যেখানে আয়ারল্যান্ডও বাংলাদেশের ভয়ের কারণ
তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে একমাত্র ওয়ানডেতেই বাংলাদেশ শক্তিশালী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। সম্প্রতি সেই তালিকায় যোগ হয়েছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটও। এর ফলে ক্রিকেটের রঙিন দুনিয়ায় বাংলাদেশ এখন নিজেদের একটা অবস্থান তৈরি করে নিতে পেরেছে। কিন্তু সে তুলনায় টেস্ট ক্রিকেটের অবস্থা খুবই নাজুক। ১৩৬ টেস্ট খেলে জয় পেয়েছে মাত্র ১৬টিতে।
টেস্ট ম্যাচের জয়গুলো এসেছে মাঝে মাঝে। ধারাবাহিক জয়ের সংখ্যা খুবই কম। সর্বোচ্চ ৩টি করে জয় আছে দুইবার। ২টি করে জয় আছে দুইবার। এর মাঝে এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে কোনো জয় পায়নি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এখনো কোনো ম্যাচ খেলেনি। আগামীকাল (৪ এপ্রিল) প্রথম খেলতে নামবে।
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থা নাজুক হলেও ৩ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ২০১৭ সালে আইসিসির টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া আয়ারল্যান্ড ভয়ের কোনো কারণ হওয়ার কথা নয়। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ২৩ বছরের পথ পরিক্রমায় অতীতে ফিরে গেলে সেখানে আয়ারল্যান্ডকে নিয়েও শঙ্কিত হতে হয়। এই শঙ্কার কারণ এখন পর্যন্ত কোনো দলের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে বাংলাদেশ হার এড়াতে পারেনি। এমনকি আয়ারল্যান্ডের সঙ্গেই টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া আফগানিস্তানও বাংলাদেশকে হারিয়েছিল প্রথম সাক্ষাতে।
২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অভিষেক টেস্ট খেলেছিল ভারতের বিপক্ষে। প্রথম ইনিংসে ৪০০ রান করার পরও ৯ উইকেটে হেরেছিল, তাও চার দিনেই। এরপর ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়েতে খেলতে নেমে হেরেছিল ইনিংস ও ৩২ রানে। বাংলাদেশের তৃতীয় প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান। মুলতানে হেরেছিল ইনিংস ও ২৬৪ রানের ব্যবধানে। ২০০১ সালেই বাংলাদেশ কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্ট ক্লাব মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছিল প্রথম টেস্ট। হেরেছিল ইনিংস ও ১৩৭ রানে। একই বছর বাংলাদেশ শেষ ম্যাচ খেলতে নেমে পেয়েছিল নিউ জিল্যান্ডকে। সিডন পার্কে বাংলাদেশ হেরেছিল ইনিংস ও ৫২ রানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট খেলে ২০০২ সালের অক্টোবরে ইস্ট লন্ডনে। হার যথারীতি ইনিংস ও ১০৭ রানে। একই বছর বাংলাদেশ উইন্ডিজের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলতে নেমে হেরেছিল ইনিংস ও ৩১০ রানে।
অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশ পেয়েছিল ২০০৩ সালে তাাদের মাটি ডারউইনে। এখানেও বাংলাদেশ হরেছিল ইনিংস ও ১৩২ রানে। এরপর বাকি থাকে শুধু ইংল্যান্ড। সেই ইংল্যান্ডকেও বাংলাদেশ পায় ২০০৩ সালে নিজেদের মাঠে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ হেরেছিল। তবে এবার আর ইনিংস ব্যবধানে নয়, ৭ উইকেটে।
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার তিন বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ সবগুলো টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়। সবগুলোতেই ছিল বাজে অবস্থা। বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর ২০১৭ সালে আইসিসি একসঙ্গে আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডকে টেস্ট মর্যাদা দেয়। ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলে একমাত্র টেস্ট। সবাইকে অবাক করে দিয়ে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের কাছেও হেরে যায় ২২৪ রানের বিশাল ব্যবধানে।
এই সমীকরণে আগামীকাল আয়ারল্যান্ডও কিন্তু বাংলাদেশের জন্য ভয়ের কারণ।
এমপি/এসজি