বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত সংস্কার জরুরি 

বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যে অবস্থা; প্রথমত, আমরা কভিড-১৯ এর ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছি। বাংলাদেশ ভালোভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, যদিও গতিটা মন্থর ছিল। এরসঙ্গে হঠাৎ করে যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক টানাপড়েন; এগুলোর ফলে বিশ্বে আরও নানারকম সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এসব মিলে বাংলাদেশেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

আমাদের নিজস্ব যে চ্যালেঞ্জগুলো ছিল আর্থিক খাতে সমস্যা, দুর্নীতি, অর্থের অপচয়, মুদ্রাপাচার, কর্মসংস্থানের অপ্রতুলতা এগুলো তো ছিলই। এরসঙ্গে এখন বৈশ্বিক সমস্যাগুলো যেমন জ্বালানির দাম বেড়ে গেছে; গম, চাল, সয়াবিন তেলসহ খাদ্য পণ্যের দাম বেড়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের বাণিজ্য ও রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছুটা প্রভাব পড়ছে। এর ফলে আমরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। বাংলাদেশের জন্য যেটা একটু ভালো ছিল, আমাদের যে পারফরম্যান্স ছিল, সেটা এখন করা কঠিন হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে আমি চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব। তারপর ব্যাংকিং খাতে যে সমস্যা, সেগুলো সম্পর্কে আলাপ করব।বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ দুই ধরনের এক. অভ্যন্তরীণ, দুই. বৈশ্বিক। এখন মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, আমাদের টাকার বিনিময় হার, সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থানের সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে আরও প্রকট হয়ে উঠছে। ব্যাংকিং খাতের সমস্যাগুলো তো আরও প্রকট।

আমাদের যেটা প্রয়োজন, সেটা আমি যদি মোটা দাগে বলি, আমাদের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। সমন্বিত পদক্ষেপ বলতে বাংলাদেশ ব্যাংক ভূমিকা পালন করবে, অন্যরা কেউ কিছু করবে না, তা নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক বিষয়ের সঙ্গে জড়িত; এনবিআর আছে, কাস্টমস আছে, এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো আছে এদের সবাইকে একযোগে একসঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রা সরবরাহ, বিদেশি মুদ্রাবাজার দেখবে এগুলোর সমস্যা সমাধান করে চলবে সেইসঙ্গে। রপ্তানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং হচ্ছে কি না, আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিং হচ্ছে কি না। ইমপোর্টে যথাযথ মাল আসছে কি না, মূল্যটা সঠিক কি না, পরিমাণটা সঠিক কি না এগুলোর সমাধান এককভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে সম্ভব নয়। এখানে সব মন্ত্রণালয় ও সব সংস্থার একইসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি একটা উদাহরণ দিলাম। সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।  দুঃখজনক হলেও সত্য যেটা, আমাদের সমন্বয়টা হচ্ছে না। অনেকে ভাবে, জিনিস পত্রের দাম বেড়ে গেছে, বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে এটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখবে। তারা দেখবেই। সঙ্গে সঙ্গে যারা পণ্য সরবরাহ করে, যারা পরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণ করে, সেইসঙ্গে প্রতিযোগিতা কমিশন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংস্থা তাদেরও তো কাজ আছে। অতএব নিজেদের মতো করে যদি সবাই মনে করে আমাদের কাজ চলবে, আমরা করতে থাকব, তাহলে চলবে না।

একসঙ্গে সবাই মিলিত হয়ে সমন্বিতভাবে করবে, সেটা কিন্তু হচ্ছে না।শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, এখানে কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ এনজিও আছে। বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তাদেরও ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে লোকাল লেভেলে যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো কাজ করে, তাদের হেল্পনিতে হবে।উদাহরণ দেওয়া যাক। প্রাইমারি হেলথের টিকা, কলেরা টিকা এসব যে স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা দিয়েছেন, তাদের পাশে রেখে কাজ করতে হবে। প্রাইভেট সেক্টরের প্রতিষ্ঠান আর চেম্বারগুলো সব সমস্যা সমাধানে সরকারকে সুষ্ঠুভাবে সহায়তা করতে পারবে, এটা একটা ভুল ধারণা। এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে নীতি-কৌশল অবলম্বন করা দরকার এবং সবার অংশগ্রহণমূলক প্রচেষ্টা নিশ্চিত করতে হবে।এখন আসি আমাদের বর্তমান প্রসঙ্গ নিয়ে। মোটামুটি আমাদের ইতিবাচক দিক আছে। ভবিষ্যতে কী হবে সেটা বলা মুশকিল।

