শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৬ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

মূল্যস্ফীতির নেপথ্যে সুশাসনের অভাব

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ১৯ হিসাবে মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৪২ শতাংশে পৌঁছেছে। গত আট বছরের মধ্যে দেশে এটাই সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির হার। দেশে মূল্যস্ফীতির একাধিক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে ব্যবধান, আমদানিজনিত চাপ ও বাজার কারসাজি উল্লেখযোগ্য।

বাজার ব্যবস্থাপনায়ও দক্ষতা কম দেখা গেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, চলমান মূল্যস্ফীতির কারণে বাংলাদেশের স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো তাদের প্রকৃত আয়, খাদ্য নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় খরচের ক্ষেত্রে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এর সঙ্গে কভিড-১৯ এর প্রভাব মিলে তাদের ক্ষতির বিষয়টি স্পষ্ট। এ দুয়ের ধাক্কা সামলে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানো অনেক পরিবারের জন্যই বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি তাদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

'ইনফ্লেশন, কোপিং অ্যান্ড রিকভারি চ্যালেঞ্জেস' শিরোনামে আমাদের গবেষণায় শহরাঞ্চলের বস্তি ও গ্রামাঞ্চলের বড় জনগোষ্ঠীর উপর একাধিক সমীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্নেষণ করে দেখার চেষ্টা করা হয়-কীভাবে দেশের স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সংকট ব্যাপক ঝুঁকি তৈরি করছে। প্রায় ৪,০০০ পরিবারের উপর করা জরিপে দেখা যায়, গত বছর দ্বিতীয় দফায় দেওয়া লকডাউন ও পরবর্তী রিকভারিতে মাথাপিছু দৈনিক আয় বেশ ভালোভাবে পুনরুদ্ধার হয়েছিল। গত বছরের আগস্ট থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত অনেকের আয় বৃদ্ধি পেলেও মূল্যস্ম্ফীতির কারণে জানুয়ারি এবং মে মাসের মধ্যে আয় আবার কমতে শুরু করেছে। ফলে মানুষ কভিড-পূর্বে যত আয় করত, বর্তমানে প্রকৃত আয় আশানুরূপ হচ্ছে না। কভিড-১৯ এর ধাক্কা সামলানোর সময়টিতে মূল্যস্ফীতি ঘটায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। মহামারির দু’বছর পর এখনো জরিপকৃত পরিবারগুলোর গড় আয় মহামারি-পূর্ব আয়ের ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ নিচে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, মূল্যস্ফীতির প্রভাব বহুবিধ। এমনিতেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় পুষ্টি ও শিক্ষার যে লক্ষ্য নির্ধারিত, সেটি পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, কভিড-১৯ শহুরে বস্তিতে থাকা পরিবারগুলোর জীবন-জীবিকায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। আবার গ্রামের তুলনায় শহরে আয়ের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া অনেক ধীরে এগিয়েছে। আর এখন মূল্যস্ম্ফীতি সেই পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে আরও মন্থর করেছে। গবেষণার তথ্য বলছে, দাম বেড়ে যাওয়ায় অন্তত জরিপে অংশ নেওয়া পরিবারগুলো ফেব্রুয়ারি মাস থেকে খাদ্যতালিকায় থাকা মূল খাবার যেমন- মাছ, মাংস, দুধ এবং ফল খাওয়া হয় খুব কমিয়ে দিয়েছে অথবা বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, গ্রামাঞ্চলের চেয়ে শহরাঞ্চলের বস্তিতে খাবারের মান ও পরিমাণ দুটোই বেশ কমেছে। মে মাসে অর্থাভাবে প্রতি পাঁচ পরিবারে একটি পরিবার অন্তত এক বেলা খাদ্য গ্রহণ করেনি। আশঙ্কার কথা হলো, এই ব্যয় সংকোচনের ভেতর চিকিৎসা ও শিক্ষা ব্যয়ের মতো খাতও ছিল। মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে এসব পরিবার কম এমনকি নিম্ন মানসম্পন্ন পণ্য দিয়ে কাজ চালিয়েছে।

