বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

শ্রীলঙ্কার লোকসংস্কৃতি ও বাঙালি

যে কোনো ভাষার লোকসঙ্গীত বা লোককাহিনির মধ্যে একটি দেশের নির্দিষ্ট জাতির বা জনগোষ্ঠীর প্রাচীন ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক স্মৃতির কথা জনমানসে চিরস্থায়ীভাবে জায়গা করে নেয়। শৈশবের স্মৃতিজুড়ে থাকে গ্রামে-গঞ্জে প্রচলিত বা প্রবীণদের মুখ থেকে শোনা অনেক লোকগান, যেগুলো রোমন্থনে মিশে থাকে গভীর আবেগ এবং নস্টালজিয়া। তবে অবাক হতে হয় যখন এক দেশের লোকগানে অন্য দেশের কথা উল্লেখ থাকে।

আমি শ্রীলঙ্কায় অধ্যয়ন করার সময় সে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা ও ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ হয়েছিল। নিজের বাংলাদেশি পরিচয় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শ্রীলঙ্কার অনেকেই, বিশেষ করে প্রবীণরা আমায় কিছু লোকজ গীতির কথা বলতেন, যেখানে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কার এমন বেশকিছু লোকগান এবং লোককাহিনী জুড়ে যে বাঙালির উল্লেখ রয়েছে তা অত্যন্ত কৌতূহলোদ্দীপক। সেগুলো নিয়ে এখনো কোনো গভীর গবেষণা হয়েছে বলে জানা নেই। এ লেখায় স্মৃতি থেকে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে।

শ্রীলঙ্কায় প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের লোকগানগুলোকে সামগ্রিকভাবে ‘জন-কাবি’ বা ‘জন-গায়ন’ অর্থাৎ লোকজ কবিতা বা লোকজ গান বলা হয়। তেমন একটি গানের নাম হচ্ছে ‘অলিন্দা কাবি’ (olinda kavi)। এর বিষয় হচ্ছে ‘অলিন্দা’ যেটি বাংলায় রত্তি, কইচ গোটা, কুঁচ, প্রভৃতি নামে পরিচিত। এই গানের প্রথম স্তবকের কথা বাংলায় অনুবাদ করলে দাঁড়ায়–

-অলিন্দা (বা রত্তি) কোন্ দেশে আছে? (অলিন্দা তিবেন্নে কয়ি কয়ি দেসে?)

-অলিন্দা আছে বাংলাদেশে (অলিন্দা তিবেন্নে বাঙালি দেসে?)

-সেখান থেকে এনে কোন দেশে চাষ করা হয়? (গেনাত হাদান্নে কয়ি কয়ি দেসে?)

-সেখান থেকে এনে চাষ করা হয় সিংহলী দেশে (গেনাত হাদান্নে সিংহলী দেসে?)

এই গানের মূল রচয়িতা কে সেটা জানা যায় না। তবে সিংহলী ভাষার লোকজ গানের সমৃদ্ধ সম্ভারের মধ্যে এটি অত্যন্ত প্রসিদ্ধ। উপরের উদ্ধৃতিতে দেখা যায়, এর প্রথম স্তবকটি প্রশ্ন-উত্তরের আনুক্রমিক ধারায় সাজানো হয়েছে। শ্রীলঙ্কার নতুন বছরে আয়োজিত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এখনো এই গানের সাথে নৃত্য-পরিবেশন করে উপস্থাপন করা হয় (আগ্রহীরা olinda kavi লিখে ইউটিউবে দেখতে পারেন)। বিশেষ করে প্রাথমিক বা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই এটি পরিবেশন করে থাকে। এ ছাড়াও গ্রামের বাচ্চারা রত্তির বিচি নিয়ে গুটি খেলার সময় নাকি এই গানটি গেয়ে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে–এই রত্তি কীভাবে বাংলাদেশ থেকে শ্রীলঙ্কায় নেওয়া হলো? শ্রীলঙ্কার লোকসঙ্গীতে এটি কীভাবে জায়গা করে নিল? এর দ্বারা কি বৃহত্তর বঙ্গ এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে প্রাচীন কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্কের কথা বলা হচ্ছে, যেটি অন্য কোনো ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়নি?

