ দৃশ্যের আগে প্রেমিক ও পরিবারের অনুমতি নিয়েছিলেন কৌশানি। তবে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, সৃজিতের শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।

সদ্যই লিমকা বুক অফ রেকর্ডসের তালিকায় স্থান দখল করেছে সৃজিতের ‘অতি উত্তম’। ইনস্টাগ্রামে গর্বের কথা শেয়ার করেছেন তিনি। তাছাড়া এই নির্মাতার নতুন সিনেমা ‘কিলবিল সোসাইটি’ মুক্তি পেয়েছে গত ১১ এপ্রিল।

Header Ad
Header Ad

জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা ৯০ গণঅভ্যুত্থানের কথা বইয়ে পড়েছি, কিন্তু যে আকাঙ্ক্ষায় জনগণ রাস্তায় নেমে আসে, সে আকাঙ্ক্ষাগুলো বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি, ব্যর্থ হয়েছে।

সেই ব্যর্থতার ফলেই ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদের শাসন ব্যবস্থার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল। তাই আমরা চাই, এবারের জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয়।

তিনি বলেন, জনগণের মধ্যে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এটা জাতির প্রতি আমাদের সবারই অঙ্গীকার।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।

২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান আজকের বৈঠকে বসার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, যে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসককে পলায়ন করতে বাধ্য করেছিল বাংলাদেশের জনগণ। হাজারো মানুষের শাহাদাত বরণ ও আহত হওয়ার বিনিময়েই আজকের এই প্রেক্ষাপট।

তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে এনসিপি। যে দলের প্রধান শক্তি ও ভিত্তির জায়গাটা হচ্ছে এই দেশের তরুণরা। সেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের যে বক্তব্য ছিল, আমরা ফ্যাসিবাদের বিলোপ ও একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

নাহিদ ইসলাম বলেন, এই গণঅভ্যুত্থান কেবল কোনো ব্যক্তির পরিবর্তন নয়, ক্ষমতা থেকে একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে বসানোর পরিকল্পনা ছিল না। বরং কীভাবে রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার রক্ষা করবে, এরকম একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ছিল।

এনসিপি সংস্কার বলতে মৌলিক সংস্কার বোঝানো হচ্ছে। নাহিদ আরও বলেন, যে সংস্কার করলে রাষ্ট্র কাঠামো গুণগত আমূল পরিবর্তন সম্ভব হবে। কারণ আমরা দেখেছি, বিগত সময়ে আমাদের সংবিধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দলীয়করণ ঘটেছিল। আমাদের সংবিধানে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক কাঠামোর বীজ বপন ছিল। ফলে সেই রাষ্ট্র কাঠামোকে অক্ষুণ্ন রেখে যে ক্ষমতায় যাক, তার ভেতরেও ফ্যাসিবাদী প্রবণতা থাকবে, স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে উঠার প্রবণতা থাকবে। সেই জায়গায় রাষ্ট্রের সংস্কার, সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে আমরা এনসিপি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।

তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে যে সুপারিশ আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে, সেগুলোতে আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা একমত হয়েছি। যে সব জায়গায় আমরা আংশিক একমত বা দ্বিমত হয়েছি, সেখানে আমরা আমাদের সুপারিশ সংক্ষিপ্তভাবে দিয়েছি। আজকে হয়তো আমরা বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ পাবো। সেই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

এনসিপির ভাবনার কথা উল্লেখ করে দলটির আহ্বায়ক বলেন, এইবার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে আমাদের জাতির সামনে, জাতীয় ঐকমত্য প্রয়োজন, জুলাই সনদ প্রয়োজন। জাতির সামনে আমাদের সবাই সেই অঙ্গীকার রাখতে হবে যেন আরেকটি স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা, আরেকটি ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে আসবে তার সব রাস্তা আমরা বন্ধ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান ও রাষ্ট্র কাঠামো তৈরিতে আমরা সবাই যার যার জায়গা থেকে কাজ করবো।

বৈঠকে আরও উপস্থিত আছেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী, হাসনাত আব্দুল্লাহ, শামান্তা শারমীন, নাহিদা সারওয়ার নিভা, জাবেদ রাসিন এবং সারোয়ার তুষার।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক
৬০ বছর বয়সে বিয়ে করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে ১২ কেজি রূপার গয়না জব্দ
ফয়জুল করীমকে বরিশালের মেয়র ঘোষণার দাবি
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি যুবক নিহত
গোবিন্দগঞ্জে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আটক
বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দিল ভারতীয়রা
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক শনিবার
বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে যা জানাল পাকিস্তান
গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা, শিশুসহ একই পরিবারের ১৩ জন নিহত
ভারতীয় ক্রিকেটাররা আমাকে নগ্ন ছবি পাঠাত, অভিযোগ ট্রান্সজেন্ডার ক্রিকেটারের
১৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর
গাইবান্ধায় আগুনে পুড়লো ৫ দোকান, ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি