বৃথা গেল রুমানার ম্যাচ সেরা নৈপুণ্য
ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠলেন রুমানা আহমেদ। জিতে নিলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। কিন্তু এ পুরস্কার জিতা তার জন্য খুব একটা আনন্দের বার্তা বয়ে আনতে পারেনি। কারণ তার এমন নৈপুণ্যও যে তার দল বার্মি আর্মিকে ফাইনালে তুলতে পারেনি। দ্বিতীয় সেমিতে তারা ৪ উইকেটে হেরে গেছে টর্নেডোজ ওমেন দলের কাছে। টর্নেডোজের অবস্থান ছিল তিনে। রুমানারা দুইয়ে। আগে ব্যাট করে রুমানার দল ৬ উইকেটে করে ১৪১ রান। সেই রান টর্নেডোজের ব্যাটাররা অতিক্রম করে দুই বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে ১৪২ রান করে। ফেয়ারব্রেক আমন্ত্রণমূলক ফ্রাঞ্চাইজি আসরে আজ জাহানারার ফ্যালকনের বিপক্ষে শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে টর্নেডোজ। প্রথম সেমিতে জাহানারার দল ২৫ রানে হারিয়েছিল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা স্প্রিট ওমেন দলকে। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়।
আসরে শুরুতে রুমানরা তেমন একটা আলো ছড়াতে পারেননি। বোলিং করার সুযোগ পেলেও ব্যাটিং করার সুযোগই পাননি। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি নিজেকে মেলে ধরতে থাকেন। দ্বিতীয় সেমিতে ছিল তার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। ব্যাট হাতে মারমুখী ইনিংস খেলে মাত্র ১৫ বলে দুই ছক্কা ও চার বাউন্ডারিতে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। পরে বল হাতে চার ওভারে ২৩ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন। ডট বল দিয়েছিলেন নয়টি। কিন্তু তার এমন চমকপ্রদ নৈপুণ্য দুবাইয়ে রাতের আধারে মিলিয়ে গেছে?
দুবাই স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ভীষণ বিপদে পড়ে রুমানার দল। মাত্র ৩০ রানে হারায় তিন উইকেট। এরপর অধিনায়ক হেথার নাইটের ২৫ বলে ৩১, শারমিন ক্যাম্পবেলের ৩০ বলে ৩১, ফাতিমা সানার ২১ বলে ২১ রান দলের বিপদ এড়ালেও রান সংগ্রহে ভাটার টান ছিল। ১৫ ওভারে পাঁচ উইকেটে ৮৬। ওভার প্রতি ছয়েরও নিচে। রুমানা ক্রিজে আসার পর ২৯ বলের মাঝে ১৫ বল খেলে আগ্রাসী ব্যাটিং করে দলের রানকে লড়াকু পর্যায়ে নিয়ে যান। ফাতিমা সানাকে নিয়ে তিনি চার দশমিক এক ওভারে ৪৬ রান যোগ করেন।
রুমানা প্রথম সাত বল খেলে নয় রান করেন। যেখানে একটি মাত্র বাউন্ডারি ছিল। পরের আট বলে তিনি সংগ্রহ করেন ৩৩ রান। এর মাঝে ডায়না বেগের এক ওভারে পরপর চার বলে তিনি তিনটি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারিতে ২২ রান তুলে নেন। শেষ ওভারে রান আসে অনেক কম ১০। রুমানা শেষ বলে হাঁকান ছক্কা।
ফাইনালে উঠার মিশনে স্প্রিট ওমেনের দুই ওপেনার সুফিয় ডিভাইন (৩৭) ও স্টেরি ক্যালিসই (৩৪) দলের জয়ের ভিত গড়ে দেন নয় দশমিক তিন ওভারে ৭৩ রান সংগ্রহ করে। পরে সুনে লুসের ২৫, আলিয়া রিয়াজের ১৫ ও অধিনায়ক স্টিফেনি টেলরের ১২ রান দলকে দুই বল হাতে রেখেই চার উইকেটে জয় এনে দেয়।
দুই ওপেনারের শক্ত ভিতের কারণে টর্নেডোজের জয় পেতে তেমন একটা বেগ পেতে না হলেও ম্যাচে দুধর্ষ হয়ে উঠা রুমানার বল খেলতে তাদের হিমশিম খেতে হয়েছে। ইনিংসের সপ্তম, এগার, পনর ও উনিশতম ওভার করেন রুমানা। প্রথম ওভারে তিনটি ডট বল দিয়ে একটি বাউন্ডারিতে ছয় রান দেন। দ্বিতীয় ওভারে ডট বল দেন দুইটি। এ ওভারেও একটি বাউন্ডারি হজম করতে হয়। রান দেন আট। তৃতীয় ওভারে কোনো বাউন্ডারি হজম করতে হয়নি। চার রান দিয়ে তুলে নেন এক উইকেট। ডট বল ছিল একটি। এরপর শেষ ওভারে তিনি কোনো ডট বল দিতে পারেননি। কিন্তু পাঁচ রান দিয়ে উইকেট তুলে নেন দুইটি।
দল ফাইনালে যেতে না পারলেও ছয় ম্যাচ খেলে সাত উইকেট নিয়ে রুমানা চতুর্থ সেরা। এ ছাড়া ব্যাট হাতে তিন ইনিংস ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে করেছেন ৬২ রান।
এমপি/এসএন