চলতি বছর রেকর্ড চাল উৎপাদনের আশা কৃষিমন্ত্রীর
চলতি বছর বোরোতে রেকর্ড চাল উৎপাদনের আশা প্রকাশ করে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, হাওরে এখন পর্যন্ত ৯০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘চলতি বছর বোরোতে রেকর্ড ২ কোটি ২০ লাখ টনের মতো চাল উৎপাদন হবে।’
রবিবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বোরো ধান নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান। এ সময় কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও সংস্থাপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘চলমান ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৯ লাখ ৭৬ হেক্টর জমি। আর আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে। এ বছর চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২ কোটি ১৫ লাখ টন। মাঠে ধানের অবস্থা ভালো, হাওরের ধানও ভালোভাবে কাটা গেছে। আশা করছি, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ১০ লাখ টন বেশি চাল উৎপাদন হতে পারে।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘মেশিনে ধান কাটায় হাওরের ধান দ্রুত কাটা সম্ভব হয়েছে। এই মুহূর্তে হাওরের ৭টি জেলায় ৩ হাজার ৮০০ কম্বাইন হারভেস্টার ও ৬৭০টি রিপার দিয়ে ধান কাটা চলছে। পাকা ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা ৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে হাওরে কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘শ্রমিকের মজুরি এখন বেশি ও শ্রমিক সংকট রয়েছে। মেশিনে ধান কাটায় দ্রুততার সঙ্গে ধান কাটা যাচ্ছে। একইসঙ্গে ধান কাটায় খরচ কম হচ্ছে। সবদিক বিবেচনায় কৃষকেরা এর সুফল পাচ্ছে।’
ধানের দাম প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছেন। ধান কাটার পরই ৯০০ থেকে ১১০০-১২০০ টাকা মণ দরে কৃষকেরা ধান বিক্রি করতে পারছেন।
তিনি বলেন, অনেকেই কৃষির উন্নয়নকে উন্নয়ন মনে করেন না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধের অনেকেই মনে করেন উন্নয়ন মানে শুধু রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন, স্কুল-কলেজের বিল্ডিং বানানো। বিগত ১৪ বছরে কৃষিতে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। ৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে আমরা হাওরের কৃষককে ধান কাটার যন্ত্র দিচ্ছি অর্থাৎ একটা যন্ত্রের দাম ২৮ লাখ টাকা হলে ২০ লাখ টাকা সরকার আর কৃষক মাত্র ৮ লাখ টাকা দিচ্ছে। এটি একটি বিরাট উন্নয়ন।
কৃষিমন্ত্রী জানান, হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে এবছর বোরো আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে। আর এই ৭টি জেলায় মোট বোরো আবাদ হয়েছে (হাওর ও হাওরের বাইরে উচুঁ জমি মিলে) ৯ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪০ লাখ টন চাল।
এখন পর্যন্ত হাওরে যে ৯০ ভাগ বোরো ধান কর্তন হয়েছে তার মধ্যে সিলেটে ৯১ ভাগ, মৌলভীবাজারে ৯৭ ভাগ, হবিগঞ্জে ৮০ ভাগ, সুনামগঞ্জে ৯৬ ভাগ, কিশোরগঞ্জে ৮০ ভাগ, নেত্রকোনায় ৯৬ ভাগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৯২ ভাগ ধান কাটা হয়েছে।
এনএইচবি/এমএমএ/