রবিবার শুরু ‘নাদালহীন’ ফ্রেঞ্চ ওপেন
ক্লে কোর্টের টুর্নামেন্ট ফ্রেঞ্চ ওপেন। ফরাসি ভাষায় রোলা গারো। লাল মাটির সারফেসের কারণে আবার পরিচিত লাল দুর্গ নামে। যেখানে চলছিল রাফায়েল নাদালের রাজত্ব। ফ্রেঞ্চ ওপেনে ২০০৫ সালে অভিষেক হয় তার এবং টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন।
১৯ বছরে প্রথমবার রোলা গারোতে দেখা যাবে না এই স্প্যানিয়ার্ডের শাসন। চোটের কারণে খেলছেন না ‘কিং অব ক্লে কোর্ট’। নাদালহীন লাল দুর্গে তাই নতুন সুর্যোদয়ের অপেক্ষা। প্রতীক্ষার প্রহর শেষ হবে হবে রবিবার। বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় প্যারিসে পর্দা ওঠবে বছরের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্লামের।
নাদালের লাল দুর্গে কে করবে শিরোপা উল্লাস? বলা হচ্ছে, নোভাক জোকোভিচ ও কার্লোস আলকারাজের নাম। ছেলেদের এককে আপাতত এই দুজনেই ফেবারিট। জোকোভিচের সামনে ইতিহাসের হাতছানি। ফ্রেঞ্চ ওপেনে শিরোপা জিতলে ছেলেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৩ গ্র্যান্ড স্লামের মালিক বনে যাবেন সার্ব কিংবদন্তি। পেছনে ফেলবেন ২২ বারের চ্যাম্পিয়ন নাদালকে।
ফ্রেঞ্চ ওপেনে ১০ বার স্প্যানিয়ার্ড কিংবদন্তির মুখোমুখি হয়েছেন জোকোভিচ। জয় কেবল মাত্র ২টিতে। এবার নাদালের যোগ্য উত্তরসূরী হওয়ার প্রমাণ দেওয়ার পালা আলকারাজ। ২০ বছরের স্প্যানিশের মধ্যে অনেকেই নাদালের ছায়া দেখতে পারছেন। দারুণ পারফরম্যান্সে এমন ভাবনা জন্ম দিয়েছেন আলকারাজ। এ যাত্রায় লাল দুর্গে ছাপ নিজের খেলার ছাপ ফেলার পালা তার। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ইতিমধ্যে জোকোভিচকে পেছনে ফেলেছেন আলকারাজ। দখলে নিয়েছেন শীর্ষস্থান। জোকোভিচ নেমে গেছেন তিনে। ফ্রেঞ্চ ওপেনের ড্রয়ে দুই তারকা পড়েছে একই অর্ধে। এতে করে সেমিফাইনালের আগে দেখা হচ্ছে না তাদের।
শিরোপা ধরে রাখার মিশন সোয়াতেকের
ফ্রেঞ্চ ওপেনে মেয়েদের এককে টানা দুবার শিরোপা জিতেছেন কে? নাম খুঁজে পেতে ফিরে তাকাতে হবে ১৬ বছর পেছনে। তিনি জাস্টিন হেনিন-হার্ডিন। ২০০৬ এবং ২০০৭ রোলা গারোতে চ্যাম্পিয়ন হন সাবেক বেলজিয়ান কন্যা। এরপর আর কেউ টানা দুবার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়তে পারেনি। এই চ্যালেঞ্জটাই নিচ্ছেন ইগা সোয়াতেক। ফ্রেঞ্চ ওপেনের গত আসরের চ্যাম্পিয়ন তিনি।
চ্যালেঞ্জ জয়ের পথে পোলিশ তারকার কঠিন প্রতিপক্ষ হতে পারেন আরিনা সাবালেঙ্কা এবং এলেনা রাইবাকিনা। বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ফাইনাল খেলেছিলেন তারা। রাইবাকিনাকে হারিয়ে শিরোপা হাসি হেসেছিলেন সাবালেঙ্কা। সবশেষ চার গ্র্যান্ড স্লামে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এই তিনজনের একজন।
এমনটি চলতি মৌসুমে ডব্লিউটিএ-১০০০ ফাইনালে লড়েছেন তাদের মধ্যে অন্তত একজন। এবার ক্লে কোর্টের টুর্নামেন্টে শেষ হাসি কে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।
৮৬ বছর পর চীনের প্রতিনিধি
অপেক্ষা ঘুঁচেছে চীনের। ৮৬ বছর পর দেশটির প্রতিনিধি দেখা যাবে ফ্রেঞ্চ ওপেনে। সুদীর্ঘ অপেক্ষা প্রহর শেষ করেছেন উ ইবিং এবং ঝাং ঝিজেন। চীনে সর্বোচ্চ র্যাঙ্কযুক্ত পুরুষ খেলোয়াড় ইবিং লড়বেন একক ইভেন্টে। ঝিজেনও লড়বেন এককে। তৃতীয় চাইনিজ ম্যান হতে পারতেন শাং জুনচেং, কিন্তু বৃহস্পতিবার বাছাইয়ের শেষ রাউন্ডে কাটা পড়েন তিনি। যাইহোক, অবশেষে চীনের প্রতিনিধি পেয়েছে খুশি এটিপির নির্বাহী ভাইস-প্রেসিডেন্ট অ্যালিসন লি।
থাকছেন চ্যাম্পিয়ন মায়ের মেয়ে
মেয়েদের টেনিস ইতিহাসে ৪টি গ্র্যান্ড স্লামের মালিক হানা মান্ডলিকোভা। এরই একটি জিতেছেন ফ্রেঞ্চ ওপেনে। এটা চার দশকেরও পুরনো গল্প। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, মান্ডলিকোভা রোলা গারো জয় করেছিলেন ১৯৮১ সালে। একই মঞ্চে এবার দেখা যাবে চ্যাম্পিয়ন মায়ের মেয়েকে।
মান্ডলিকোভার মেয়ের নাম এলিজাবেথ মান্ডলিক। টেনিস কোর্টে মা প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন স্লোভাকিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া। মেয়ে খেলবেন আমেরিকার পতাকার নিচে। বাছাইয়ে চাপে পড়েছিলেন মান্ডলিক। কিন্তু হাল ছাড়েননি। ব্রাজিলিয়ান প্রতিপক্ষ লউরার বিপক্ষে ২ ঘন্টা ২৯ মিনিটে ম্যাচ জিতে নেন ৬-২, ২-৬, ৭-৫ গেমে।
প্রথমবার কোনো গ্র্যান্ড স্লামের বাছাইয়ের বাধা টপকালেন তিনি। এর আগে ২০২২ ইউএস ওপেনে খেলেছিলেন ওয়াইন্ড-কার্ড নিয়ে এবং ২০২৩ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের খেলার সুযোগ পান ভাগ্যের ছোঁয়ায়।
এমএমএ/