এখানে বেশি দরকার হলো আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। এখানে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যেটাকে আমরা লিজিং কোম্পানি বলি  সেখানকার নীতিমালা আছে, পুঁজিবাজারের নীতিমালা আছে। আর্থিক খাতে, বিশেষ করে ব্যাংক খাতে নিয়ন্ত্রণ, পরিবীক্ষণ আরও সুদৃঢ় করতে হবে। সময় এসেছে ব্যাংক খাতে সময়োপযোগী সংস্কার করার। বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও শক্তভাবে কাজ করতে হবে। খেলাপিঋণ বেশি, তারপর ব্যাংকিং খাতে নানারকম দুর্নীতি হচ্ছে। ব্যাংক ঋণ নিয়ে বাইরে অর্থপাচারও হয়ে যাচ্ছে।অন্যদিকে কুটির শিল্প, ছোট ও মাঝারিশিল্পগুলো তাদের চাহিদা অনুপাতে ঋণ পায় না। তাদের বলা হচ্ছে, এই করো, সেই করো, এই কাগজ নিয়ে এসো ইত্যাদি। ইদানীং বাংলাদেশ ব্যাংক ২৫ হাজার কোটি টাকার পুনরর্থায়ন করার ঘোষণা দিয়েছে। সেটা যথাসময়ে যথাযথভাবে উপযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে বিতরণ করতে হবে।  

কভিড-১৯ এ একটা প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে। সেটা কী হলো? বেশির ভাগ টাকা তো ব্যাংকের মাধ্যমে চলে গেছে বড়দের কাছে। বড় বড়গার্মেন্টে, বড় বড় এক্সপোর্টে। ছোট শিল্পগুলো কিন্তু কর্মসংস্থান বেশি করে, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা তারা বাড়ায়। সঙ্গে সঙ্গে পণ্য উৎপাদনে সহায়তা করে। সেটা উৎপাদন খাতে যদি বেশি দেওয়া হয়, তাহলে মূল্যস্ফীতি ও কিছুটা হ্রাস হবে। কারণ মূল্যস্ফীতিটা অনেকটা সরবরাহের ব্যাপার। আমাদের পণ্য সরবরাহ যদি বৃদ্ধি পায়, তাহলে মূল্যস্ফীতি কমবে।  কুটিরশিল্প, ছোট ও মাঝারি শিল্প সম্পর্কে অনেক কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে মোটেও সঠিক নয়। ব্যাংকিং খাত অত্যন্ত কনজারভেটিভ। তারা সহজে ছোট শিল্পকে ঋণ দিচ্ছে না। তাদের পেছনে ব্যাংকের সময় ব্যয় হয় বেশি, সুপারভাইজ করা কঠিন, ছোট অঙ্কের টাকায় মুনাফা কম এ সব ব্যাংকের যুক্তি, যেগুলো খোঁড়া যুক্তি। অথচ ছোট ঋণগ্রহণকারীদের পরিশোধের হার অত্যন্ত সন্তোষজনক। অন্যদিকে, বড় বড় ঋণগ্রহীতার অনাদায়ি ঋণের ভারে দেশের উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতে বড় বড় শিল্পকে নানারকম সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। যারা এক্সপোর্ট করে, তাদের আরও বেশি সুবিধা দেওয়া হয়।

অসম একটা উন্নয়নের প্রচেষ্টা বা অসম উন্নয়নের দিকে আমরা চলে যাচ্ছি। এদিকে আবার ডিফল্ট ঋণ শোধ করার জন্য ৯ বছরের সময় দেওয়া হয়েছে। তারপর ঋণ পুনঃতফসিল করার সময়ে ডাউন পেমেন্টের পরিমাণও কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অযাচিতভাবে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে বড় বড় খেলাপি ঋণ গ্রহীতাকে। এমনিতে অর্থনৈতিক বৈষম্য আছে, বিশেষ করে আয়ের বৈষম্য। এরসঙ্গে ব্যাংক ঋণের অযাচিত সুবিধা এবং সরকারি প্রণোদনার বিশেষ সুবিধা পেয়ে এক শ্রেণি সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে, দিনদিন সম্পদের বৈষম্যও প্রকট হচ্ছে। ২০২২ সালে অর্থনীতিতে তিন জন অর্থনীতিবিদ নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তাদের অবদান ব্যাংকিং খাতের কার্যকলাপ সম্পর্কে। তাদের যুক্তির মূল বক্তব্য হচ্ছে, ব্যাংকিং খাত সমস্যা সংকুলান হলে অর্থনৈতিক মন্দা বেশি প্রকট হবে। আমি বারবার বলেছি, ব্যাংকিং খাত ঠিক করতে হবে, ব্যাংকিং খাত ঠিক না করলে আমাদের অর্থনীতির দ্রুত অগ্রগতি হবে না।

জ্যাঁতি হল, যিনি ২০১৪ সালে নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন, তিনি বাজারের ক্ষমতা এবং আর্থিক নিয়ম বিধির ওপর তার গবেষণার জন্য এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। তার কাজ বেশির ভাগ ছিল বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা ২০০৭-০৮ সম্পর্কিত। তিনি একটা বই লিখেছিলেন ২০১০ সালে, নাম ব্যালান্সিং দ্য ব্যাংক । বইয়ের মধ্যে তিনি অর্থনৈতিক মন্দার জন্য খেলাপিঋণ, অর্থের অপচয়, করাপশন, অর্থপাচার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলাপ করেছেন। সবকিছু পর্যালোচনা করে এটাই প্রতীয়মান হয় যে ব্যাংকিং খাতকে যদি যথাযথভাবে পরিচালনা না করা হয়, তাহলে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া অত্যন্ত দুরূহ হবে।

