লাঞ্চের আগে উইকেটের দেখা পায়নি বাংলাদেশ
প্রভাত দেখে নাকি দিনের আভাস পাওয়া যায়। যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে ডারবানে বাংলাদেশের জন্য দিনটি ভালো যাওয়ার কথা নয়, এবং তাই হতে চলেছে। দিনের প্রথম বলটিই তাসকিন করেছিলেন ফুলটস। ব্যাটসম্যান ছিলেন এলগার। এমন বলের যে রকম সাজা হওয়ার কথা, তেমনটিই হয়েছে। সোজা বাউন্ডারি পার। সেই শুরু।
পরে আর তাসকিন যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি, তেমনি অন্য দুই পেসার এবাদত ও খালেদও। এমনকি পেসারদের ব্যর্থতায় দলপতি মুমিনুল দ্রুতই স্পিনার মিরাজকেও আক্রমণে নিয়ে আসেন। এখানে সফল হতে পারতো বাংলাদেশ। লাঞ্চের আগের ওভারে মিরাজের বলে এরউই ক্যাচ দিয়েছিলেন উইকেটের পেছনে। লিটন দাস গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি। তার রান তখন ছিল ৩২। এই শেষ। লাঞ্চের আগে স্বাগতিক দলের ওপেনাররা আর কোনো সুযোগই দেননি বাংলাদেশের বোলারদের। ফলে যা হবার তাই হয়েছে। মজবুত শুরু করেছে স্বাগতিকরা। লাঞ্চের আগে কোনো উইকেটই পড়তে দেয়নি। মনের সুখে দুই ওপেনার লাঞ্চ করতে গিয়েছেন দলের ভান্ডারে ২৫ ওভারে ৯৫ রান জমা করে। লাঞ্চের পর আবার ব্যাট করতে নামবেন এলগার ৬০ ও এরউই ৩২ রানে।
তাসকিনের প্রথম বলটি বাজে হওয়া ছাড়ও টস জেতা ছাড়া দিনটি আসলে বাংলাদেশের জন্য ভালোভাবে শুরু হয়নি। দীর্ঘ ১১ মাস পর যে তামিম ইকবাল আবার সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ফেরার নিশ্চিত ছিল, সেখানে ঘটে ছন্দপতন। হঠাৎ করে প্রচণ্ড রকমের পেটের পীড়ার কারণে তার আর খেলাই হয়নি। এমনকি হোটেল থেকে মাঠেই আসা সম্ভব হয়নি। হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা বাংলাদেশ দলের জন্য বিরাট এক ধাক্কা। এমন নয় যে তামিম ইকবাল ছাড়া বাংলাদেশ খেলেনি। তাকে ছাড়াই গত পাঁচ টেস্ট খেলেছে। জয়ও পেয়েছে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে মাউন্ট মঙ্গানইু টেস্টে। কিন্তু এখানে নিশ্চিত খেলার কথা, সেখানে না খেলতে পারাটা বিরাট ধাক্কা। মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জয়ের সদস্য বাঁহাতি পেসার শরিফুলও ছিটকে পড়েন আগের দিন ইনজুরির কারণে।
এইতো গেল না খেলতে পারা দুই ক্রিকেটারের কথা। টস জিতে সকালের আর্দ্রতাকে কাজে লাগানোর বুক ভরা আশা নিয়ে অধিনায়ক মুমিনুল বোলারদের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন, তার নূন্যতম প্রতিদানও দিতে পারেননি কেউই। দুই ওপেনার এলগারও এরউই নির্বিঘ্নে রান সংগ্রহ করে গেছেন। যেভাবে তারা এগুচ্ছেন সেখানে দাড়ি বসাতে না পারলে বাংলাদেশকে রানের পাহাড়ে চাপা পড়তে হবে!
রান সংগ্রহে বেশি স্বাছন্দ্য ছিলেন অধিনায়ক ডিন এলগার। মাত্র ৬০ বলে তুলে নেন ফিফটি। অপরপ্রান্তে তখন এরউইর রান ৫৬ বলে মাত্র ১৮। এলগারের এটি ২০তম ফিফটি। লাঞ্চের আগে যে ২৫ ওভার খেলা হয়েছে, তাতে ২১ ওভারই করেছেন তিন পেনার তাসকিন, এবাদত ও খালেদ। তাসকিন ৯ ওভারে ৩১ রান দেন। এবাদত ৩৯ রান দেন ৭ ওভারে। খালেদের ৫ ওভার রান আসে ১৫। মিরাজ ৪ ওভার রান দেন ৯।
এদিন টস হওয়ার পরও খেলা শুরু হয় ৩২ মিনিট দেরিতে। এই দেরির কারণ ছিল সাইটস্ক্রিন সমস্যা। সাইটস্ক্রিন প্রস্তুত ছিল না। সাইটস্ক্রিন ঠিক হলে ৩২ মিনিট দেরিতে খেলা শুরু হয়। যে কারণে লাঞ্চের সময়ও আধ ঘণ্টা পিছিয়ে স্থানীয় সময় সাড়ে ১২টা করা হয়। বাংলাদেশ সময় ছিল বিকেল সাড়ে ৪টা।
এমপি/আরএ/