ব্রিটেনের প্রথম হাই-টেক রানি এলিজাবেথ
‘রানি এলিজাবেথ-২’ ছিলেন ব্রিটেনের প্রথম হাই-টেক রানি। তিনি প্রযুক্তিতে সাধারণের চেয়ে বেশি আগ্রহী ছিলেন। তথ্যপ্রযুক্তিতে ব্যঘ্র ছিলেন। তার অনেকগুলো প্রমাণ রেখেছেন। ১৯৫৩ সালে সিংহাসনে বসেছেন। তিনিই ব্রিটেনের প্রথম রানি, যার সিংহাসন আরোহন টিভিতে প্রচারিত হয়েছে। তিনি ব্রিটেনের একেবারে শুরুর দিকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অন্যতম। ১৯৭৬ সালে রানি এলিজাবেথ তার প্রথম ই-মেইল প্রেরণ করেন। তখন ইংল্যান্ডের মোর্ভেনে রাডার সিগনাল ও রাডার স্থাপনের কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছেন, মেইলটি প্রেরণ করেছেন। প্রকাশিত হয়েছে যে, কোনোদিন তার মেইলগুলো লেখেননি। তবে তিনি ডিকটেশন দিয়েছেন। ব্রিটেনের কম্পিউটার বিজ্ঞানী পিটার ক্যাসেটেন তাকে অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়েছেন ১৯৭৬ সালে। তাকে ইন্টারনেট দুনিয়াতে এনেছেন। ইংল্যান্ডের রানির ইউজার নেমও ছিল অত্যন্ত আগ্রহের। ‘এইচএমই ২’ নামে অ্যাকাউন্ট চালাতেন। এর পুরো মানে হলো-‘হার ম্যাজেস্ট্রি এলিজাবেথ ২’। তার ইন্টারনেট আগ্রহ কেবল জরুরী ই-মেইল পাঠানোতে সীমাবদ্ধ ছিল না, ১৯৭৭ সালেই ব্রিটেনের রানি তার রাজ পরিবারের ওয়েবসাইট চালু করেছেন। ২০০৭ সালে রাজ পরিবারের ইউটিউব চ্যানেল শুরু করেছেন। এখন এই চ্যানেলের ৯ লাখ ৭৩ হাজার ফলোয়ার আছেন।
তিনি অন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও ছিলেন ভালোভাবে। রাজ পরিবারের প্রধান হিসেবে তিনি টুইটার ও ইনস্ট্রাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতেন। ২০১৪ সালে এলিজাবেথ একটি টুইট করেছেন তার ‘ব্রিটিশ রাজতন্ত্র’ নামের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একদল দর্শক ও ভক্তদের সামনেই। এখন এই অ্যাকাউন্টের নাম বদলে রাখা হয়েছে ‘রাজ পরিবারটি (দি রয়্যাল ফ্যামেলি)’। তখন তিনি লিখেছেন, ‘এটি একটি আনন্দের বিষয় যে, আজকে বিজ্ঞান জাদুঘরের একটি পুরোনো প্রদর্শনী চালু করতে পারলাম। আমি আশা করি, মানুষ দেখে আনন্দ লাভ করবেন-এলিজাবেথ আর।’
জীবনের শেষ বেলা ২০১৯ সালে রানি এলিজাবেথ তার রাজ পরিবারের ইনস্ট্রাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি ছবি প্রদান করেন। মহারানি ভিক্টোরিয়ার স্বামী রাজা অ্যালবার্টকে ছবিটি দিয়েছেন চার্লস ব্যাবেজ ১৮৪৩ সালে। তাকে বিশ্বে কম্পিউটারের পথিকৃৎ হিসেবে সম্মানিত করা হয়। রাজ পরিবারের ইনস্ট্রামের এই অ্যাকাউন্টটি প্রাথমিকভাবে তাদের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। তবে এই ছবিতে রানি এলিজাবেথের স্বাক্ষর ছিল।
প্রযুক্তিকে গ্রহণের সময়ে রানি তাকে আয়ত্ব করেছেন। ট্যাবলেট কম্পিউটারের বড় ধরণের ভক্ত। তিনি একটি অ্যাই প্যাড ব্যবহার করতেন। তার স্বাস্থ্য ভেঙে যাবার পর জুম মিটিং করতেন। কোভিডের লকডাউনের সময় তার অনেকগুলো জনসম্পৃক্ততা বাতিল করতে হয়েছে। তখন তিনি ইন্টারনেটে যোগাযোগ করেছেন।