গাইবান্ধায় শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষক
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অধিক লাভের আশায় শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এরই মধ্যে মূলা, পটল, ঢেঁড়শসহ আরও কিছু শীতের আগাম সবজি বাজারে উঠতে শুরু করেছে। ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা খুশি।
জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৩ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বেগুন, মূলা, ঢেঁড়শ, বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, পেপে, শিম, লাউ, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, বরবটি, ক্ষিরা, পালংশাক, লালশাকসহ বিভিন্ন শাকসবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভালো দামের আশায় এসব সবজি চাষে কৃষক ঝুঁকেও পড়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা গুমানীগঞ্জ ইউনিয়নের পারগয়রা, কালিকাডোবা, অনন্তপুর, জরিপপুর, কামারদহ ইউনিয়নের বকশিচর, বার্ণাচন্দ্র শেখর, মাস্তা, বাইচপুর, ঘোড়ামারা, ফাঁসিতলা গ্রামে শতের আগাম সবজি চাষ হচ্ছে। কৃষকরা বেগুন, মূলা, কপি, ঢেঁড়শ, লাল শাক, পুঁইশাক ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কারের জন্য নিড়ানি দিচ্ছেন। কেউবা বেগুন, ঢেঁড়শ গাছে লাকড়ি পুঁতে দিচ্ছেন। কেউবা সবজি ক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করছেন। মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে লাল-সবুজ শাক-সবজি বিভিন্ন সবজি। দিন দিন বেড়ে উঠছে সবজি চারাগুলো। কিছু কিছু গাছে ফুল এসেছে আবার কোনোটা থেকে ফসল তোলা হচ্ছে। অনেকেই মূলা, ঢেঁড়শ, লাল শাক বিক্রি শুরু করেছেন। বাজারে আগাম সবজির ভালো দামও পাচ্ছেন।
উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের বকশিচর গ্রামে জায়েদ আলী ৩০ শতক জমিতে মূলা এবং ২০ শতক জমিতে লাল শাক লাগিয়েছেন। এরই মধ্যে তিনি মূলা বাজারে বিক্রিও শুরু করেছেন। বাজারে এখন প্রতিটি সবজির দাম বেশি। তাই ভালো দাম পেয়ে তিনি খুশি।
পৌর এলাকার গোরস্থান পাড়ার বাবলু মিয়া জানান, তিনি তার ৪০ শতক উঁচু ভিটায় পটল আবাদ করেছেন। হাট বাজারে পটল বিক্রি করে তিনি ভালো দাম পেয়ে তিনি খুশি। এখন ওই জমিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপি লাগিয়েছেন। কপির গাছও ভালো হয়েছে। শীতের আগেই এসব ফুলকপি ও বাঁধাকপি তুলতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা-ই- মাহমুদ জানান, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় কৃষকরা আমন ধানের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। আগাম শীতকালীন সবজি যেমন- লালশাক, পালং শাক, পুঁই শাক, মুলা, ঢেঁড়শ, কপি, বেগুন, শিম, বরবটিসহ বিভিন্ন সবজি চাষ শুরু করেছে কৃষকরা। আগাম সবজির বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় লাভবান হবেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকদের উৎসাহ ও বিভিন্ন রকম সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের কৃষি প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের মাঝে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন ধরনের সবজির বীজ বিতরণ করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
এসএন