লেখক: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক

Header Ad
Header Ad

খুলনায় ছাত্র-জনতার উচ্ছ্বাস, বুলডোজারের আঘাতে মাটিতে মিশে গেল ‘শেখ বাড়ি’

ছবি: সংগৃহীত

খুলনার ময়লাপোতা এলাকায় ‘শেখ বাড়ি’ নামে পরিচিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র আজ (বুধবার) রাতে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের আহ্বানে বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতা সেখানে জড়ো হয়ে বাড়িটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং সিটি করপোরেশনের দুটি বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এর আগে গত ৪ আগস্ট ‘শেখ বাড়ি’তে প্রথম দফায় আগুন লাগানো হয়। সেদিন বাড়িটি খালি থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর আবারও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়। একসময় যেখান থেকে খুলনা অঞ্চলের আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হতো, আজ সেটির অস্তিত্ব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো।

প্রসঙ্গত, ‘শেখ বাড়ি’ ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচার মালিকানাধীন। এ বাড়িতে তাঁর চাচাতো ভাই, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সোহেল উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন পরিবারের সদস্য বসবাস করতেন। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে এ বাড়ি দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা ছিল।

বুলডোজার চালানোর সময় ছাত্র-জনতার বিপুল উচ্ছ্বাস লক্ষ করা যায়। তাঁদের দাবি, বৈষম্যমূলক রাজনৈতিক শাসনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল এই বাড়ি, তাই এটিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করাই ছিল তাঁদের লক্ষ্য।

Header Ad
Header Ad

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল নেমেছে। আজ বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে, সন্ধ্যা ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জড়ো হয়। তারা স্লোগান দিতে দিতে জাদুঘরের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভাঙচুর শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ জাদুঘরের বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত করে।

নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার ঘোষণার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভকারীরা শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল ভাষণের বিরোধিতা করে এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

বিক্ষোভের আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'লং মার্চ টু ধানমন্ডি-৩২' নামে একটি কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়, যেখানে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়। তবে, বুলডোজার ছাড়াই তারা নিজ হাতে ভাঙচুর চালায়।

এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও বিক্ষোভকারীদের থামাতে ব্যর্থ হয়। বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে পরিচিত, যেখানে তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হওয়ার আগে বসবাস করতেন।

Header Ad
Header Ad

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কী করলাম বা করলাম না- ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটি দিয়ে আমাদের বিচার করবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও বলেন, "এটি জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। আমি জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের দুই চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।"

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "এই দুটি প্রতিবেদন দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। আপনি দরিদ্র, মধ্যবিত্ত বা ধনী যেই হোন না কেন, এই সংস্কারের প্রভাব থেকে কেউই বাদ যাবেন না।"

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নাগরিকরা তাদের প্রকৃত অধিকার ফিরে পাবেন। আমরা যেন সত্যিকারের নাগরিক হিসেবে মর্যাদা পাই, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।"

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জনগণ, রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, "যাতে সবাই মনে করতে পারে, এখানে প্রকৃত সত্য বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। আমাদের তো পণ্ডিত হতে হবে না এটি বোঝার জন্য, কারণ প্রতিদিনই আমরা নানা অবিচারের শিকার হই।"

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, "সংস্কার কমিশনের কাজ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশ্বের দরবারে এটি তুলে ধরতে হলে এর ইংরেজি অনুবাদ করা প্রয়োজন।"

কমিশনের সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, "আপনাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও গবেষণার সংমিশ্রণে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দলিল হয়ে থাকবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা কী করলাম বা করলাম না, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের সেই কাজের জন্যই বিচার করবে। তারা প্রশ্ন করতে পারে, আপনারা তো পেয়েছিলেন, তাহলে বাস্তবায়ন করেননি কেন? কারণ, সবকিছু তো বইয়ের পাতায় লেখা আছে। এই কাজ জাতির জন্য এক মূল্যবান স্মারক হয়ে থাকবে।"

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খুলনায় ছাত্র-জনতার উচ্ছ্বাস, বুলডোজারের আঘাতে মাটিতে মিশে গেল ‘শেখ বাড়ি’
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা
আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা
হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান
মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা
খুব দ্রুতই জবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে: ছাত্রদল সভাপতি
বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা, তদন্তের নির্দেশ
চুয়াডাঙ্গায় সার কাণ্ডে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতা বহিষ্কার
আজ বন্ধুর সাথে গোসল করার দিন
২ আলাদা বিভাগসহ দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস
হাসিনার লাইভ প্রচারের আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ উধাও
হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা
বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর
গাজীপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবজিবাহী পিকআপ খাদে, চালকসহ নিহত ৩
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জনগনের মতামত চাইলো হাসনাত  
এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব