প্রথম সেশনে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৬১/৯, মুশফিক ১৭১
লাঞ্চ বিরতির এক মিনিট আগে বাংলাদেশের ইনিংসের নবম উইকেটের পতন হলে আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী আম্পায়াররা আধা ঘণ্টা সময় বাড়িয়ে দেন। এই সময়ের মাঝে যখনই শেষ উইকেটের পতন হবে তখনই লাঞ্চ বিরতি হবে। যদি বর্ধিত আধ ঘন্টা সময়ের মাঝে শেষ উইকেটের পতন না হয় তখন হবে লাঞ্চ বিরতি। কিন্তু এখানে আম্পায়ারদের পরিকল্পনা সফল হয়নি। শেষ ব্যাটসম্যান এবাদতকে নিয়ে মুশফিক গেছেন লাঞ্চ বিরতিতে। জুটিতে যে ১২ রান আসে সেখানে এবাদতের নেই কোনো অবদান। তিনি শুধু ১৬ বল খেলে মুশফিককে সহায়তা করে যাচ্ছেন। মুশফিকের রান ১৭১। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ৩৬১। এই শেসনে বাংলাদেশ সংগ্রহ করেছে ২৭ ওভারে চার উইকেটে ৮৪ রান। এখন দেখার বিষয় এবাদতের সঙ্গ পেয়ে মুশফিক নিজের রানকে কতটা বাড়িয়ে নিতে পারেন।
প্রথম দিন মুশফিক-লিটনের বীরত্ব গাঁথার পর দিন শেষে কোচ রাসেল ডমিঙ্গেহা বলেছিলেন, দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ঘণ্টা তিনি নির্বিঘ্নে পার করে দিতে চান। কিন্তু তার সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি। প্রথম ঘণ্টা নির্বিঘ্নে কাটাতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা। লিটনের উইকেটসহ হারাতে হয় দুই উইকেট। আজকের পতন হওয়া চার উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছেন কাসুন রাজিথা ও আশিতা ফার্নান্ডো।
দিনের শুরুতে মুশফিক-লিটন ছিলেন সাবধানী। কিন্তু তাদের সেই সাবধনতায় চিড় ধরান প্রথম দিনে ঝড় তুলা দুই বোলারের একজন কাসুন রাজিথা। লিটনকে মাত্র ছয় রান যোগ করতে দিয়েই তিনি চতুর্থ শিকার তুলে নেন। লিটনের ব্যাটের কানায় লেগে নিচু হয়ে যাওয়া বলটি দ্বিতীয় স্লিপে দারুণভাবে হাতে জমান কুশাল মেন্ডিস। আগের দিন ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলা লিটন থামেন ১৪১ রানে। সেই সঙ্গে সাঙ্গ হয় তার ও মুশফিকের ষষ্ট উইকেট জুটিতে রেকর্ড গড়া ২৭২ রানের ইনিংস। ৩৮৪ মিনিট পিচে থেকে তারা বল খেলেন ৫১৩টি। লিটন খেলেন ২৪৬ বল। একটি ছক্কার সঙ্গে ছিল ১৬টি চার।
লিটন-মুশফিকের এই রান বাংলাদেশের যেকোনো জুটিতে তৃতীয় সর্বোচ্চ। তাদের উপরে আছে তামিম ও ইমরুল কায়েসের ৩১২ এবং সাকিব ও মুশফিকের ৩৫৯ রানের জুটি।
বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন লম্বা। আটজন। লিটন আউট হওয়ার পর আট নাম্বারে আসেন তিন বছর পর টেস্ট দলে ফেরা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। কিন্তু তার ফেরাটাকে দুর্বিসহ করে তুলেন সেই রাজিথাই। একই ওভারের দুই বল পর মোসাদ্দেককে কোনো রান না করতে দিয়েই উইকেটের পেছনে ডিকাভেলার ক্যাচে পরিণত হন। মোসাদ্দেককে যন্ত্রণার আগুনে পুড়িয়ে রাজিথা উল্লাসে মেতে উঠেন ইনিংসে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট নিয়ে।
মোসাদ্দেক মুশফিককে সঙ্গ দিতে না পারলেও তাইজুল এসে বেশ ভালোই সঙ্গ দেন। তাইজুলের সঙ্গ পেয়ে মুশফিক নিজের রানকে দেড়শ অতিক্রম করান। একই সঙ্গে বাংলাদেশেরও তিনশ রান অতিক্রম করে। জুটিতে ৪৯ রান আসার পর তাইজুলকে ফিরিয়ে দেন প্রথম দিনের ঝড় তুলা দুই বোলারের অপরজন আশিতা ফার্নান্ডো। তার বাউন্সার থেকে বাঁচতে গিয়ে গ্লাভসে লেগে বল গিয়ে জমা পড়ে উইকেটের পেছনে ডিকাভেলার হাতে। তাইজুল ১৫ রান করলেও বল খেলেন ৩৭টি। পরের ওভারেও এবাদত আউট হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। ফলে ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়া ব্যাটসম্যানের সংখ্যা আর বাড়েনি।
এবাদত পরে একবার রান আউটের হাত থেকেও রক্ষা পান। এরপর চলে তার প্রতিরোধ। যে প্রতিরোধে আম্পায়াররা আধা ঘণ্টা সময় বাড়িয়ে দিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
এসআইএইচ