সাকিব টনিকে প্রথম জয় মোহামেডানের
সাকিব যেন এক প্রেরণার নাম। তার উপস্থিতি দলের ক্রিকেটাররা পান প্রনোদনা। শিরোপার জন্য দল গড়ে মোহামেডান টানা ৫ ম্যাচ হেরে পয়েন্ট টেবিলে সবার নিচে। রেলিগেশন লিগের শঙ্কা।
সেখান থেকে মোহামেডানকে উদ্ধার করতে আগের দিন শুক্রবার চট্টগ্রামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে রাতেই চলে আসেন ঢাকা। সঙ্গে দুই সহযোদ্ধা মেহেদি হাসান মিরাজ ও রনি তালুকদার। কিন্তু ম্যাচে সাকিব ব্যাট করেন মাত্র ৫ রান। বল হাতে ১০ ওভারে ৩১ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। এটি দিয়ে আর যাই হোক দলকে জেতানো যায় না। কিন্তু সাকিব টনিকে জেগে উঠে মোহামেডানের খেলোয়াড়রা। দলকে এনে দেন প্রথম জয়।
পয়েন্টের শীর্ষে থাকা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে হারিয়েছে ২২ রানে। আগে ব্যাট করে মোহামেডান করে ৭ উইকেটে ২৯০ রান। জবাব দিতে নেমে শেখ জামাল অলআউট হয় ৪৯.২ ওভারে ২৬৮ রানে। লিগে শেখ জামালের এটি ছিল প্রথম হার। তাদের পয়েন্ট ৬ ম্যাচে ১০। সমান ম্যাচে প্রথম জয় নিয়ে মোহামেডানের পয়েন্ট ৩।
ব্যাট করতে নামার পর মোহামেডানকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ও জাতীয় দল কাঁপানো রনি তালুকদার। দুই জনে উদ্বোধনী জুটিতে ১৬.৫ ওভারে ৭৯ রানের মজবুত সুচনা এনে দেন। যেখানে দাঁড়িয়ে মোহামেডান সংগ্রহ করে ৭ উইকেটে ২৯০ রানের বিশাল পূঁজি।
মোহামেডানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে রনি আউট হলে। ৪৪ বলে ১ ছক্কা ও ২ চারে ৩২ রান করে মৃত্যঞ্জয়ের বলে আসিফের হাতে ধরা পড়েন। এরপর মোহামেডানের হয়ে ব্যাট করতে আসেন একে একে সাকিব ও মিরাজ। দুইজনের কাছেই বড় প্রত্যাশা ছিল দলের। কিন্তু দুই জনেই হতাশ করেন ৫ রান করে আউট হয়ে। মিরাজকে সাইফ ও সাকিবকে পারভেজ রাসুল আউট করেন। ফলে উদ্বোধনী জুটির ৭৯ রান হোঁচট খায়। দলের সংগ্রহ পরিণত হয় ৩ উইকেটে ১১৫।
এরপর ইমরুল ও মাহমুদউল্লাজ চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১২.২ ওভারে ৭৩ রান যোগ করে আবার দলকে চাঙা করে তুলেন। এই জুটি ভাঙে ইমরুল কায়েস ১০১ বলে ২ ছক্কা ও ১০ চারে ৮৬ রান করে পারভেজে রাসুলের বলে বোল্ড হলে। ৬ রান পর মাহমুদউল্লাহও ২ রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়ে ৪৮ রানে আউট হন আরিফের বলে সাইফের হাতে ধরা পড়ে। তার ৫১ বলের ইনিংসে ছিল ২ ছক্কা ও ৫ চার। শেষের দিকে আরিফুল হক ৩১ বলে ৪ ছক্কায় অপরাজিত ৩৯ ও জেক লিন্টন ১০ বরে ২টি করে চার ও ছয় মেরে অপরজিত ২৪ রান করল মোহামেডানের সংগ্রহ আরও মজবুত হয়। পারভেজ রাসুল ৩৭ ও আরিফ আহমেদ ৫৯ রানে নেন ২টি করে উইকেট।
বড় টার্গেটের পেছনে ছুটে শেখ জামাল ভালোই জবাব দিচ্ছিল। দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও সৈকত আলী দলকে ১৮.১ ওভারে ৮৩ রান এনে দিয়ে ভীত মজবুত করে দেন। সৈকত ১টি করে চার ও ছয় মেরে ৪৫ বলে ২৬ রান করে আউট হলেও সাইফ আউট হন কেজ লিন্টটের বলে বোল্ড হয়ে ৬৭ বলে ৫৮ রান করেন। দুই জনে বিদায় নেন ৫ রানের ব্যবধানে। সাইফের ইনিংসে ছিল ৪টি করে চার ও ছক্কা। তাওহিদ হৃদয়ও দ্রুত বিদায় নেন ২ রান করে।
শেখ জামালের অবস্থা হয় অনেকটা মোহামেডানের মতোই। মোহামেডানর বিনা উইকেটে ব ৭৯ রান থেকে ৩ উইকেটে ১১৫। শেখ জামালের বিনা উেইকেটে ৮৩ রান থেকে দলের রান দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৯৭। নুরুল হাসান সোহানও ১৬ রান করে ফিরে গেলে শেখ জামাল বিপদেই পড়ে যায়। পরবর্তীতে পারভেজ রাসুল নিয়ে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ফজলে মাহমুদ রাব্বিকে নিয়ে ৫১ রান যোগ করলে শেখ জামাল আবার লড়াইয়ে ফিরে। ফজলে রাব্বি ৫৪ বলে ২ চারে ৩৬ রান করে আউট হলে জুটি ভাঙে। কিন্তু এরপর একমাত্র পারভেজ রাসুল ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান দাঁড়াতে না পারলে শেখ জামাল নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে। পারভেজ রাসুল অষ্টম ব্যাটসম্যা হিসেবে আউট হওয়ান আগে রান করেন ৫৬ বলে ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৬৩ রান। মেহেদি হাসান ৭২ ও আবু জায়েদ ৮৩ রানে নেন ৩টি করে উইকেট।
এমপি/এমএমএ/