এই প্রশ্নগুলোর সরাসরি জবাব দেওয়া হয়তো এখন অনেকটা দুরুহ বা বিস্তারিত গবেষণা সাপেক্ষ। তবে এটা বলা যায়–দক্ষিণ এশিয়ার সংস্কৃতিজুড়ে রত্তির ব্যাপকভাবে ব্যাবহার রয়েছে। আমরা জানি, আমাদের পূর্বজরা স্বর্ণাদি মাপার জন্যে রত্তি ব্যবহার করতেন। পক্ষাঘাত জাতীয় রোগের জন্য আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসেবেও নাকি রত্তির প্রচলন রয়েছে। প্রসঙ্গত, সিংহলী ভাষার এই গান ছাড়াও রাজস্থানের একটি লোকগানের বিষয় হচ্ছে–বিয়ের পর মেয়ে রত্তির গাছে (রাজস্থানি ভাষায় ‘ছিরমি’) উঠে দেখছে তার বাবা এবং ভাই কবে তাকে দেখতে আসবে। সুতরাং রত্তি যে উপমহাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং প্রয়োজনীয় জিনিস, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। তাই বোধ হয় শ্রীলঙ্কার অজ্ঞাতনামা এক কবিও তার দেশে রত্তি নিয়ে আসার জন্য প্রাচীন বণিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে অলিন্দা-কাবি রচনা করে বাঙালিদের চিরকালের জন্য গর্বিত করে রেখেছেন।

রত্তির মতো অন্য একটি প্রসিদ্ধ গানের বিষয় হচ্ছে বাঙালি হাতের বালা বা চুড়ি (বাঙালি-ওয়ালালু)। এই গানের লেখক প্রেমাকীর্তি দী আল্উইস। এটি তুলনামূলক আধুনিক হলেও লোকজ গানের ধাঁচেই পরিবেশন করা হয়। এই গানের প্রেক্ষাপট হচ্ছে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কিছু আবদার। বিদেশগামী স্বামীকে স্ত্রী বলছে (ভাবার্থ)–

–প্রতিজ্ঞা করো বাঙালি হাতের চুড়ি নিয়ে আসবে, (বাঙালি ওয়ালালু গেনা এন্নাই পরন্দুয়া)

–প্রতিজ্ঞা করো সিল্কের শাড়ি নিয়ে আসবে, (দুহুলেল সারি গেনা এন্নাই পরন্দুয়া)

–প্রতিজ্ঞা করো স্বর্ণের গলার হার নিয়ে আসবে, (রান্মিনি মালা পালান্দান্নাই পরন্দুয়া)

–এগুলো একসঙ্গে করার পর জাহাজে জায়গা আছে কি না দেখবে। (এয়া ইটু কেরেনা কালা নাওয়াদা ইতিন তাওয়া...)

এই গানের মধ্যেও ব্যবসায়িক প্রসঙ্গটা পরিষ্কার। এই গানটিতে শ্রীলঙ্কায় বাঙালি হাতের বালা যে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত, তা স্পষ্ট।

আমার মনে আছে, একবার ২০০৮ সালের দিকে শ্রীলঙ্কায় এক বন্ধুর বাসায় থেকেছিলাম বেশকিছু দিন। তার একটি নিজস্ব পুরনো সাদা-কালো টেলিভিশন ছিল, যেটি সে নিজেই কোথাও থেকে জোগাড় করে মেরামত করে বইয়ের শেলফে লুকিয়ে রাখে এবং গোপনেই দেখে। কারণ তার নিজস্ব টিভি রাখার অনুমতি ছিল না। সে যা-ই হোক, একদিন টিভিতে একটি নাটক চলাকালীন হঠাৎ শুনলাম নাটকের এক চরিত্র বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করছে। আমার বন্ধুকে জিজ্ঞেস করে জানলাম, তারা বাংলাদেশের ঢাকাই শাড়ির কথা বলছে। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের শাড়িরও কিছুটা কদর রয়েছে।

শ্রীলঙ্কার লোকসংস্কৃতিতে বাংলাদেশের নাম সবচেয়ে বেশি সম্পৃক্ত হচ্ছে সিংহলী জাতির উৎপত্তির কাহিনিতে, যেখানে প্রাচীন বঙ্গের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে প্রাচীন বঙ্গ রাজ্যকে শ্রীলঙ্কার সর্বপ্রথম রাজা এবং আর্য সভ্যতার প্রতিষ্ঠাতা বিজয় রাজকুমারের পিতৃভূমি হিসেবে গণ্য করা হয়। পালি ভাষায় রচিত প্রায় দেড় হাজার বছরেরও পুরাতন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রীয় ইতিহাস গ্রন্থ ‘মহাবংশ’-তে এই উপাখ্যান বিশদভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে।