যে বিষয়টি সংবাদমাধ্যমেও আমরা দেখেছি, ‘টিসিবি-ওএমএসের লাইনে মধ্যবিত্তরা’। আমাদের গবেষণাও বলছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর মে মাসে দারিদ্র্যসীমার উপরে ও নিচে থাকা উভয় জনগোষ্ঠীর মাঝেই ন্যায্যমূল্যে চাল কেনার পরিমাণ বেড়ে যায়। তবে টিসিবি থেকে তারা খাদ্যপণ্য ক্রয় করা সত্ত্বেও, অনেকাংশেরই চাহিদা মেটানো যায়নি। জরিপ করা পরিবারের অর্ধেকের বেশি স্বীকার করে, তাদের টিসিবি থেকে খাদ্যপণ্য ক্রয় করা প্রয়োজন ছিল, কিন্তু নানা কারণে কিনতে পারেনি। যেমন, কেনার সুযোগ না পাওয়া এবং টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড না থাকা। এক-পঞ্চমাংশ পরিবার জানিয়েছে, দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার কারণে তারা খাবার কিনতে পারেনি। যদিও সামগ্রিকভাবে টিসিবি থেকে যারা ক্রয় করেছে, তাদের অভিজ্ঞতা সন্তোষজনক ছিল। এদের মাঝে দুই-তৃতীয়াংশ জানিয়েছে, তাদের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই গবেষণায় বোঝা যায়, শহর ও গ্রামে দরিদ্র পরিবারের জন্য টিসিবি এবং এ ধরনের অন্যান্য কর্মসূচি সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

প্রাসঙ্গিকভাবে সমকালের সাম্প্র্রতিক এক প্রতিবেদনের কথা বলা যায়। সেটি হচ্ছে, সময় শেষ হলেও সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়নি টিসিবি কার্ড। অথচ সাশ্রয়ী দামে স্বল্প আয়ের মানুষের হাতে টিসিবির পণ্য তুলে দিতে আরও আগেই ফ্যামিলি কার্ড বিতরণের কথা ছিল। একদিকে, তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় সুবিধাভোগী পরিবারের হাতে এখনো পৌঁছেনি কার্ড। অন্যদিকে, বিক্রির জন্য সয়াবিন তেল, চিনি ও ডাল সংগ্রহের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। এমন হযবরল অবস্থা প্রত্যাশিত নয়। এমনকি জরিপে অংশ নেওয়া অর্ধেকেরও বেশি পরিবার বিশ্বাস করে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পেছনে সরকারের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও অনুশাসনের অভাব রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই চায়, সরকার সিন্ডিকেট এবং দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনুক। যদিও এদের এক-তৃতীয়াংশের পরামর্শ ছিল মূল্য হ্রাস করা, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য।

এটা স্পষ্ট-দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক গোষ্ঠীর মধ্যে আয়ের দিক থেকে অভিন্নতা রয়েছে। সংকটকালে দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর আয় তীব্রভাবে কমেছে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তুলনায়। সে তুলনায় দারিদ্র্য থেকে পুনরুদ্ধারের গতি বেশ মন্থর, বিশেষত দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য। মহামারির পর থেকে এখন উল্লেখযোগ্য নারী কর্মহীন।

তা ছাড়া, মে মাসের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতি এবং দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া ধীরগতিতে হওয়ায় মূল্যস্ম্ফীতির এই পাঁচ মাস সময়ে ২১ লাখ মানুষ নতুন দরিদ্র হয়েছে। নতুন দরিদ্রদের কষ্ট লাঘবের কথা চিন্তা করার প্রয়োজন অত্যধিক। মূল্যস্ফীতির হার কমানো এ ক্ষেত্রে জরুরি। নিত্যপণ্য আমদানিতে শুল্ক এবং ভ্যাট কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে সরকার। এ ছাড়া যেসব ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর ধারাবাহিকতা দরকার। এ ক্ষেত্রে টিসিবির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।

