কুড়িগ্রামে ফুলকপির দাম বাড়ায় কৃষকের মুখে হাসি
কুড়িগ্রামের আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফুলকপি ও বাঁধা কপির বাম্পার ফলন হয়েছে। টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে ফুলকপির দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা করলেও গত কয়েক দিন থেকে দাম বেড়ে যাওয়ায় ফের কৃষক-কৃষানীর মুখে হাসি ফুটেছে। প্রতি বছর চাষিরা ভালো দামের আশায় শীত মৌসুমে আগাম ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষে নানা ঝুঁকি থাকা সত্তেও হাইব্রিট জাতের ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চলতি শীত মৌসুমে কোনো জমি আর পতিত নেই। বিস্তৃর্ণ জমিতে এখন শোভা পাচ্ছে সবুজের সমাহার।
ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমন্ডল কুটিবাড়ী ও কৃষ্ণনন্দ বকসী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শত শত কৃষক পতিত জমিতে আগাম জাতের ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করেছেন। টানা এক থেকে দেড় মাস ধরে কৃষকরা ক্ষেতের ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি করছেন। এর মাঝখানে ফুলকপির দাম কমে গেলেও গত কয়েক দিন থেকে দাম বাড়ায় কৃষকদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।
ফুলবাড়ী উপজেলার কুরুষাফেরুষা এলাকার কৃষক মনছার আলী জানান, ১ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছেন তিনি। প্রথম দিকে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকায় প্রতি মন ফুলকপি বিক্রি করেন। মাঝখানে কয়েক সপ্তাহ ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় মন বিক্রি করায় চরম দুচিন্তায় পড়েছি। কিন্তু গত কয়েকদিনে দাম বেড়ে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি করতে পেরে তিনিসহ অনেক কৃষকদের মাঝে স্বস্তি এসেছে। এ রকম দাম দুই-তিন সপ্তাহ থাকলে চাষিরা ১ বিঘা জমিতে খরচ মিটিয়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানান এই কৃষক।
একই এলাকার কৃষক ঈশা মিয়া জানান, এ বছর ১ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্বার ফলন হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ১ বিঘা জমির ফুলকপি চাষ করতে খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। বর্তমানে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় প্রতি মন কফি বিক্রি করেন তিনি। এ রকম বাজার দর থাকলে প্রতি বিঘায় খরচ তুলে ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় হবে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শীত মৌসুমে কৃষি বিভাগের পরামর্শে হাইব্রিটসহ বিভিন্ন জাতের ফুলকপি চাষ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা সৃষ্টি করেছেন চাষিরা। জেলায় ফুলকপি ৪৭০ হেক্টর ও বাঁধাকপি ৪৯৫ হেক্টর জমিতে চাষবাদ করেছেন প্রান্তিক চাষিরা। ফুলকপির বাজার দর প্রতি মন ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি করছেন চাষিরা। সেই বাঁধাকপি প্রতি পিস ৮ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। এ রকম বাজার দর থাকলে কোনো চাষির লোকসান হবে না বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এসআইএইচ