সংক্ষেপে এই কাহিনির পটভূমি হলো–প্রায় আড়াই হাজার বছরেরও বেশি সময় পূর্বে বিজয় রাজকুমারের পিতামহ ছিলেন বঙ্গের রাজা। তিনি প্রাচীন কলিঙ্গ (তথা বর্তমান উড়িষ্যা) রাজ্যের এক রাজকুমারীকে বিয়ে করেন। তার মেয়ে রাজকীয় অতিরঞ্জিত জীবনের বাইরে স্বাধীনভাবে বাঁচার জন্য রাজপ্রাসাদ থেকে পালিয়ে যান। তাকে সিংহ নামের এক দস্যু (মতান্তরে সিংহ আসলেই প্রাণী ছিল) বন্দি করে জোরপূর্বক বিবাহ করে। সিংহের এক গুহায় বন্দি অবস্থাতেই রাজকুমারী একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। ছেলের নাম করা হয় সিংহবাহু (পালিতে সীহবাহু) এবং মেয়ের নাম করা হয় সিংহশীবলী (পালিতে সীহসীবলি)। তারা পূর্ণবয়স্ক হওয়ার পর তাদের মা নিজের অতীতের কথা তাদেরকে বলেন।

এরপর সিংহবাহু তার মা এবং বোনকে সিংহের গুহা থেকে মুক্ত করে বঙ্গরাজ্যে নিয়ে আসেন। পরবর্তীকালে সিংহবাহু এবং সিংহশীবলী না কি তৎকালীন সমাজের রীতি ও নিয়ম অনুসারে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদেরই সন্তান রাজকুমার বিজয়।

রাজকুমার বিজয় তেমন ভালো স্বভাবের ছিলেন বলা যাবে না। তার বন্ধুদের নিয়ে সে ঘুরে বেড়াত এবং যেখানে সেখানে বিশৃঙ্খল আচরণ করত। রাজ্যের মানুষ, বিশেষ করে রমণীরা তার দলের কাছে হয়রানির শিকার হয় বারবার এবং অনন্যোপায় হয়ে তারা রাজাকে নালিশ করতে থাকেন। ন্যায়নিষ্ঠ রাজা গত্যন্তর না দেখে বিজয় এবং তার দলকে নির্বাসিত করেন রাজ্য থেকে। নির্বাসন প্রাপ্ত রাজকুমার ও তার সঙ্গীরা জাহাজে ভারত সমুদ্রে যাওয়ার পথে লঙ্কা দ্বীপ আবিষ্কার করে। অনেকটা ক্রিস্টোফার কলম্বাসের এমেরিকা আবিষ্কারের মতোই! দূর থেকে দ্বীপের বালির রং দেখতে তাম্রবর্ণের ছিল বলে তারা এই দ্বীপটিকে তাম্রপর্ণী নামকরণ করেন। এটাই শ্রীলঙ্কার প্রাচীন নাম। প্রাচীন গ্রিক ঐতিহাসিকেরাও শ্রীলঙ্কাকে ‘তাপ্র-বেন’ নামে চিহ্নিত করেছেন।

তখনও পর্যন্ত শ্রীলঙ্কায় যক্ষ জনগোষ্ঠীই মূলত বসবাস করতেন বলে ধারণা করা হয়। যক্ষদের কুবেণী নামের একজন মেয়ের সাথে রাজকুমার বিজয়ের সম্পর্কও হয়েছিল। অনেকেই মনে করেন যে বর্তমানের বেদ্দা সম্প্রদায়ের লোক সেই প্রাচীন যক্ষদের বংশধর। বিজয় অবশ্যই পরবর্তীতে কুবেণীকে ত্যাগ করেন এবং কলিঙ্গ রাজ্য থেকে অন্য রাজকুমারীকে বিয়ে করেন।

