শিমের সাদা-বেগুনি ফুলে রঙিন প্রকৃতি
শিমের মাচায় সবুজের সঙ্গে দুলছে রঙিন ফুল। শিমের সাদা-বেগুনি রংয়ে রঙিন হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। মৌসুম শুরুর আগেই এমন মনোরম দৃশ্যে ভরে উঠেছে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শিম ক্ষেতগুলো। আগাম শিম চাষে ভালো ফলনের পাশাপাশি লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।
জানা যায়, পঞ্চগড়ে শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম শিমের আবাদ। গত কয়েক বছর ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে আগাম জাতের শিম। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন এ সবজিটি আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা।
মাঠে গিয়ে দেখা যায়, শীত শুরু না হতেই ফুলে ভরে উঠেছে শিমের ক্ষেত। পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। আগে বাজারে নামাতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যাবে এমন প্রত্যাশা তাদের। তাই মৌসুম শুরুর আগেই অনেকটা প্রতিযোগিতার মতোই শিমের আবাদ করেছেন তারা।
পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছর জেলায় ২৬০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছিল। এ বছর তা বেড়ে আবাদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬৫ হেক্টর।
মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের ছত্রশিকারপুর এলাকার কৃষক রবিন বলেন, পাঁচ বিঘা জমিতে শিমের আবাদ করেছি। ইতোমধ্যে শিম আসতে শুরু করেছে। ভালো দাম পেলে আশা করছি আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারব।
একই এলাকার কৃষক মুনসুর আলী বলেন, গত বছর তিন বিঘা জমি থেকে দেড় লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছি। এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে সবজিটি আবাদ করেছি। খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকার মতো। ভালো দাম পেলে ২ লাখ টাকারও বেশি দামে উৎপাদিত শিম বিক্রি করতে পারব।
গত বছর এক বিঘা জমির শিমের আবাদে লাভ হওয়ায় এবার দুই বিঘা জমিতে শিম করেছেন শালডাঙ্গা ইউনিয়নের আরাজি এলাকার কৃষক রুবেল ইসলাম। তিনি বলেন, দুই বিঘায় খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। আবাদ ভালো হয়েছে, বিক্রিও শুরু করছি। জমি থেকেই পাইকাররা ১০০ টাকা কেজি দরে শিম কিনছেন। মৌসুমের শেষ পর্যন্ত এই দাম থাকলে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা পাব বলে আশা রাখি।
কৃষক সামাদ বলেন, মৌসুমের শুরুর দিকে ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে জমি থেকেই শিম নিয়ে যায় ব্যবসায়ীরা। তবে আমদানি বাড়লে দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় নেমে যেতে পারে। তারপরও ভালো লাভ হবে।
পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শাহ মুহম্মদ শাখাওয়াত হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, জেলার বিভিন্ন এলাকা শিম চাষের জন্য বেশ সম্ভাবনাময়ী। এটা শীতকালীন সবজি হলেও এখন প্রায় সব মৌসুমেই চাষ হচ্ছে। ভালো উৎপাদনের জন্য কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
এসজি