মূল্যস্ফীতি কমানোর ক্ষেত্রে ওই গবেষণায় আমরা কিছু নীতিনির্ধারণ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি। দীর্ঘমেয়াদে সেখানে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। কর্মসংস্থানে জোর দেওয়া দরকার। নারীসহ যারা কাজ হারিয়েছেন, তাদের পুনরায় কর্মযোগে ফিরিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে জোর দিতেই হবে। এর ক্ষেত্র গ্রাম ও শহর উভয় ক্ষেত্রেই বাড়ানো চাই। তা ছাড়া, প্রকল্প পর্যায়ে অপচয় রোধ করা জরুরি। অপচয় এবং অদক্ষতার কারণে যে বাড়তি ব্যয় হচ্ছে, তার জন্য দরিদ্র ও নিম্নবিত্তের মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হয়।

সর্বোপরি, খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরবরাহ পর্যায়ে যাতে কোনো ঘাটতি তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি। কৃচ্ছ্রসাধন এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে। সংকটের সময়ে বিলাসী পণ্য না কেনা জরুরি। এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলতে পারে।

লেখক: ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, অর্থনীতিবিদ ও এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান, পিপিআরসি

Header Ad
Header Ad

প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির

ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো কোনো আরব নেতা সিরিয়া সফরে গেলেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় তিনি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে পৌঁছান। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের পর এই প্রথমবার কোনো সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধান দেশটি সফর করলেন। বর্তমানে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আহমেদ আল-শারা। সফরের সময় দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে কাতারের আমিরকে স্বাগত জানান তিনি।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, নতুন সিরীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাতার মাঠপর্যায়ে কাজ করতে আগ্রহী। বিশেষ করে সিরিয়ার জনগণের জন্য চলমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা করা, ইসরায়েলি দখলদারিত্ব প্রতিহত করা এবং সিরিয়ার ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সহায়তা করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি।

বিশ্লেষকদের মতে, কাতারের আমিরের এই সফর মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর এই সফর দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন হত্যাকাণ্ডে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কমিটি। তবে এই প্রতিবেদন নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, তদন্ত কর্মকর্তারা পুলিশের দায় এড়াতে পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদন দিয়েছেন এবং ইয়ামিনকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

সমালোচকরা বলছেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে পুলিশের নৈতিক অবক্ষয় এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে গণঅভ্যুত্থানের পরও তারা নিজেদের পরিবর্তন করতে পারেনি। বরং, কঠিন চাপে থেকেও পুলিশের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড মাঝে মাঝেই প্রকাশ পাচ্ছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশের দাবি, ইয়ামিন এপিসি (সাঁজোয়া যান) কারে উঠলে বাইরে থেকে সন্ত্রাসীরা গুলি ছোঁড়ে, যা তাকে আহত করে। এরপর এএসআই মোহাম্মদ আলী তাকে নামানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু তার হাতে ব্যথা থাকায় ফসকে পড়ে যান ইয়ামিন। পুলিশ আরও জানায়, জনগণের কাছে হস্তান্তরের জন্য তাকে রোড ডিভাইডারে রাখা হয়, যাতে কেউ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারে।

তবে এই বক্তব্যের সঙ্গে ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজের কোনো মিল পাওয়া যায়নি। ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, পুলিশের সদস্যরা নীল রঙের এপিসি কারের ওপর ইয়ামিনকে ফেলে রেখে টহল চালায় এবং ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায়। কিছুক্ষণ পর এপিসি কারটি সাভারের রানা প্লাজা ও ভ্যাট অফিসের মাঝামাঝি এলাকায় আসে। এরপর এপিসির ভেতর থেকে এক পুলিশ সদস্য দরজা খুলে দেয় এবং আরেকজন ইয়ামিনকে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় ফেলে দেয়।

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ ইয়ামিন তখনও জীবিত ছিলেন। প্রচণ্ড কষ্টে নিশ্বাস নিতে দেখা যায় তাকে। তার পরনে ছিল নেভি ব্লু ট্রাউজার ও খয়েরি রঙের জামা। এপিসি থেকে ফেলে দেওয়ার পর তার দুই হাত দুই দিকে ছড়িয়ে যায় এবং একটি পা এপিসির বাঁ দিকের চাকার সঙ্গে আটকে থাকে। মৃত ভেবে পুলিশের সদস্যরা তার পায়ে আর গুলি না করে রাস্তার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টেনে রোড ডিভাইডারের পাশে ফেলে দেয়। এরপর আরও দুই পুলিশ সদস্য নেমে এসে তাকে সার্ভিস লেনে ফেলে রেখে চলে যায়।