এই কাহিনি শতভাগ সত্যতা নিশ্চিত করা এখন দুরূহ। তখনকার বঙ্গরাজ্য বর্তমানের কোন অঞ্চলে অবস্থিত সে বিষয়েও মতান্তর রয়েছে। তবে শ্রীলঙ্কার মানুষেরা এখনো দৃঢ় বিশ্বাস করেন যে, বিজয় এবং তার সঙ্গীরাই সিংহলী জাতির আদি পুরুষ। বিভিন্ন সময় শ্রীলঙ্কার কূটনীতিকরাও বাংলাদেশ ভ্রমণে এসে এই কাহিনির উল্লেখ করে এবং বাঙালি ও সিংহলি মানুষের গভীর ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথাও ব্যক্ত করেছেন। রাজকুমার বিজয়ের লঙ্কা বিজয় নিয়ে শ্রীলঙ্কায় যুগে যুগে অনেক কাব্য, গল্প, মঞ্চ নাটক, এবং সিনেমা তৈরি হয়েছে। তার সঙ্গে উজ্জ্বল হয়ে আছে প্রাচীন বঙ্গের নাম, যেটি আধুনিক বাংলাদেশ ও বাঙালী জাতিকে আনন্দিত ও গর্বিত করে। এই কাহিনি এবং উপরে আলোচিত লোকগানগুলো দুদেশের মানুষের মধ্যে অকৃত্রিম বন্ধুত্ব স্থাপনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।

লেখক: পিএইচডি গবেষক, এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্র

এসএ/

Header Ad
Header Ad

বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’

উপস্থাপক হানিফ সংকেত। ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র ঈদের বিশেষ পর্ব আজ (১ এপ্রিল) বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর প্রচারিত হবে। হানিফ সংকেতের রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় নির্মিত এই বিশেষ পর্বে থাকছে বর্ণাঢ্য আয়োজন। বরাবরের মতোই অনুষ্ঠানের শুরু হবে কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী গান ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।

এবারের ‘ইত্যাদি’তে থাকছে দেশাত্মবোধক গান, যেখানে কিংবদন্তি শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী ও সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া গানের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন আরও ১০ জন তরুণ শিল্পী। সংগীত পরিবেশনায় থাকছেন হাবিব ওয়াহিদ ও প্রীতম হাসান। এ ছাড়া সিয়াম আহমেদ ও জান্নাতুল সুমাইয়া হিমিও গানে অংশ নিয়েছেন। বিশেষ নৃত্য পরিবেশন করবেন জনপ্রিয় চার অভিনেত্রী সাফা কবির, সাদিয়া আয়মান, সামিরা খান মাহি ও পারসা ইভানা।

এবারের ‘ইত্যাদি’তে তিন জনপ্রিয় তারকা দম্পতি—শহীদুজ্জামান সেলিম ও রোজী সিদ্দিকী, এফ এস নাঈম ও নাদিয়া আহমেদ, ইন্তেখাব দিনার ও বিজরী বরকতউল্লাহ গানে গানে অনলাইন কেনাকাটার মজার অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন। মধ্যবিত্তের অর্থনৈতিক টানাপোড়েন নিয়ে নির্মিত মিউজিকাল ড্রামাতে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, মোমেনা চৌধুরী, আনোয়ার শাহী ও র‍্যাপ শিল্পী মাহমুদুল হাসান।

বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে তৌসিফ মাহবুব ও শবনম বুবলির নৃত্য পরিবেশনা। পাশাপাশি, ‘গুজব’ নামের ছোট নাটিকায় বিদেশি অভিনয়শিল্পীদের অংশগ্রহণ দর্শকদের জন্য বাড়তি চমক হয়ে আসবে। এছাড়াও নিয়মিত চরিত্র নাতি ও কাশেম টিভির রিপোর্টার, সামাজিক অসঙ্গতি ও সমসাময়িক ঘটনাও উঠে আসবে ‘ইত্যাদি’র বিশেষ পর্বে।

অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেছে ফাগুন অডিও ভিশন এবং রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় রয়েছেন হানিফ সংকেত। ঈদের আমেজে ভরা ‘ইত্যাদি’র এই বিশেষ পর্ব দর্শকদের জন্য চমক ও বিনোদনে ভরপুর হতে যাচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

