মাইজিপি অ্যাপে ভার্চুয়ালি ‘মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’ ও ‘গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ’
মাইজিপি অ্যাপের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি ‘মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’ ও ‘১৯৭১: গণহত্যা- নির্যাতন আর্কাইভ’ দেখার সুযোগ পাবেন গ্রামীণ ফোনের গ্রাহকরা।
এই সুযোগগুলো করে দিতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সঙ্গে সম্প্রতি পার্টনারশিপ করেছে ডিজিটাল বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি পার্টনার গ্রামীণফোন।
দেশের প্রতিটি জায়গায় মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এখন থেকে মানুষ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সমৃদ্ধ এ দু’টি জাদুঘর ভার্চুয়ালি ঘুরে দেখতে পারবেন।
মাইজিপি অ্যাপের মাধ্যমে ‘মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’ এবং ‘১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর’কে ভার্চুয়ালি উপভোগ করার সেবা প্রচারে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে।
২৬ সেপ্টেম্বর, সোমবার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এ বিষয়ে একটি আলোচনা সভাও আয়োজিত হয়েছে।
শিরোনাম ছিল, ‘গৌরবের ইতিহাস পথ দেখাবে আগামীর।’
সভা পরিচালনা করেছেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও প্রখ্যাত অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর, এমপি।
অংশগ্রহণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সদস্য-সচিব নামকরা অভিনেত্রী সারা যাকের, প্রাবন্ধিক ও গবেষক এবং সাহিত্যপ্রকাশের কর্ণধার মফিদুল হক, প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ডা. সারওয়ার আলী, ‘১৯৭১: গণহত্যা- নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্ট’র সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের খ্যাতিমান অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, এই আর্কাইভ ও জাদুঘরের ট্রাস্টি লে. কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির (বীরপ্রতীক)।
গ্রামীণফোনের পক্ষে সিইও ইয়াসির আজমান, চিফ মার্কেটিং অফিসার সাজ্জাদ হাসিব, চিফ ডিজিটাল ও স্ট্র্যাটেজি অফিসার সোলায়মান আলম অংশগ্রহণ করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেছেন।
সভায় জানানো হয়েছে, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ ও চেতনা সমুন্নত রাখতে গড়ে তোলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। আর ১৯৭১: গণহত্যা- নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের লক্ষ্য হলো, মুক্তিযুদ্ধের সময় ঘটিত নির্যাতনের ইতিহাস সংরক্ষণ করা।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে অনেকে জাদুঘর দুটি পরিদর্শন করেন। তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ও সব মানুষের দেখতে যাওয়া সবসময় সম্ভব হয়ে ওঠে না।
এই সমস্যাগুলোর সমাধানে এবং ডিজিটালাইজেশনে দেশের টেক সার্ভিস লিডার ‘গ্রামীণফোন’ তার ‘মাইজিপি অ্যাপ’-এ তাদের জন্য একটি ইন্টারফেস তৈরি করেছে। ফলে দেশের যেকোনো জায়গা থেকে জাদুঘরে ডিজিটালি প্রবেশ করা যাবে ও ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটির মাধমে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যাবে।
আলোচনাকালে আসাদুজ্জামান নূর এমপি বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জন্য কেবল গৌরবেরই নয়, বরং এর চেতনা আমাদের তরুণ প্রজন্মকে উজ্জীবিত করে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বলার মতো অনেক গল্প আছে; যেমন- শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মো. মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী, যিনি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন কিংবা বলা যায়, শিরিন বানু মিতিলের কথা, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন পুরুষের ছদ্মবেশে। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সহায়তা ও স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী-প্রত্যেকের অনুদানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদারভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমি দেশের মানুষের জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ভার্চ্যুয়াল ভ্রমণের এই সুযোগকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ায় গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এটি একটি চমৎকার উদ্যোগ।”
গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান বলেন, ‘গ্রামীণফোন প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষ ও সমাজের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে। আমরা সবাই জানি জ্ঞানই শক্তি। ডিজিটালাইজেশনকে ইতিহাস ধরে রেখে আমাদের অতীতকে সংরক্ষণ করার উপযোগী মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করতে হবে, বিশেষত: আগামী প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানাতে হলে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা এমন কিছু করতে চেয়েছি, যার মাধ্যমে মানুষের ক্ষমতায়ন হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান লাভের মাধ্যমে মূলত তরুণরা ক্ষমতায়িত হবে ও তারা যুদ্ধের চেতনার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে পারবে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে ও চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
তারা জানিয়েছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এখন সবার হাতে, হাতে। দেশজুড়ে নিরবচ্ছিন্ন ফোরজি কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করতে ও সবার কাছে ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে গ্রামীণফোন। তারই অংশ হিসেবে এবার সবার হাতে পৌঁছে যাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।
মাইজিপি অ্যাপে ভার্চ্যুয়াল অভিজ্ঞতার মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের ইতিহাস জানতে পারবেন সব মানুষ।
ওএফএস।