ড্রাইভিং আসনে বাংলাদেশ
শ্রীলঙ্কাকে যেমন বাংলাদেশ নিজেদের পরিকল্পনা মতো চারশ রানের (৩৯৭) মাঝে আটকে রাখতে পেরেছিল, তেমনি শ্রীলঙ্কাও বাংলাদেশকে খুব বেশি রানের লিড নিতে দেয়নি। বড় লিডের সম্ভাবনা তৈরি হলেও বোলারদের কল্যাণে দারুণভাবে ফিরে এসে লঙ্কানরা বাংলাদেশকে মাত্র ৬৮ রানের লিড দিয়ে অলআউট করে ৪৬৫ রানে। ব্যাটিং সহায়াক উইকেটে দুই দলের রান সংগহের গতি ছিল খুবই মন্থর। কিন্তু লঙ্কানদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৯ রানে দুই উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের ড্রাইভিং আসনে বসে পড়েছে বাংলাদেশ। এখনো তারা পিছিয়ে আছে ২৯ রানে।
আজ চতুর্থ দিনের শেষ শেসন বাংলাদেশকে অলআউট করার পর লঙ্কানরা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে খুবই সাবধানী ব্যাটিং শুরু করেছিল। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। দিন শেষে করেছে দুই উইকেট হারিয়ে ৩৯ রানে। ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটের শিকার হওয়া ওপেনার ওশাতা ফার্নান্ডো ব্যক্তিগত ১৯ ও দলীয় ৩৬ রানে ফিরে যাওয়ার পর নাইটওয়াচম্যান হিসেবে এম্বুলদেনিয়কে পাাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। তাইজুলের বলে বোল্ড হয়ে ২ রানে ফিরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাঙ্গ হয় চতুর্থ দিনের খেলা। হাতে আট উইকেট নিয়ে এখনো তারা পিছিয়ে আছে ২৯ রানে। নতুন ব্যাটসম্যানকে নিয়ে করুনারত্নে ১৮ রানে ব্যাট করতে নামবেন শেষ দিন।
শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস ধসিয়ে দেয়া অফ স্পিনার নাঈমকে দিয়ে আক্রমণ শুরু করান অধিনায়ক মুমিনুল। এক প্রান্ত থেকে তিনি টানা বোলিং করে গেছেন। খালেদকে দিয়ে আরেক প্রান্তে বোলিংয়ের সূচনা করানো হলেও মাত্র এক ওভার পর সেই প্রান্ত থেকেও স্পিন আক্রমণ শুরু হয় সাকিবকে দিয়ে। সাকিব ছয় ওভার বোলিং করার পর বদলি হিসেবে আক্রমণে নিয়ে আসা হয় তাইজুলকে। আর এতেই কাজ হয় বাংলাদেশের। দুইটি উইকেটেই অবদান রাখেন তাইজুল। একটি রান আউট করে, অপরটি উইকেটচ তুলে নিয়ে। রান আউট ছিল তাইজুলের অসাধারণ কৃতিত্ব। দিমুথ করুনারত্নে মিড উইকেটে খেলে কঠিন একটি সিঙ্গেল রান নিতে চেয়েছিলেন। যে কারণে নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে ওশাদা ফার্নান্ডো রানের জন্য দৌড় শুরু করেন। কিন্ত্র প্রায় মাঝামাঝি যাওয়ার পর করুনারত্নে তাকে ফেরত পাঠান। তবে ওশাদার পক্ষে আর ফিরে আসা সম্ভব হয়নি।
মিড উইকেট থেকে তাইজুলের সরাসরি থ্রোতে স্ট্যাম্পে আঘাত হানলে ফিরে যেতে হয় ওশাদাকে (১৯)। তিনি আউট হওয়ার পর নাইটওয়াচম্যান হিসেবে এম্বুলদেনিয়াকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এসেই বিপদে পড়নে তিনি। শুরতে বেশ সতর্কতার সঙ্গে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ সামলালেও সাকিবের পরিবর্তে বল হাতে তুলে নেয়ার পরই তাইজুলের বলে তিনি ভুগতে থাকেন। তাইজুলের চতুর্থ বলেই তিনি আউট হয়েছিলেন। দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। কিন্তু রক্ষা পান রিভিউ নিয়ে। রিপ্লেতে দেখা যায় বল তার ব্যাটে লাগেনি। প্যাডে লেগেছিল। আম্পায়ার পরে এলবিডব্লিউ চেক করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। তাইজুলের পরের ওভারের প্রথম বলেই তিনি বোল্ড হয়ে যান।
শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস বাংলাদেশের স্পিনাররা ধসিয়ে দেয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও উইকেট পাওয়া শুরু হয়েছে স্পিনার দিয়েই। যদিও লঙ্কানরা আবার বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাবু করেছিলেন পেসার দিয়ে। কিন্তু চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে বাংলাদেশেল স্পিনাররাই বল ঘুরিয়েছেন। আগামীকাল পঞ্চম দিনও তাদের উপরই ভলসা রাখবেন অধিনায়ক মুমিনুল। তিন স্পিনারের বিপক্ষে লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা নিজেদের রক্ষা করতে পারেন, না আত্মাহুতি দেন,তাই দেখার।
এমপি/এএজেড