প্রতিদিন যানজটে নাকাল রাজধানীবাসীর জন্য ঈদের ছুটিতে ঢাকা যেন এক অন্য রকম শহর। কর্মব্যস্ত এই নগরী এখন শান্ত, ফাঁকা ও যানজটমুক্ত। যারা ঈদে ঢাকায় রয়ে গেছেন, তারা উপভোগ করছেন এক ভিন্ন পরিবেশ।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) ঈদের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ ছিল কম। অলস দুপুরে ফাঁকা রাস্তায় হালকা বাতাসে খেলা করছিল রোদের ছায়া। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু এলাকায় মানুষের চলাচল বাড়তে দেখা গেছে।

ঈদে যারা ঢাকায় থেকে গেছেন, তারা অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। মিরপুর চিড়িয়াখানা, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, জিয়া উদ্যান, শ্যামলী ওয়ান্ডারল্যান্ডসহ বিভিন্ন পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রাকিব হাসান জানান, "ঈদের ছুটিতে ঢাকার ফাঁকা রাস্তাগুলোতে ঘুরে বেড়ানোর দারুণ সুযোগ পাওয়া যায়। গতকাল বন্ধুদের সঙ্গে বাইকে পুরো শহরটা ঘুরেছি, দারুণ লেগেছে।"

তবে, কর্মজীবীদের জন্য এই ফাঁকা ঢাকা যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস। ব্যাংক কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, "সারা বছর এই যানজট নিয়ে অফিস করতে হয়। কিন্তু ঈদের ছুটিতে ঢাকাকে অন্য রকম মনে হয়। যদি সারা বছর এমন থাকত, তাহলে জীবন আরও সহজ হতো।"

যাত্রী কম থাকায় আয় কমে গেছে রিকশাচালকদের। সায়েন্সল্যাবে অপেক্ষমাণ রিকশাচালক মোহাম্মদ আরিফ জানান, "যাত্রী নেই বললেই চলে। আয় কমেছে, তবে ভালো দিক হলো জ্যাম নেই, রিকশা চালানো সহজ লাগছে।"

অন্যদিকে, সদরঘাট থেকে গুলিস্তানে আসা চালক লোকমান বলেন, "গুলিস্তান ও বাবুবাজার এলাকায় কিছুটা যানজট পেয়েছি, তবে বাকি রাস্তা ফাঁকা ছিল।"

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, ঈদের ছুটিতে বাসাবাড়ি ও অফিস-আদালত ফাঁকা থাকায় অপরাধ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক জানান, "সাইবার মনিটরিংসহ গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে ঈদকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের নাশকতার তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।"

সরকারি চাকরিজীবীরা এবারের ঈদে টানা ৯ দিনের ছুটি উপভোগ করছেন। আগামী ৬ এপ্রিল থেকে অফিস-আদালত খুলবে। তবে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এর আগেই খুলবে, ফলে ধীরে ধীরে রাজধানী আবার কর্মচঞ্চল হয়ে উঠবে।

Header Ad
Header Ad

মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২

ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরে পদ্মা সেতু এক্সপ্রেসওয়ের সংলগ্ন সাহেববাজার সড়কে বিপরীতমুখী তিনটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে চার যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, নাওডোবা গোলচত্বর থেকে সাহেববাজার সড়কে তিনটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন। গুরুতর আহত চারজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে আরও দুজনের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ জানান, দুর্ঘটনাটি জাজিরা থানার অন্তর্ভুক্ত হলেও এটি শিবচরের সীমানা সংলগ্ন। তিনি বলেন, "ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়েছেন। আহত চারজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও দুই যুবক।"

এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখছে এবং নিহতদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
জাপানে মেগা ভূমিকম্পের শঙ্কা, প্রাণহানি হতে পারে ৩ লাখ
জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক পুরস্কার নিয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা
শান্তিপূর্ণ ঈদ উদযাপনে সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল
রাজধানীতে মেট্রোরেল ও সারা দেশে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু
যমুনা সেতু দিয়ে একসপ্তাহে ২ লাখ ৪৭ হাজার যানবাহন পারাপার, ১৭ কোটি টাকার টোল আদায়
ঈদের দিনে সড়কে মৃত্যুর মিছিল: ১০ জেলায় নিহত ২১
টঙ্গিবাড়ীতে ঈদের দিনে ১০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি, উপকৃত ৪২০ পরিবার
ঈদের দিনেও তাপপ্রবাহ অব্যাহত, এক বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা
যশোরের শার্শা সীমান্তে যুবকের লাশ উদ্ধার, আটক ১