পুলিশের এই প্রতিবেদনকে ‘চরম পক্ষপাতদুষ্ট’ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে অগ্রহণযোগ্য বলে ঘোষণা দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, তদন্ত কর্মকর্তারা শুধু পুলিশ সদস্যদের বক্তব্য নিয়েছেন, অথচ কোনো প্রত্যক্ষদর্শী, সংবাদকর্মী বা সাধারণ মানুষের সাক্ষ্য নেননি। এ কারণে তদন্ত প্রক্রিয়াকে পক্ষপাতদুষ্ট ও অবিশ্বাস্য বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এক প্রতিবেদনে পুলিশের আচরণকে ‘ভয়ংকর বর্বরতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কমিটির তিন পুলিশ সদস্য দায়িত্বে চরম অবহেলা করেছেন এবং অপেশাদারসুলভ আচরণ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখাকে সুপারিশ করা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ নীল এপিসি কার থেকে ইয়ামিনের গুলিবিদ্ধ দেহ রাস্তায় ফেলে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। ঘটনাটি ঘটে সাভারের আশুলিয়া এলাকায়। কোনো ময়নাতদন্ত বা আনুষ্ঠানিক মৃত্যুসনদ না দিয়েই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইয়ামিনের লাশ হস্তান্তর করে।

ঢাকা ও সাভার রেঞ্জের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ইয়ামিনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা না করার জন্য পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায়। পরে, পরিবার তাকে সাভারের তালবাগে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে চাইলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান বাধা দেন। শেষ পর্যন্ত ব্যাংক টাউন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশ দায় মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু ভিডিও ফুটেজের ভয়ংকর দৃশ্যগুলো ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনার সঙ্গে পুলিশের বক্তব্যের কোনো মিল নেই। তাহলে, শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে যদি সত্য প্রকাশ না পায়, তবে স্বাধীন তদন্ত কমিটির মাধ্যমে পুনরায় এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি উঠেছে। নিহত ইয়ামিনের পরিবার এবং আন্দোলনকারীরা ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

রংপুর থেকে গ্রেফতার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও একাধিক হত্যা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৯টায় রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডের পোস্ট অফিসের গলির এক বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ শিবলী কায়সার।

উল্লেখ্য, ৫ আগস্টের পর থেকে মোহাম্মদ নুরুজ্জামান আত্মগোপনে ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দীর্ঘদিনের নজরদারির পর অবশেষে তাকে গ্রেফতার করা হলো।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির
শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক
রংপুর থেকে গ্রেফতার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান
কোটা পদ্ধতি পুনরায় পর্যালোচনার নতুন ৩ সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের
আমরা কারও কাছে চাঁদা চাইনি, চাইবোও না: জামায়াত আমির
নওগাঁ বারের নির্বাচনে সব পদে বিএনপি প্যানেলের জয়
আরব আমিরাতে চাঁদ দেখা গেছে, পবিত্র শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি
ডিপসিকের চেয়েও কার্যকর নতুন এআই আনার দাবি আলিবাবার
প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গুণগত পরিবর্তনই আমাদের মূল লক্ষ্য: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
বাণিজ্য মেলায় সংঘর্ষ, আহত ১৬
শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচার দাবিতে আমরণ অনশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলে নিজেই জানিয়ে দিবো: তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম
সাত কলেজের জন্য হচ্ছে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’
ভোটারদের আস্থা পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নিতে বলেছে ইইউ: ইসি সচিব
রংপুরের টানা চতুর্থ হার, প্লে-অফের দৌড়ে টিকে রইলো খুলনা
চিরতরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ঢাকার মধুমিতা সিনেমা হল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'জয় বাংলা' স্লোগান, আটক ৫
প্রধান উপদেষ্টার উদ্বোধনে শুরু হচ্ছে একুশে বইমেলা
সুইডেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানো সেই যুবককে গুলি করে হত্যা
বাংলাদেশ পুলিশে ১৬টি শূন্য পদে নিয়োগ, আবেদন শুরু ২ ফেব্রুয়ারি