আমার পারফরম্যান্স কোনো ম্যাটার করে না: মুমিনুল
বাংলাদেশের একমাত্র পূর্ণ টেস্ট ক্রিকেটার হলেন অধিনায়ক মুমিনুল। টেস্ট ক্রিকেটে টানা ১১ ম্যাচে তার পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস ছিল। তার ইনিংসগুলো ছিল ১৮১ ও ২২*, ৪৭ ও ১২৬*, ৮ ও ৫০, ১৩ ও ১০০*, ৫১ ও ১২, ৩ ও ৫৬, ৫৩ ও ০, ৩৫ ও ৫৪, ৪৮ ও ১৩১*, ৮০ ও ২১, ১৩ ও ৬৮। এই ইনিংসগুলো তাকে নিয়ে গেছে ইতিহাসের পাতায়। এক সময় তার রেকর্ডও ছিল বেশ ভালো। পঞ্চাশের উপর। কিন্তু সেই মুমিনুলের বর্তমান সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না। সর্বশেষ খেলা ছয় টেস্টে তার মাত্র একটি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস।
মাউন্ট মঙ্গানুই ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ে ৮০ রান। এরপর তার সর্বোচ্চ রান হলো ৩৭। তারপর অপরাজিত ১৩। বাকি সব ইনিংস এক অংকের ঘরে। এর মাঝে শূণ্য রানে আউট হয়েছেন তিনবার। তবে এটাকে তিনি ‘ব্যাড-প্যাড’ বলে মনে করেন না। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না আমি ব্যাড প্যাচের মধ্যে আছি। যদি বিশ্বাস করি তাহলে এটা থেকে বের হতে পারব না। আমার কাছে মনে হয় আমরা যেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি, দলের ওপর অনেক আত্মবিশ্বাসী। সবাই সবার সেরা পারফরম্যান্স দেখাতে পারবে ইনশাআল্লাহ্।’
তিনি ভালো করলেই যে দল ভলো করবে এটাও মনে করেন না মুমিনুল। তিনি বলেন, ‘আমি ভালো খেললে জয়ের সম্ভাবনা বাড়বে এটা আমার কাছে কোনোভাবেই মনে হয় না। তাহলে অন্য খেলোয়াড়রা কী? শুধু আমার পারফরম্যান্স কোনো ম্যাটার করে না।’
বর্তমান সময়ট মুমিনুলের ভলো না গেলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আবার তার রেকর্ড অনেক ভালো। ১৭ ইনিংসে তার ৮৮৪। সেঞ্চুরি চারটি। এর মাঝে আছে আবার এক টেস্টের উভয় ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরিও। তবে স্পষ্টবাদী মুমিনুল এই সাফল্য তার ভালো খেলার ক্ষেত্রে কোনো রকম অনুপ্রেরণা জোগাবে বলেও মনে করেন না। তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার সঙ্গে খেললে ভালো খেলব এমন কোনো প্রেরণা কাজ করে না। তাদের বিপক্ষে জোড়া সেঞ্চুরিই হয়ত সবচেয়ে স্মরণীয়। তখন খারাপ সময় যাচ্ছিল, চাপে ছিলাম।’
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ বিকেলে দলের ক্রান্তিকালে মুশিফিুকরে আত্নাহুতি দেওয়া রিভার্স সুইপ শট খেলা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু মুমিনুল মুশফিকের এই শর্ট খেলার পক্ষেই নিজের অভিব্যক্তি দিয়েছিলেন। কিন্তু কোচ রাসেল ডমিঙ্গো আবার মুশফিকের এই শট খেলাকে আবার সমর্থন করেননি। বিষয়টি মুশফিকের নজরে আনা হলে তিনি বলেন, ‘এর আগে আমি সমর্থন দিয়ে কথা বলিনি। আমি বলেছিলাম, পরিস্থিতি বুঝে খেলা। উনি যদি মনে করে ঐ পরিস্থিতিতে খেলা যায়। আমি যদি মনে করি এই পরিস্থিতিতে খেলা ঠিক হয়নি, এটা উনিও বুঝতে পারবে। আপনারা এটা নিয়ে খুব বেশি কথা বলছেন। রিভার্স সুইপ ক্রিকেটেরই একটা শট। এই শট তো উনি খেলতেই পারেন। উনার গেম প্ল্যানে যদি থাকে এটা খেলবেই। এমন না যে এটা খেলে রান করেনি বা খুব অসফল। উনি এটা করেই রান করে। আমার মনে হয় উনাকে সাপোর্ট করা উচিৎ। আমি উনাকে সাপোর্ট করি এটা নিয়ে।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে জয়ের অন্যতম কান্ডারি ছিলের পেসার তাসকিন আহমেদ ও অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ। তাসকিন দুই ইনিংসে নিয়েছিলেন চার ( এক ও তিন) উইকেট। মিরাজ তিন উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৪৭ রান। ইনজুরির কারণে দুই ক্রিকেটারই নেই। মুমিনুল দুই জনকেই মিস করবেন জানিয়ে একই সঙ্গে মনে করেন এটি অন্যদের জন্য নিজেদের প্রমাণ করার একটা সুযোগও।
তিনি বলেন, ‘নিউ জিল্যান্ডে জয়ে তাদের (তাসকিন-মিরাজ) অনেক অবদান ছিল। তাদের দুজনকে মিস করব। একজন ভালো ব্যাটিংও করে, অলরাউন্ডার। তবে তাদের জায়গায় যারা খেলবে তাদের জন্য ভালো সুযোগ। ওরা এমন পারফর্ম করছিল যে অন্য কাউকে সুযোগ দিচ্ছিল না। ওদের জায়গায় যারা খেলবে তারা ঐ বার্তা দিতে চাইবে যে আমরাও ভালো অবস্থানে আছি। তাদের ওপর বিশ্বাস আছে। অনেক সময় সাকিব ভাইও ছিল না, যে ছিল তার জায়গায় বিশ্বাস ছিল। এই বিশ্বাস আমি সবসময় দেখাবো। বিশ্বাস না থাকলেও অধিনায়ক হিসেবে সেটা দেখাতে পারব না। যারা আছে, তাদের প্রতি সাপোর্ট আছে।’
এদিকে মিরাজের পরিবর্তে দলে ডাক পাওযা অফ স্পিনার নাঈম হাসানের চট্টগ্রাম টেস্টে খেলার সম্ভাবনা নিয়ে মুমিনুল বলেন, ‘ও খেলবে কি না কাল (রবিবার) বোঝা যাবে। যদি খেলে ও ওর ভূমিকা জানে।’
এমপি/এমএমএ/