গাজীপুরে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
সূর্য যেদিকে ফুল সেদিকে। এজন্যই এই ফুলের নাম সূর্যমুখী। সবসময় সূর্যের মুখ করে তাকিয়ে থাকে। গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রানীগঞ্জে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন হয়েছে। এ উপজেলায় প্রথমবারের মতো জমিতে সূর্যমূখী চাষ করেছেন বাড়ীগাঁও গ্রামের কৃষক আবুল হাসেম ও বিশ্বনাথ দাস। সূর্যমুখী ফুলের এমন অপূর্ব সুন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক প্রকৃতি প্রেমীরা ছুটে আসছেন পরিবার নিয়ে। একদিকে যেমন আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে,জমিকে কাজে লাগিয়ে লাভের আশা করছেন কৃষক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সূর্যমুখীর বীজ থেকে উৎপাদিত তেলে লিনোলিক এসিড থাকে যা হার্টের জন্য ভালো। সূর্যমুখী তেলের উৎপাদন বাড়লে মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত তেল পাবে, চাষিরাও লাভবান হবেন। কম খরচে বেশি লাভের সুযোগ থাকায় ওই এলাকার আরও অনেকেই সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। রবি ফসলের মধ্যে সূর্যমুখী অন্যতম তিন মাসের মধ্যে প্রতিটি গাছে ফুল ফুটার পর বাগানগুলো অপরূপ সৌন্দর্য ধারণ করেছে।
সূর্যমুখী ক্ষেত ঘুরে দেখে আশা সাদিয়া বলেন, এই এলাকায় সূর্যমুখী ফুলের চাষের খবরটি ফেইসবুকে দেখেছি। আজ পরিবার নিয়ে দেখতে এসেছি। এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। বাড়বে সূর্যমুখী তেলের চাহিদা, তাই সম্প্রসারিত হবে সূর্যমুখীর ক্ষেত। সূর্যমুখী ক্ষেত ঘুরে দেখে আশা ফারিহা জানান, সূর্যমুখী হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে তাই পরিবারের কয়েক জন মিলে একটু দেখতে ও ছবি তুলতে আসলাম। এখানে এসে সূর্যমুখী খেত ঘুরে দেখতে ও ছবি তুলতে পেরে অনেক ভালো লেগেছে।
সূর্যমুখীর ফলনে সন্তুষ্ট হয়ে কৃষক মো. আবুল হাসেম ও বিশ্বনাথ দাস বলেন, পল্লীকর্ম-সহায়ক বাসা ফাউন্ডেশনের অনুপ্রেরণা থেকেই এই অঞ্চলে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু করেছি। বিনামূল্যে বীজ, সার ও ওষুধ দিয়েছেন, ফলনও ভালো হয়েছে। সূর্যমুখীর ফলনে সন্তুষ্ট আমরা। যদি আবহাওয়া ও বাজার ভালো থাকে অনেক টাকা লাভ হতে পারে। আমাদের মতো আরও কৃষক সূর্যমুখী চাষে আরও আগ্রহী হয়েছেন। ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে সূর্যমুখীর চাষ করবেন বলে জানান।
বাসা ফাউন্ডেশনের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সাইদুর রহমান বলেন, সূর্যমুখী ফুলের তেল স্বাস্থ্যসম্মত ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোগের ব্যাপক উপকারিতা। তেল ফসলের প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনীর জন্য সূর্যমুখী ফুলের চাষ করার জন্য কৃষকদেরকে বীজ,সার ও প্রয়োজনীয় কিটনাশক দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত আমরা মাঠ পরিদর্শন ও পরামর্শ দিচ্ছি। ফলনও খুব ভালো হইছে। এই প্রকল্পটি সফল হলে আগামী বছর আরও ব্যাপক আকারে সূর্যমুখী ফুলের চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হবে। তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী থেকে তেল ও মৌমাছি থেকে মধু দুটোই আমরা লাভবান। আমাদের ভোজ্য তেল বেশির ভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়, দেশে যদি এই সূর্যমুখী প্রকল্প সফলতা পায় তা হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও আমরা এই তেল রপ্তানি করতে পারব।
এসএন