এএমডির শক্তিশালী তিন নতুন গ্রাফিক্স কার্ড বাজারে
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি চিপসেট নির্মাতা অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেস বা এএমডি ইনকর্পোরেটেড। ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানি ইন্টেল কর্পোরেশনের সাথে প্রতিযোগিতা করার আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইতোমধ্যেই তারা বিশ্ব বাজারে একটি ভালো অবস্থানও তৈরি করে নিয়েছে। বিশ্ব বাজারে এএমডির সর্বাধিক বিক্রিত পণ্য হচ্ছে তাদের প্রসেসর। বিশেষ করে ওভার ক্লক এবং বুস্টআপ স্পিড বেশি হওয়ায় এই প্রসেসর গেমারদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়।
তবে কেবল প্রসেসরই নয় এএমডির গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট কার্ড বা জিপিউ কার্ডও প্রচুর জনপ্রিয়। যদিও বিশ্ব বাজারে সর্বোচ্চ বিক্রিত জিপিউ এনভিডিয়া গ্রাফিক্স কার্ড। এএমডিও একদম পিছিয়ে নেই। সর্বোচ্চ শক্তিশালী গ্রাফিক্স কার্ড গুলো আছে তাদের কাছেই। একদিকে এনভিডিয়া চেষ্টা করছে মাণ অক্ষুণ্ন রেখে বিশ্ববাজারের গ্রাফিক্স কার্ডের দাম কমাতে অপরদিকে এএমডি একের পর এক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিভাবে আরও শক্তিশালী গ্রাফিক্স কার্ড উদ্ভাবন করা যায়।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১০ মে) রেডিওন ৬০০০ সিরিজের তিনটি নতুন মডেলের গ্রাফিক্স কার্ড বাজারে ছেড়েছে এএমডি। নতুন জিপিউ তিনটি হচ্ছে আরএক্স ৬৯৫০ এক্সটি, ৬৭৫০ এক্সটি এবং ৬৬৫০ এক্সটি। এএমডি জানিয়েছে গ্রাফিক্স কার্ড তিনটি আগের চেয়েও অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন এবং এই প্রথমবারের মত এএমডি ফিডেলিটি এফএক্স সুপার রেজুলেশন টু এর জন্য গেম অ্যাডিং পরিষেবা চালু করা হয়েছে।
এএমডি বলছে গ্রাফিক্স কার্ডগুলো ডিজাইন করা হয়েছে এএমডি আরডিএনএ টু গেমিং আর্কিটেকচারের উপর, যা আগের চেয়েও আধিক ক্ষমতাসম্পন্ন এবং সুপার স্মুদ। ডিডিআর সিক্স মেমোরির এই জিপিউ গুলো সেকেন্ডে ৪০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ গিগাবাইট পর্যন্ত ব্যান্ডউইথ আদান-প্রদান করতে সক্ষম।
এএমডি রেডিওন আরএক্স ৬৯৫০ এক্সটি গ্রাফিক্স কার্ডটির কম্পিউট ইউনিট ৮০ টি। মেমোরি ১৬ গিগাবাইট। স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ২১০০ মেগাহার্জ যা ওভার ক্লক বা বুস্ট আপ করলে ২৩১০ মেগাহার্জ পর্যন্ত স্পিড আপ করতে সক্ষম। এর মেমোরি ইন্টারফেস ২৫৬ বিট। পাওয়ার কনজাম্পশন ৩৩৫ ওয়াট। সর্বোচ্চ আউটপুট রেজুলেশন ফোর কে (৩৮৪০বাই২১৬০)। এএমডি এই গ্রাফিক্স কার্ডের দাম হাঁকিয়েছে ১০৯৯ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৯৫ হাজার টাকা।
এএমডি রেডিওন আরএক্স ৬৭৫০ এক্সটি গ্রাফিক্স কার্ডটির কম্পিউট ইউনিট ৪০ টি। মেমোরি ১২ গিগাবাইট। স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ২৪৯৫ মেগাহার্জ যা ওভার ক্লক বা বুস্ট আপ করলে ২৬০০ মেগাহার্জ পর্যন্ত স্পিড আপ করতে সক্ষম। এর মেমোরি ইন্টারফেস ১৯২ বিট। পাওয়ার কনজাম্পশন ২৫০ ওয়াট। সর্বোচ্চ আউটপুট রেজুলেশন কোয়াড এইচডি (২৫৬০বাই১৪৪০)। এএমডি এই গ্রাফিক্স কার্ডের দাম হাঁকিয়েছে ৫৪৯ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৪৮ হাজার টাকা।
এএমডি রেডিওন আরএক্স ৬৬৫০ এক্সটি গ্রাফিক্স কার্ডটির কম্পিউট ইউনিট ৩২ টি। মেমোরি ৮ গিগাবাইট। স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ২৪১০ মেগাহার্জ যা ওভার ক্লক বা বুস্ট আপ করলে ২৬৩৫ মেগাহার্জ পর্যন্ত স্পিড আপ করতে সক্ষম। এর মেমোরি ইন্টারফেস ১২৮ বিট। পাওয়ার কনজাম্পশন ১৮০ ওয়াট। সর্বোচ্চ আউটপুট রেজুলেশন ফুল এইচডি (১৯২০বাই১০৮০)। এএমডি এই গ্রাফিক্স কার্ডের দাম হাঁকিয়েছে ৩৯৯ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৩৫ হাজার টাকা।
এএমডি জানিয়েছে, ঘোষণার দিন থেকেই গ্রাফিক্স কার্ড তিনটি তাদের ব্যবসায়িক অংশীদার ও আন্তর্জাতিক বাজারের পরিবেশকদের কাছে পাওয়া যাচ্ছে।
এখানে দেখা যাচ্ছে আগের তুলনায় নতুন জিপিউর মূল্য ১০০ ডলার করে বেশি। যদিও এএমডি নতুনত্বের চমক দেখাচ্ছে। তবে বিশ্বজোড়া গ্রাফিক্স কার্ডের দুর্মূল্যের এই বাজারে তাদের নতুন মূল্য কিছুটা হতাশাজনকই বটে। এখন দেখা যাক নতুন মূল্য কতটা বাজার ধরতে পারে নতুবা অধিক মূল্যের কারণে মাসুল দিতে হবে এএমডিকে।