সিরিজ জিততে পারল না বাংলাদেশ
হলো না। একটি জয় পেলে বাংলাদেশের অনেকগুলো অর্জন পূর্ণ হতো। কিন্তু আফগানিস্তানকে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হারাতে না পারাতে সবই থেকে গেছে অপূর্ণ। করা হয়নি আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ আবার জেতা হয়নি সিরিজ। উঠা হয়নি আফগানিস্তানকে পেছনে ফেলে র্যাঙ্কিংয়ে আটে।
এ সবই হয়েছে আফগানিস্তানের কাছে ৮ উইকেটে হেরে যাওয়াতে। বাংলাদেশের ৯ উইকেটে করা ১১৫ রান আফগানিস্তান অতিক্রম করে ১৭ দশমিক ২ ওভারে ২ উইকেট ১২১ রান করে। জয়সূচক রান আসে শূন্য রানে জীবন পাওয়া হযরতউল্লাহ জাজাইয়ের ব্যাট থেকে।
সিরিজ হয়েছে ১-১ ড্র। ফলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলােেদশর আর সিরিজ জেতা হলো না। এর আগে ২০১৯ সালেও দুই দেশের সিরিজ ১-১ ড্র হয়েছিল। সেবার আফগানিস্তান প্রথম ম্যাচ জিতেছিল। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ ড্র করেছিল। ২০১৮ সালে তো ভারতের দেরাদুনে ৩ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশই হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল। ম্যাচ সেরা ও সিরিজ সেরা সব পুরস্কারই গিয়েছে আফগানদের শিবিরে। ম্যাচ সেরা হয়েছেন হযরতউল্লাহ জাজাই। সিরিজ সেরা ফজলহক ফারুকী।
বাংলাদেশ যতটা সহজে হেরেছে, ততটা সহজে হয়তো হারতে হতো না। কিংবা অন্য রকমও হতে পারত ম্যাচের চিত্রনাট্য। যদি প্রথম ম্যাচের জয়ের নায়ক নাসুম আহমেদ নিজের ও ইনিংসের তৃতীয় বলে হযরতউল্লাহ জাজাইয়ের ক্যাচ ফেলে না দিতেন। তখন রানের খাতাই খুলতে পারেনি আফগানরা। সেই হযরতউল্লাহ জাজাই পরে দলকে জয়ী করে বিজয়ীর বেশে ফিরেন ৪৫ বলে ৩ চার ও ৫ ছক্কায় ৫৯ রানে অপরাজিত থেকে। তিনি ৩৭ বলে তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। এই ক্যাচ নাসুম ধরতে পারলে পরের ওভারে আবার মেহেদি হাসান ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজকে। কাভারে তার ক্যাচ ধরেছিলেন মাহমুদল্লাহ। তখন শুরুতেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপেই থাকত আফগানিস্তান। এদিকে ক্যাচ ফেলার ঘটনা আরও আছে। দলীয় ৭৭ রানে ডিপ স্কয়ার লেগে ওসানা গনির ক্যাচ ফেলেন আফিফ। এ সময় ওসমান গনির রান ছিল ৩৯। এই মেহেদির বলে ডিপ স্কায়ার লেগে সেই ওসমান গনির ক্যাচ ফেলেন পরে মোহাম্মদ নাঈম। পরে হয়ে যায় বাউন্ডরি। ওসমান গনির রান ছিল ৪১। পরে হয়ে যায় ৪৫। ওসমান গনিকে পরে আউট করেন বল হাতে তুলে নিয়েই মাহমুদউল্লাহ। মোট ৪৮ বলে তিনি ৪৭ রান করেন। তার আউটে শুধুই জয়ের ব্যবধান কমে আফগানদের।
এদিন বাংলাদেশের বোলাররা মোটেই আফগানদের ওপর চাপ তৈরি করতে পারেননি। সবচেয়ে খরুচে ছিলেন সাকিব। ইনিংসে পাঁচ ছক্কার চারটিই এসেছে সাকিবের ওভার থেকে। ৩ ওভারে তিনি রান দেন ৩২। শরিফুল ৩ ওভারে রান দেন ২৫। নাসুম ২৩৯ রান দেন ৩.৪ ওভারে। তবে আটোসাটো বোালিং করেন মোস্তাফিজ ও মেহেদি। মোস্তাফিজ ৩ ওভারে ১৩ রান দেন। মেহেদি ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। ডট বল দিয়েছেন ৪৯টি।
বাংলাদেশের সামনে আফগানিস্তান ‘ভীতি ছিল তাদের স্পিন ত্রয়ী। যদিও আগের ম্যাচে সেই জুজুর ভয় কাটিয়ে উঠেেত পেরেছিল। কিন্তু এই ম্যাচে ৯ উইকেটে মাত্র ১১৫ রান করলেও সেখানে ছিল না কিন্তু স্পিন ভীতি। স্পিন ত্রয়ীর একজন মুজিব উর রহমান ইনজুরির কারণে সেরা একাদশেই ছিলেন। রশিদ খানও ভীতি ছড়াতে পারেনি। ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। দলপতি মোহাম্মদ নবী অবশ্য বেশ ঝেকে ধরেছিলেন ৪ ওভারে ১৪ রানে ১ উইকেট নিয়ে। আসল ভীতি ছড়িয়েছেন দুই পেসার ফজলহক ফারকী ও আজমতউল্রাহ ওমরজাই। দুই জনেই তিনটি করে উইকেট তুলে নেন যথাক্রমে ৪ ওভার বোলিং করে ১৮ ও ২২ রানে। সঙ্গে ডট বল ছিল প্রায় অর্ধেক ৫৮টি। এই যখন হয় বোলিং পক্ষের আক্রমণের পরি সংখ্যান, সেখানে ব্যাটিং পক্ষের আর করার কী থাকতে পারে? সর্বোচ্চ রানে আসে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে ৩০। এরপর দলপতি মাহমুদউল্লাহ করেন ২১ রান। ১৩ রান করে করেন লিটন দাস ও মোহাম্মদ নাঈম। আর কেউ দুই অংকের রান করতে পারেনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১১৫/৯, ওভার ২০ ( মুশফিকুর রহিম ৩০, মাহমুদউল্লাহ ২১, মোহাম্মদ নাঈম ১৩, লিটন দাস ১৩, সাকিব ৯, আফিফ হোসেন ৭, মোস্তাফিজ ৬*, নাসুম আহমেদ ৫*, মুনিম শাহরিয়ার ৪, মেহেদি হাসান ০, শরিফুল ০, ফজলহক ফারুকী ৩/১৮, আজমতউল্লাহ ওমরজাই ৩/২২, মোাহম্মদ নবী ১/১৪, রশিদ খান ১/৩০)।
আফগানিস্তান: ১২১/২, ওভার ১৭.৪( হযরতউল্বলাহ জাজাই ৫৯* ওসমান গনি ৪৭, দারউইস রাসুল ৯*রহমানউল্লাহ গুরবাজ ৩. মেহেদি হাসান ৪-০-১৯-১, মোস্তাফিজ ৩-০-১৩-০, শরিফুল ৩-০-২৫-০ নাসুম আহমেদ ৩.৪-০-২৯-০, সাকিব ৩-০-৩২-০)।
এমপি/এমএমএ/