হাকিমপুরে প্রথমবারের মতো ব্ল্যাক-বেগুনি ধান চাষ
ওষুধি গুণসমৃদ্ধ ব্ল্যাক বেগুনি ধান চাষ করেছেন দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার কৃষক শামীম হোসেন। তিনি প্রতি বছর নিজের জমিতে বোরো ও ইরি ধান চাষ করেন। ফলনও ভালো পান। কিন্তু এবার তিনি চাষ করেছেন ফিলিপাইনের ব্ল্যাক রাইস, চায়না ব্ল্যাক এবং বেগুনি জিংক জাতের ধান।
হিলি-দলার দরগা সড়কে বিশাল মাঠজুড়ে এ ধানের মাঠের সমারোহ। মাঝে খণ্ডখণ্ড জমিতে কালো ও বেগুনি জাতের ধান। দূর থেকে দেখলে মনে হবে ধান পুড়ে গেছে। কিন্তু সামনে গেলে বোঝা যায় এ ধানের রঙটাই এমন।
কৃষি বিভাগের দাবি, ধানগুলো ক্যানসার প্রতিরোধী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পুষ্টি সমৃদ্ধ উচ্চ ফলনশীল ধান। এ ধরনের ধান চাষে তেমন কোনো রোগবালাই না থাকায় ভালো ফলনের আশা কৃষক শামীমের।
কৃষক শামীম হোসেন বলেন, কৃষক পরিবারের সন্তান আমি। ব্যাংক ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করেছি টানা ১৮ বছর। কর্মজীবনের শুরু থেকেই কৃষিকাজ ছাড়িনি। সে টানেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রামে এসে চাষ করছি।
তিনি আরও বলেন, এবারই প্রথম পরীক্ষামূলক এ এলাকায় জমিতে চাষ হয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ চায়না ও ফিলিপাইনের ব্ল্যাক রাইস, জিংক বা বেগুনি জাতের ধান। বিদেশি এসব জাতের ধানের বীজ নাটোরের ইমরান, ঢাকার মোক্তাদির ও পার্বতীপুরের সায়েদের কাছ থেকে এনেছি।
তিনি বলেন, শখের এ ধান কাটা শুরু হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো। স্থানীয় অনেকেই এ ধান চাষ করতে আগ্রহী। এসব ধানের বীজ স্থানীয় কৃষকদের কাছে কম দামে বিক্রির ইচ্ছে আছে।
আরেক কৃষক আজগর আলী বলেন, প্রথমে যখন এ ধরনের ধান রোপণ করা হয়েছে, তখন দেখেছি রঙটা লালচে ধরনের। পরিণত ধানের বর্ণ অনেকটা এমন যে, সাধারণত ধান পুড়ে গেলে যে কালচে রঙ হয়, সে রঙ ধারণ করে। প্রথমে ভেবেছিলাম ধানগুলো হয়তো পুড়ে গেছে। তবে এখন দেখছি এ ধানের রঙটাই এমন। শুনেছি এটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং দামও নাকি অনেক বেশি।
কৃষক রহিম উদ্দিন বলেন, এ ধান আমাদের এলাকায় প্রথম, ধানগুলো দেখতে যেমন সুন্দর এর পুষ্টিগুণ অনেক। আগাম এ ধান কেটে ওই জমিতে আলু অথবা সরিষা লাগানো হবে।
নতুন জাতের ধানের বিষয়ে জানতে চাইলে হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, এ উপজেলায় প্রথমবারের মতো এ ধানের চাষ করা হয়েছে। ধানগুলো অনেক পুষ্টিকর। এলাকায় নতুন এ ধান কেউ রোপণ করলে কৃষি বিভাগ সহযোগিতায় করবে।
এসএন
