নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আজ ভারত পাকিস্তান ক্রিকেটযুদ্ধ
পুরো ক্রিকেট দুনিয়ার দৃষ্টি আজ থাকছে ভারতের আহমেদাবাদে। এখানেই ত্রয়োদশ ওয়ানডে বিশ্বকাপের বহুল প্রতীক্ষিত ভারত-পাকিস্তান মহারণ। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আজ বেলা আড়াইটায় শুরু হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর এই ক্রিকেটযুদ্ধ।
রোমাঞ্চের বারুদে ঠাসা ভারত-পাকিস্তান মহারণকে বলা হয় সব ম্যাচের সেরা ম্যাচ। বিশ্বকাপের মঞ্চে ক্রিকেটের এল ক্লাসিকো ঘিরে সমর্থকদের উন্মাদনা এবারও তুঙ্গে পৌঁছে গেছে। এক লাখ ৩২ হাজার টিকিট বিক্রির পরও দর্শকদের চাহিদা না মেটায় অতিরিক্ত ১৪ হাজার টিকিট ছাড়তে হয়েছে। তার পরও টিকিটের জন্য হাহাকার।
কালোবাজারিতে বহুগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে টিকিট। ম্যাচের ৫০টি ভুয়া টিকিট ৩ লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগে পুলিশ চারজনকে গ্রেফতারও করেছে! নয়দিন হলো ত্রয়োদশ ওয়ানডে বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে এবং প্রতিটি ম্যাচেই দর্শক-খরা নিয়ে আয়োজক থেকে শুরু করে সর্বত্র সমালোচনা। আজ নিশ্চয়ই দর্শক নিয়ে এ হাহাকারের সমাপ্তি ঘটবে।
দুই চিরবৈরী দেশ ১৬ বছর টেস্ট সিরিজ ও ১০ বছর ওয়ানডে কিংবা টি২০ সিরিজে মুখোমুখি হয়নি। ভারতীয় ক্রিকেট দল সর্বশেষ পাকিস্তান সফর করেছে ২০০৬ সালে। প্রায় এক দশক হয়ে গেল দুই দেশ দ্বিপক্ষীয় সিরিজেও মুখোমুখি হয়নি। এর পরও বৈশ্বিক আসরে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের আবেদন এতটুকু কমেনি, যার প্রমাণ আহমেদাবাদের লড়াই নিয়ে সাজসাজ রব।
গত মাসে এশিয়া কাপ ক্রিকেটে শ্রীলংকার মাঠে লড়েছে ভারত-পাকিস্তান। আসরটি পাকিস্তানে হওয়ার কথা থাকলেও ভারত তাদের ক্রিকেট দল পাকিস্তানে পাঠাতে অপারগতা জানায়। ফলে বাধ্য হয়ে শ্রীলংকাকে সহ-আয়োজক করা হয় এবং ভারত তাদের সব ম্যাচ শ্রীলংকার মাঠে খেলেছে। এক মাসের মধ্যে দুই দল আবার মুখোমুখি। এবার মহারণ বিশ্বকাপে।
ক্রিকেটে দুই দেশের রয়েছে সমৃদ্ধ লড়াইয়ের ইতিহাস। ওয়ানডে ফরম্যাটে মুখোমুখিতে পাকিস্তানই এগিয়ে। দ্বৈরথে ৭৩ জয়ের বিপরীতে তারা হেরেছে ৫৬ ম্যাচে। যদিও ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাতবারের মোকাবেলায় পাকিস্তানের কাছে কখনই হারেনি ভারত।
বিশ্বকাপে এ দ্বৈরথের সূচনা ১৯৯২ সালে। সেবার পাকিস্তান বিশ্বকাপ জিতলেও সিডনিতে গ্রুপ ম্যাচে ভারতের কাছে হেরেছে ৪৩ রানে। এই ধারা পরে চলতেই থাকে। বিশ্বকাপে পরের সব ম্যাচেই হেরে যায় পাকিস্তান। ১৯৯৬ সালে ৩৯ রানে, ১৯৯৯ সালে ৪৭ রানে, ২০০৩ সালে ৬ উইকেটে, ২০১১ সালে ২৯ রানে, ২০১৫ সালে ৭৬ রানে ও ২০১৯ সালে ডিএলএস মেথডে ৮৯ রানের জয় পায় ভারত। আজও কি স্বাগতিকরা হাসবে, নাকি বাবর আজমের দল হারের বৃত্ত ভাঙবে?
বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে দুর্বল রেকর্ড নিয়ে পাকিস্তান দলনায়ক বাবর আজম বলেন, ‘অতীতে কী ঘটেছে, তা নিয়ে আমি ভাবছি না। আমি বরং সামনে যা আসছে তা নিয়ে ভাবছি। রেকর্ডের জন্মই হয় ভাঙার জন্য এবং আমরা সেটি ভাঙতে চাইব।’
ওয়ানডে বিশ্বকাপে স্কোরলাইন ৭-০, দুই দলের সমর্থকদের জন্য আলোচনার বিরাট ইস্যু। যদিও পাকিস্তান খানিকটা মান বাঁচায় টি২০ বিশ্বকাপ দিয়ে। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে ভারতকে ১০ উইকেটে হারান বাবর আজম-শাহিন শাহ আফ্রিদিরা। ওই জয়টি কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাসের সঞ্চার করে বাবরদের। যদিও গত ১০ সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপে ২২৮ রানের বিশাল হারের লজ্জা পায় পাকিস্তান। ওয়ানডে বিশ্বকাপে কখনই জিততে না পারার লজ্জার সঙ্গে যোগ হয় এশিয়া কাপ ব্যর্থতা। আবার দুই দলের সর্বশেষ পাঁচ লড়াইয়ের চারটিই জিতেছে ভারত, বাকি ম্যাচটি বৃষ্টিতে পণ্ড হয়। এ সমীকরণ সামনে রেখে আজ ভারতের মুখোমুখি পাকিস্তান।