শ্রীলঙ্কার মানুষের জন্য ভালো একটা অর্জন

শ্রীলঙ্কার অবস্থা মোটেই ভালো নয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক মন্দাভাব, খাদ্য সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত দ্বীপরষ্ট্রটি। এরই মাঝে শ্রীলঙ্কা দল আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে এসেছে বাংলাদেশে। তারা যখন বাংলাদেশে আসে তখন রেখে ছিল প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ্রা রাজাপাক্ষে। প্রচন্ড জন বিক্ষেভের মুখে তিনি যখন পদত্যাগ করেন তখন শ্রীলঙ্কা দল বাংলাদেশে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হন রনিল বিক্রমাসিংহে। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে তাই এ নিয়ে লঙ্কান ক্রিকেটারদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। তারা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশে তারা খেলতে এসেছেন। অন্য সব চিন্তা তাদের মাথায় নেই। ভালো খেলে দেশবাসীকে আনন্দ উপহার দিতে চান। সেই কাজটি ক্রিকেটাররা করতে পেরেছেন। দুই টেস্টের সিরিজি তারা জিতেছে ১-০ ব্যবধানে। চট্টগ্রাম টেস্ট ড্র হওয়ার পর আজ তারা ঢাকা টেস্ট জিতেছে ১০ উইকেটে। সিরিজ জেতার পরও তাই এসেছে সেই একই প্রশ্ন। দলের প্রতিনিধি হয়ে কথা বলতে আসা উইকেটকিপার নিরোশান ডিকভেলা জানান এই অর্জন দেশের মানুষের জন্য ভালো অর্জন। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে খেলতে আসার সময় আর সব কিছু পেছনে ফেলে এসেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল ভালো ক্রিকেট খেলা। সিরিজ জেতা। সেটা আমরা করতে পেরেছি। এটি আমার দেশের মানুষের জন্য একটা ভালো অর্জন।’
শ্রীলঙ্কার এই অর্জন কিন্তু হাত ছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়েছিল সাকিব-লিটনের জুটিতে। দিনের শুরুতে মুশফিকুর রহিমের উইকেট হারালেও ষষ্ট উইকেট জুটিতে এই দুই ব্যাটসম্যান জমে গিয়েছিলেন। লাঞ্চ পর্যন্ত তাদের কিছুতেই আউট করা সম্ভব হচ্ছিল না। এ সময় বাংলাদেশের ম্যাচ বাঁচানোর সম্ভবনা ক্রমেই জেগে উঠতে থাকে। কিন্তু লঙ্কানরা এ নিয়ে অস্থির ছিলেন না। তারা খুবই ধীরস্থির ছিলেন লাঞ্চের সময় ড্রেসিং রুমে। নিজেদের মাঝে আলাপ করছিলেন জুটি ভাঙ্গতে পারলেই তারা জয়ের দিকে এগিয়ে যাবেন। তাদের প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তি এক বিন্দুতে মিলতে লাঞ্চের পর খুব বেশি সময় লাগেনি। ১১ নম্বার বলেই তারা উল্লাসে মেতে উঠেন। ম্যাচ সেরা পুরস্কার পাওয়া আশিথা ফার্নান্ডো এই শেসনে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেন লিটনকে নিজের বলে নিজেই ক্যাচ ধরে। আর লিটনের এই আউটকেই নিরোশান ডিকভেলা দেখছেন ম্যাচের ‘টার্নিং’ পয়েন্ট হিসেবে। তিনি বলেন, ‘লাঞ্চের সময় আমরা ড্রেসিং রুমে ছিলাম অনেক ধীরস্থির। বাংলাদেশের উইকেট পাঁচটি থাকলেও আমাদের প্রযোজন ছিল এই জুটির একটি উইকেট। জুটি ভাঙ্গতে পারলেই টেল এন্ডাররা চলে আসবে। যে কারণে আমরা কোন রকমের চাপ নেই। লাঞ্চের পর আশিথা তার নিজের বলে লিটনের চমৎকার একটি ক্যাচ ধরে। যা ছিল ম্যাচের টানিৃং পয়েন্ট।’
এমপি/এএজেড
