হারে শুরু বাংলাদেশের মেয়েদের বিশ্বকাপ মিশন
মনের গহীন কোণে ইচ্ছে ছিল বিশ্বকাপ ক্রিকেটের যাত্রা শুরু হবে রঙিন। শুরু হবে জয় দিয়ে। কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি বাংলাদেশের মেয়েদের। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪৯ ওভার ৫ বলে মাত্র ২০৭ রানে অলআউট করেও লক্ষ্য পাড়ি দিতে পারেননি নিগার সুলতানারা। ৪৯ ওভার ৩ বলে ১৭৫ রানে অলআউট হয়ে হেরেছেন ৩২ রানে। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে ৭ মার্চ স্বাগতিক নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে।
বোলাররা তাদের কাজটা ঠিকই করে রেখেছিলেন। টস জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে খুব বেশি সংগ্রহ করতে দেননি। ফারহা তৃষ্ণা, জাহানার আলম, রিতু মনিদের তোপে পড়ে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। ৪৯ ওভার ৫ বলে ২০৭ রানে অলআউট করে। জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে কিন্তু শুরু ও শেষের দিকে সম্ভাবনা জাগিয়ে হেরে যায় বাংলাদেশ। প্রথমে উদ্বোধনী জুটিতে শামীমা ও শারমিন ৬৯ রান এনে দেওয়ার পর ধ্বস নামে। ৪৪ রানে হারায় ৬ উইকেট। পরে নিগার ও রিতু মনি সপ্তম উইকেট জুটিতে ৫৩ রান যোগ করে জয়ের আশা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু এ জুটি ভেঙে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ৯ রানে হারায় ৪ উইকেট। ৪৯ ওভার ৩ বলে ১৭৫ রানে অলআউট হয়।
শুরুতে বাংলাদেশের বোলারদের তোপে পড়ে শতরানের আগেই হারায় ৩ উইকেট। একপর্যায়ে তাদের রান ছিল ৫ উইকেটে ১১৯। কিন্তু তারপরও দক্ষিণ আফ্রিকার বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে মারিজানি ক্যাপ ও চিউই থিরন মিলে ৭১ রান যোগ করলে। কিন্তু জাহানারা দলীয় ১৯০ রানে থিরনকে আউট করার পর আর দাঁড়াতেই পারেননি বাকিরা। তৃষ্ণা ও জাহানারার তোপে পড়ে ১৭ রানে পড়ে শেষ ৫ উইকেট। সর্বোচ্চ ৪২ রান আসে মারিজানার ব্যাট থেকে। থিরন করেন ৩৯ রান। এ ছাড়া লুরা ৪১, দলপতি সুনে লুস ২৫, মিগনন ১৮, লারা ১২ রান করেন। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেন ফারিহা তৃষ্ণা। তিনি ১০ ওভারে ৩৫ রানে নেন ৩ উইকেট। জাহানার ২ উইকেট নিতে ৯ ওভারে ২৮ রান দেন। রিতু মনি ৯ ওভার ৫ বলে ৩৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট নেন সালমা খাতুন ও রুমানা আহমেদ।
খুব বড় টার্গেট নয়। দুই ওপেনার শামীমা সুলতানা ও শারমিন আক্তারের ব্যাট চড়ে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। উদ্বোধনী জুটিতে এ দুই ব্যাটসম্যান ৬৯ রান এনে দেন ১৯ ওভার ৩ বলে। ৫০ বলে ২ চারে ২৭ রান করে শামীমা আউট হওয়ার ২ রান পর শারমিনও আউট হয়ে যান ৭৭ বলে ৪ চারে ৩৪ রান করে। দুই জনকেই আউট করেন আয়াবঙ্গা খাকা। কিন্তু এ জুটি ভেঙে যাওয়ার ঝড় বয়ে যায় এ আয়াবঙ্গা খাকার ভয়ংকর বোলিংয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারের উপর দিয়ে। বিনা উইকেটে ৬৯ থেকে ৬ উইকেটে ১১৩। ৪৪ রানে নেই ৬ উইকেট। খাকা একাই তুলে নেন ৪ উইকটে। একটি নেন মাসাবাতা ক্লাস। একটি ছিল রান আউট। রুমানা করেন ২১ রান।
সপ্তম উইকেট জুটিতে অধিনায়ক নিগার সুলাতানা রিতু মনিকে নিয়ে ধ্বস সামলে দলের জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি করেন জুটিতে ৫৩ রান যোগ করে। রিতু মনি ৩৮ বলে ৩ চারে ২৭ রান করে ইসমাইলের বলে বোল্ড হলে ভেঙে যায় জয়ের সম্ভাবনা জাগানো জুটির। রিতু আউট হওয়ার আগে বাংলাদেশের শেষ ৫ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৪৩ রানের। কিন্তু রিতু আউট হওয়ার পর নিগার থাকায় কিছুটা সম্ভাবনা তখনো ছিল। কিন্তু তিনি শেষ চেষ্টা করতেই পারেননি মাত্র ৪ রান যোগ হওয়ার পর রান আউট হয়ে গেলেন। তার ৫৯ বলে ২৯ রানের ইনিংসে ছিল না কোনো বাউন্ডারি কিংবা ওভার বাউন্ডারি। এরপর বাংলাদেশের আর কোনো সম্ভাবনাই থাকেনি। শেষ ৪ উইকেটে পড়ে মাত্র ৯ রানে। খাকা ৩২ রানে ৪ উইকেট। মাসাবাতা ক্লাব ২ উইকেট নেন ৩৬ রানে। ১টি করে উইকেট নেন শাবনিম ইসমাইল ও মারিজানা ক্যাপ।
এমপি/এসএন