মুশফিক-লিটন জুটির যত কীর্তি
টেস্ট ক্রিকেটে এমনিতেই দর্শক কম হয়ে থাকে। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ঢাকা টেস্টের আবার প্রথম দিন। খেলা শুরু হয়েছে মাত্র। দর্শকরা তখন এক দুই জন করে আসতে শুরু করেছেন। এই টেস্টের প্রথম সেশন আবার দেখবেন আইসিসি চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলে। কিন্তু স্কোর বোর্ডের এ কী হাল? পিচে চলছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়া। দেখে মনে হবে ব্যাটসম্যানরা প্রেসিডেন্ট লাউঞ্জে বসে খেলা দেখতে থাকা আইসিসি চেয়ারম্যানকে সম্মান জানাতে যাচ্ছে।
কিন্তু তখনোতো তিনি মিরপুরে এসে পৌঁছাননি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। আসলে লঙ্কান দুই পেসার কাসুন রাজিথা ও আশতা ফার্নান্ডোর গোলায় পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা বানের পানির মতো ভেসে গেছেন। স্বাগতিকদের এ রকম অবস্থা যদি আইসিসি চেয়ারম্যান এসে দেখেন, তাহলে তার সঙ্গে থাকা বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনসহ বিসিবির পরিচালকদের জন্য কী বিব্রতকর পরিস্থিতিই না তৈরি হবে?
অবশ্য এ রকম অবস্থার মাঝেই আইসিসি চেয়ারম্যান এসে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে এসে পৌঁছান। এতে তিনি তখন দেখছেন মুশফিক ও লিটনের সংগ্রাম। যদিও কিছুক্ষণ পর তিনি মাঠ ছেড়ে চলে যান সিলেটের উদ্দেশে। কিন্তু যাওয়ার আগে দেখে গেছেন মুশফিক-লিটনের লড়াই। পরে হয়তো বিসিবি সভাপতির কাছ থেকে অবশ্যই জেনে যাবেন মুশফিক-লিটনের অসাধারন লড়াইয়ের গল্প। বীরত্ব গাঁথা গল্প। যে গল্পে জমা হয়েছে অনেক কীর্তি। এক নজরে মুশফিক-লিটন জুটির যত কীর্তি:
মুশফিক-লিটনের অন্যরকম বিশ্ব রেকর্ড
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে মুশফিক-লিটন জুটি অন্য রকম এক রেকর্ড গড়েছেন। তাদের এই রেকর্ড হলো ২৪ বা তার কমে রানে পাঁচ উইকেট পতনের পর জুটিতে রেকর্ড রান সংগ্রহ। ঢাকা টেস্টের আগে কোনো দল ২৪ বা তর কম রানে পাঁচ উইকেট হারানোর পর সর্বোচ্চ রানের জুটি ছিল ৮৬। ১৯৫৯ সালে পাকিস্তানের ওয়ালিস ও সুজাউদ্দিন এই রান করেছিলেন। ভেন্যু ছিল ঢাকা (আজকের বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম) স্টেডিয়াম। এতদিন এই রানই ছিল সর্বোচ্চ।
সোমবার (২৩ মে) মিরপুরে মুশফিক-লিটন তা অতিক্রম করে সেই রান নিয়ে গেছেন ২৫৩ রানে। দ্বিতীয় দিন এই রান আরও বাড়বে।
জুটিতে হাজার রান
বাংলাদেশের অষ্টম জুটি হিসেবে হাজার রান করার গৌরব অর্জন করেছেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। ঢাকা টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন তারা ৮৮২ রানর নিয়ে। বাকি ছিল ১১৮ রানের। কিন্তু লাঞ্চের আগেই তারা তা ছুঁয়ে ফেলেন। এই রান করতে তারা খেলেন ১৬ ইনিংস। লাঞ্চ পর্যন্ত জুটিতে তাদের রান ছিল ১২৯। পরে তারা সেই রান নিয়ে যান। তাদের জুটিতে আছে চারটি শতরান। তাদের বেশি পাঁচটি শতরানের জুটি আছে হাবিবুল বাশার ও জাভেদ ওমর বেলিম গুল্লুর জুটিতে। তারা খেলেছিলেন মুশফিক-লিটনের ডাবল ৩২ ইনিংস।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান
দিনটি ছিল যেন লিটন আর মুশফিকের। দুই জনেই সেঞ্চুরি করেছেন। গড়েছেন যৌথভাবে অনেক কীর্তি। যেখানে আরেকটি কীর্তি ছিল ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান । ২৫৩ রান যোগ করে তারা দুই জনেই আছেন অপরাজিত। আগের সর্বোচ্চ রান ছিল ১৯১। এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০০৭ সালে কলম্বোতে করেছিলেন। সেখানেও ছিলেন মুশফিক। অপরজন ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল
এমপি/এমএমএ/