নার্ভাস ছিলেন জেসি!
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে ক্রমেই বাড়ছে মেয়েদের অংশ গ্রহণ। ব্যক্তিগত ইভেন্ট ছাড়াও ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, হ্যান্ডবল, ভলিবল, কাবাডির মতো দলগত খেলাতেও মেয়েদের অংশগ্রহন চোখে পড়ার মতো। বয়স ভিত্তিক ফুটবলে সাফ চ্যাম্পিয়ন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এশিয়ার সেরার মুকুট বাংলাদেশের মেয়েদের।
খেলাধুলার পাশাপাশি ম্যাচ পরিচালনাও মেয়েরা এগিয়ে আসছে। ফুটবলে মেয়েরা রেফারিং শুরু করেছেন অনেক আগে থেকেই। এবার ক্রিকেটেও আম্পায়ার হিসেবে দেখা গেলে মেয়েদের। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রদর্শনী ক্রিকেটে ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন দুই নারী সাথিরা জেসমিন জেসি ও ডলি রানী সরকার। সাথিরা জেসমিন জেসি ছিলেন ফিল্ড আম্পায়ার। তার সঙ্গে ছিলেন অভিজ্ঞ মাহবুবউল্লাহ।
ডলি রানী সরকার ছিলেন তৃতীয় আম্পায়ার। তবে জেসি ও ডলি কিন্তু প্রথম নারী আম্পায়ার নন, এর আগে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগেও অনিয়মিতভাবে নারী আম্পায়ারদের ম্যাচ পরিচালনা করতে দেখা গেছে।
দুই নারী আম্পায়ারকে ম্যাচের দায়িত্ব দেয়ার নেপথ্যে রয়েছেন আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠুর সুদূর প্রসারী চিন্তা-ভাবনা। এবারের প্রিমিয়ার লিগ শুরুর আগে তিনি ঘরোয়া আসরে নারী আম্পায়ার ও স্কোরার আনার কথা জানিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় জেসি ও ডলির এই দায়িত্ব পালন।
ফিল্ড আম্পায়ারের দায়িত্ব পাল করা সাথিরা জেসমিন জেসি বলেন. ‘আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান মিঠু ভাই, ২৬ মার্চের জন্য ফোন করে ডাকলেন। বললেন, তোমরা এখন থেকে শুরু করো। আমারও মনে হয়, শুরু করার জন্য আজকে (গতকাল) সবচেয়ে সেরা দিন ছিল। সবাই ছিল, সবাই দেখলো মেয়েরা কেমন আম্পায়ারিং করে। এখানে আসলে যত বেশি ম্যাচ করবে, তত অভিজ্ঞতা বাড়বে’।
তিনি বলেন, ‘মেয়েরা এখন সবখানে আম্পায়ারিং করছে, বিশ্বকাপেও করছে, ছেলেদের ক্রিকেটেও করছে।’
শুরুতে জেসি একটু নার্ভাস ছিলেন। এই নার্ভাসনেসের কারণ নান্নু-রফিকের মতো ক্রিকেটাররা। কারণ তাদের মতো ক্রিকেটারদের ম্যাচে আম্পায়ারিং করতে গিয়ে যদি কোনো রকম ভুল-ভ্রান্তি হয়ে যায় এই শঙ্কা কাজ করছিল তার অন্তরে।
তিনি বলেন, ‘একটু নার্ভাস ছিলাম যে নান্নু ভাইরা খেলবে, রফিক ভাইরা খেলবে। তাদের খেলা দেখে ক্রিকেটার হয়েছি, বড় হয়েছি। তাদের ম্যাচে আম্পায়ারিং করব এটা নিঃসন্দেহে অনেক বড় একটা ব্যাপার। রোমাঞ্চের সাথে নার্ভাসনেসও কাজ করেছিল। কিন্তু যখনই মাঠে চলে এসেছ, তখন আমার কাছে পুরো ব্যাপারটা পেশাদার মনে হয়েছে। খুবই ভালো লাগছে আমার জন্য এই ম্যাচে আম্প্যারিং করা অনেক বড় পাওয়া। আজকে শুরু হয়েছে, শুরুটা করা গুরুত্বপূর্ণ যে কোনো নতুন কিছুর।’
তিনি মনে করেন আম্পায়ার্স কমিটি সুযোগ দিলে অনেক নারী ক্রিকেটারই আম্পায়ারিংয়ে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।
তিনি বলেন, ‘এখন যেহেতু বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটি চিন্তা করেছে, নিসন্দেহে দারুণ বিষয়। অনেকেই আছে এখানে আগ্রহী। সুযোগ দিলে অনেকেই করবে।’
এমপি/এমএমএ/