আমন চাষ
পটাশের চাহিদা বিঘাপ্রতি ১৫ কেজি, বরাদ্দ ২ কেজি
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চলতি আমন চাষ মৌসুমে চাহিদা অনুযায়ী পটাশ সার পাচ্ছেন না কৃষকরা। প্রতি বিঘায় ১৫ কেজি পটাশ সারের প্রয়োজন হলেও বরাদ্দ মিলছে মাত্র দুই কেজি।
জানা যায়, আমন মৌসুমে জমিতে প্রয়োগের জন্য অপরিহার্য রাসায়নিক সার হিসেবে এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) যা পটাশ নামে কৃষকসহ সবার কাছে পরিচিত। কিন্তু উপজেলার আমন চাষিরা টাকা নিয়ে হন্যে হয়ে বিসিআইসি ডিলারসহ খুচরা ব্যবসায়ীদের দোকানে দোকানে ঘুরেও পাচ্ছেন না পটাশ সার।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১৮ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে আমন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৮০ ভাগ জমিতে আমন রোপণ শেষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা চাষাবাদের জন্য উপজেলায় পটাশ সারের চাহিদা ১ হাজার ২৭৩ টন। কিন্তু চলতি মাসে বরাদ্দ মিলেছে মাত্র ১৩৩ টন সার।
উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কৃষক সুবাস চন্দ্র বলেন, চার-পাঁচ বিঘা বর্গা জমিতে আমন রোপণ করেছেন। অনাবৃষ্টি, খরতাপসহ বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে ঠিকমতো জমিতে সেচও দিতে পারছেন না। তারপর আবার ডিজেল ও সারের দামও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আবার পটাশ সার মিলছে না। আমন আবাদ নিয়ে এ বছর শত ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। রোপণ করা আমন চারা বড় হচ্ছে, কিন্তু পটাশ সার এ মুহূর্তে প্রয়োগ করলে চারা গাছ শক্তশালী ও শেকড়ের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়। পাশপাশি ধানের দানা হৃষ্টপুষ্ট হতেও সহায়তা করে পটাশ সার। সব মিলিয়েই এখন আমনের উৎপাদন খরচ অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু শেষতক আমনের আশানুরূপ দাম পাওয়া নিয়েও শঙ্কায় থাকতে হচ্ছে।
পটাশ সার সংকটের বিষয়ে সরেজমিনে ফুলবাড়ী পৌরশহরের বিসিআইসির সার ডিলার মেসার্স ইসলাম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী খোরশেদ আলম লালু বলেন, কৃষকদের চাহিদানুযায়ী পটাশ সার সরবরাহ করা যাচ্ছে না। চলতি মাসে যে পরিমাণ পটাশ সার বরাদ্দ পাওয়া গেছে তা বিঘাপ্রতি দুই কেজি করে। অথচ কৃষকের প্রয়োজন প্রতি বিঘায় ১৫ কেজি পটাশ সার।
পৌর বাজারের বিসিআইসির সার ডিলার পরিতোষ কুমার মল্লিক বলেন, বর্তমানে কৃষকদের পটাশের চাহিদা অনেক। কিন্তু বরাদ্দ না পাওয়ায় চাহিদানুযায়ী কৃষকদের পটাশ দেওয়া যাচ্ছে না। পটাশ সার সাধারণত রাশিয়া, ইউক্রেন ও বেলারুশ থেকে আমদানি করা হয়। কিন্তু রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পটাশের সংকট দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার পটাশ সারের সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, চলতি মাসে প্রতিবিঘায় ১৫ কেজির স্থলে ২ কেজি পটাশ সার বরাদ্দ দেওয়া হলেও আগামী মাসে পটাশের কোনো ঘাটতি থাকবে না। তবে উপজেলায় বিসিআইসি ও বিএডিসি এর ২২ জন ডিলার রয়েছেন।
এসএন