প্রভাব বিস্তারে টুইটারের একচ্ছত্র মালিকানা চান ইলন মাস্ক
কিছুদিন আগে প্রায় তিন বিলিয়ন ডলারে টুইটারের ৯ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার কিনে নিয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। তবে এতে তিনি সন্তুষ্ট নন। হতে চান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির একচ্ছত্র অধিপতি। পুরো টুইটার কিনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ইলন মাস্ক কার্যত পুরো টেক জগতেই হৈচৈ পড়ে গেছে।
৯ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার কিনে এখন এককভাবে টুইটারের সবচেয়ে বেশি শেয়ারের মালিক হন ইলন মাস্ক। এবার প্রতিটি শেয়ারের দাম ৫৪ দশমিক দুই শূন্য ডলার ধরে টুইটারকে কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। এতে সব মিলিয়ে মাইক্রো ব্লগিং সাইটটি কিনতে প্রায় ৪১ বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে তার।
ইলন মাস্কের এই ঘোষণা ঝাঁকুনি দিয়েছে সিলিকন ভ্যালি, ওয়াল স্ট্রিটসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের।
কেন টুইটার কিনতে চান তার ব্যাখ্যা দিয়ে মাস্ক বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার সম্ভাবনা রয়েছে টুইটারের। তিনি এই সম্ভাবনাকে উন্মোচন করতে চান। তার মতে, টুইটারের বর্তমান কর্তৃপক্ষের অধীনে মত প্রকাশের স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ হচ্ছে না।
টুইটার কর্তৃপক্ষ অবশ্য তার প্রস্তাবের ব্যাপারে জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করছে। তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ কল্যাণের জন্য বর্তমানে টুইটারের পরিচালনা কর্তৃপক্ষ সতর্কতার সঙ্গে এই প্রস্তাবকে বিবেচনা করছে।
তবে সমালোচকরা বলছেন, টুইটার কিনতে চাওয়ার পেছনে মাস্কের অন্য উদ্দেশ্য আছে। টুইটারকে বলা হয় এলিটদের প্ল্যাটফর্ম। রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সেলিব্রিটি এবং সাংবাদিকদের জন্য টুইটার হলো তাদের চিন্তা ও ধ্যান-ধারণার প্রচার ও প্রসার ঘটানোর একটি জায়গা। অনুসারীদের কাছে নিজের বয়ান পৌঁছে দেওয়ার আদর্শ প্ল্যাটফর্ম।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) ভ্যাংকুভারে এক কনফারেন্সে মাস্ক বলেন, মত প্রকাশের জন্য একটি বিশ্বস্ত পাবলিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলাই তার উদ্দেশ্য। এর জন্য লাভ ক্ষতির পরোয়া করছেন না তিনি।
টুইটারের ব্যবসায়িক মূল্য যতটা না বেশি তার থেকে বেশি ক্ষমতা রয়েছে তার জনমতকে নিয়ন্ত্রণের। মূলত এই বিষয়টিকেই টার্গেট করেছেন মাস্ক।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক বক্তব্য প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে টুইটারের ব্যাপক ব্যবহার। যুক্তরাষ্ট্রের গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মূলধারার সংবাদমাধ্যমের সমর্থন হারিয়ে টুইটারকেই নিজের প্রচার-প্রচারণার মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন ট্রাম্প।
ঠিক সেভাবেই বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ব্যবসায়িক নেতা ও ব্যক্তিত্ব হিসেবে ইলন মাস্কও এরকম একটি মঞ্চ চাইছেন, যেখান থেকে সহজেই তিনি অনুসারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারবেন এবং তাদের নিজের মতো পথে পরিচালিত করতে পারবেন।
এসএ/