নিজস্ব প্রতিবেদক
৬৮ রানের লিডে বাংলাদেশ অলআউট ৪৬৫ রানে
৬৮ রানের লিড নিয়ে চা বিরতির পর ১৫.১ ওভার খেলে বাংলাদেশ দল প্রথম ইনিংসে ৪৬৫ রানে অলআউট হয়েছে। শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে করেছিল ৩৯৭ রান। শক্ত অবস্থানের পরও বাংলাদেশের শেষ সাত উইকেট পড়ে ৮০ রানে। শেষ পাঁচ উইকেট পড়ে ৪১ রানে। শেষ তিন উইচেকট পড়ে ১৫ রানে। শেষ দুই উইকেট পড়ে ৪৬৫ রানেই। অবশ্য বাংলাদেশ, অলআউট হয়েছে বলা যাবে না। কারণ শেষ ব্যাটসম্যান শরিফুল ইসলাম আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন ৩ রানে।
উইকেটে মড়ক লাগেনি। দুইটি সেঞ্চুরির সঙ্গে দুইটি হাফ সেঞ্চুরি। চতুর্থ দিনের প্রথম শেসনে কোনো উইকেটও হারাতে হয়নি। এরপরও বাংলাদেশ দল দ্রুত রান সংগ্রহ করতে পারেনি। ৪৬৫ রান করতে ওভার খেলেছে ১৭০.১টি। ওভার প্রতি রান সংগ্রহ হয়েছে ২.৭৩ করে। শ্রীলঙ্কার ওভার প্রতি রান সংগ্রহ হয়েছিল ২.৫৯ করে। ব্যাটিং সহায়াক পিচে দুই দলের এমন মন্থর রান সংগ্রহ ছিল অবাক করার মতো।
শ্রীলঙ্কাকে নিজেদের পরিকল্পনা মতো চারশ রানের নিচে আটকে রাখার পর বাংলাদেশের সূচনাটা ছিল দারুণ। উদ্বোধনী জুটিতে তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয় ১৬২ রানের চমৎকার ভীত গড়ে দেন। সেখানে দাঁড়িয়ে পরে লিটন দাস ৮৯, মুশফিকুর রহিম ১০৫ রানের ইনিংস খেলেন। তবে উইকেটের মড়ক না লাগাতে বাংলাদেশের লিড বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু দ্রুত রান সংগ্রহের দিকে কেউই মনযোগী হতে পারেননি। রান সংগ্রহের গতি ছিল খুবই মন্থর। প্রথম শেসনে ২৬ ওভার রান যোগ হয় ৬৭। দ্বিতীয় সেশনে ২১ ওভারে মাত্র ৫১। চা বিরতির পর ১৫.১ ওভার খেলে মাত্র ২৯ রান।
শ্রীলঙ্কার ইনিংস ধসিয়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। নাঈম হাসান একাই নিয়েচিলেন ছয়টি। সাকিব আল হাসান তিনটি ও তাইজুল ইসলাম একটি উইকেট নিয়েছিলে। পেসাররা কোনো উইকেটই নিতে পারেননি। কিন্তু বাংলাদেশের ইনিংসে আবার দাপট দেখাতে পারেননি লঙ্কান স্পিনাররা।
সেখানে দাপট দেখিয়েছেন পেসাররা। বিশ্ব ফার্নান্ডোর কনকাশন সাব হিসেবে মাঠে নামা কাসুন রাজিথা ৬০ রানে নেন চার উইকেট। তিন উইকেট নেন আশিতা ফার্নান্ডো। লঙ্কানদের স্পিনার এম্বুলদেনিয়া ও ধনাঞ্জায়া নেন একটি করে উইকেট। শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ১৫৩ ওভারের মাঝে বাংলাদেশের দুই পেসার শরিফুল ও খালেদ হাত ঘুরিয়েছেন ৩৬ ওভার। সেখানে বাংলাদেশের ১৭০.১ ওভারের মাঝে লঙ্কানর পেসাররা বোলিং করেন ৫৮.১ ওভার।
আজকের প্রথম শেসনে বাংলাদেশ দল কোনো উইকেট না হারলেও দ্বিতীয় শেসনের প্রথম দুই বলেই দুই উইকেট হারিয়ে ধ্রুত রান করার পথ হারিয়ে ফেলে। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগানো লিটন দাস মধ্যাহ্ন বিরতির পর কোনো রানই যোগ না করে বিলাসি শট খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন রাজিথার বলে বিকাভেলার হাতে। অফ স্টাম্পের বাইরের এই বলটি ইচ্ছে করলেই লিটন ছেড়ে দিতে পারতেন। না ছেড়ে দেয়ার কারণে নিশ্চিত সুযোগ হারান ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি করা থেকে। তিনি আউট হওয়ার পর আগের দিন মাসলপুল হওয়াতে মাঠ ছেড়ে যাওয়া তামিম ইকবাল খেলতে নেমে প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে যান। তিনিও আগের দিনের রানের সঙ্গে আর কোনো রান যোগ করেেত পারেননি। সাকিব এসে একবকার জীবন পেয়ে ফিরে যান ২৬ রানে। এর মাঝে মুশফিকুর রহিম ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি তুলে নেন ২৭০ বলে মাত্র চারটি চারে। এ সময় সেঞ্চুরি করার পথে তিনি অসম্ভব রকম ধৈর্যের পরিচয় দেন। সেঞ্চুরি করার পর যখন দ্রুত রান করার প্রয়োজন, তখনই তিনি আউট হয়ে যান। এম্বুলদেনিয়ার লেগ স্ট্যাম্পের বল সুইপ করতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হন ১০৫ রানে। তিনি আউট হওয়ার পর আর বেশি সময় টিকতে পারেনি দল। তবে এভাবে শেষ হওয়ার কারণ শরিফুল। ইনিংসের ১৬৩.৩ ওভারের সময় কাসুন রাজিথার একটি বল তার হাতে লেগেছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তিনি ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাইজুল আউট হওয়ার পর শরিফুল মাঠ রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছেড়ে যান ব্যথা তীব্র হওয়াতে।
এমপি/এমএমএ/