প্রথম সেশনের শেষ লগনে নাঈমের জোড়া আঘাত
সকাল থেকেই বাংলাদেশের বোলাররা বোলিং করে যাচ্ছেন। কিন্তু আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরিয়ান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও দিনেশ চান্দিমাল তাদের আউট করা যাচ্ছেই না। রান করেই যাচ্ছিলেন। জুটিতে একশ রান যোগ করার পর দেড়শ রানও হওয়ার পথে। লাঞ্চের সময়ও ঘনিয়ে আসছে। আরেকটি হতাশার সেশনের অপেক্ষায় বাংলাদেশ শিবির। ঠিক তখনই আলোর ঝর্নাধারা হয়ে আসেন স্পিনার নাঈম। প্রথম দিন প্রথম সেশনে তার কল্যাণেই বাংলাদেশ পেয়েছিল দুইটি উইকেট। আজ দ্বিতীয় দিনও তার কল্যাণে হাসিমুখে বাংলাদেশ দল যায় লাঞ্চে। চার বলের ব্যবধানে তিনি তুলে নেন দুই উইকেট। প্রথমে ফিরিয়ে দেন দিনেশ চান্দিমালকে ৬৬ রানে। পরে নিরোশান ডিকাভে লাকে কোনো রান না করতে দিয়েই। ম্যাথিউস ১৪৭ ও রমেশ মেন্ডিস ১ রানে অপরাজিত। এই সেশনে লঙ্কানরা ২৬ ওভার খেলে যোগ করে ৬৯ রান।
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম টেস্টের পিচ ব্যাটসম্যানদের হয়ে বেশি করে কথা বলতে শুরু করবে- এটা পূর্ব অনুমিতই। সেই ধারনাকেই প্রমাণ করা কাজটি করে যেতে থাকেন প্রথম দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ম্যাথিউস ও চান্দিমাল। না পেস, না স্পিন কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছিল না। তবে একবার সুযোগ এসেছিল। কিন্তু বাংলদেশের ফিল্ডারদের অসচেতনতায় হাত ফসকে বের হয়ে যায়।
দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু হয়েছে মাত্র। চতুর্থ ওভার করছেন পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ। ব্যাটসম্যান ম্যাথিউস তখন ১১৯ রানে। তার ব্যাটের কানায় লেগে বল গিয়ে জমা পড়ে উইকেটকিপার লিটন দাসের গ্লাভসে। বল যে ব্যাটের কানায় লেগেছে তা বুঝতে পারেননি বোলার কিংবা উইকেট কিপার কেউই। এমন কি অন্য কেউ। ফলে আবেদন উঠেনি। আম্পায়ারও সাড়া দেননি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বল ব্যাটের কানায় লেগেছিল। এই উইকেট পেলে হয়ত প্রথম সেশন অন্য রকমও হতে পারত। ম্যাথিউসের আগে প্রথম দিন একবার জীবন পেয়েছিলেন ৬৯ রানে তাইজুলের বলে স্লিপে মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে। নতুন করে জীবন পেয়ে ম্যাথিউস ছুটেন রানের দিকে। অপরপ্রান্তে দিনেশ চান্দিমালও ১২৮ বলে দুই ছক্কা ও এক চারে তুলে নেন ক্যারিয়ারের একুশতম হাফ সেঞ্চুরি। আবার জুটিতে তাদের শতরানও চলে আসে। ইনিংসে এটিই ছিল প্রথম শথরানের জুটি। শুধু শতরান নয়, এরপর তারা আরো এগুতে থাকেন। অধিনায়ক মুমিনুল উইকেটের মুখ দেখতে এ দিন সাকিবকে দ্রুতই আক্রমণে নিয়ে আসেন। কিন্তু সাফল্য আর আসছিল না। যখন সবাই মনে মনে উইকটে শূন্য একটি সেশনের হতাশার অপেক্ষায়, যেমনটি হয়েছিল প্রথম দিন দ্বিতীয় সেশনে, ঠিক তখনই আলোর ঝর্নাধারা হয়ে আসেন অফ স্পিনার নাঈম হাসান। লাঞ্চের তিন ওভার আগে তার মাধ্যমেই বাংলাদেশের শিবিরে হাসির ঝিলিক দেখা যায়।
প্রথম দিন মুমিনুল সাকিবকে আক্রমণে এনেছিলেন ৩৬ ওভার পর। আজ নাঈমকে আনেন একইভাবে অনেক পরে। নাঈম আক্রমণে আসার পর নিজের তৃতীয় ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন। প্রথমে তিনি দিনেশ চান্দিমালকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে লাইন মিস করেন চান্দিমাল। নাঈমের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে ইতি ঘটে চান্দিমালের ৬৬ রানের ইনিংসের। ম্যাথিউসের সঙ্গে সাঙ্গ হয় তার ১৩৬ রানের জুটি। নতুন ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকাভেলাকেও তিনি বোকা বানান বোল্ড করে।
এমপি/আরএ/