টি-টোয়েন্টিতেও আয়ারল্যান্ডকে সমীহ করছে বাংলাদেশ
ওয়ানডে সিরিজ শুরু হওয়ার আগে বাংলাদেশের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে আয়ারল্যান্ডকে ‘ডেঞ্জারার্স’ বলে অভিহিত করেছিলেন। সেই সিরিজের ফলাফল সবাই অভিহিত। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজি বাংলাদেশ জিতেছিল ২-০ ব্যবধানে। বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয় ম্যাচটি পরিত্যক্ত না হলে বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানেই সিরিজ জিতত।
শুধু সিরিজই জিতেনি বাংলাদেশ। সঙ্গে ছিল একগাদা রেকর্ডও। যার কিছু ছিল আবার প্রথম। মোট কথা সিরিজে আয়ারল্যান্ড ন্যূনতম কোনো লড়াইই করতে পারেনি। তিনটি ম্যাচেই আইরিশরা টস জিতেছিল। প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে নিজেরাই রানের নিচে চাপা পড়েছিল। পরে শেষ ম্যাচে নিজেরা আগে ব্যাটে করে বাংলাদেশের বোলিং তোপে পড়েছিল।
আজ সোমবার (২৭ মার্চ) শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। যেভাবে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ঘায়েল করেছে, সেই হিসেবে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও আইরিশরা পাত্তা পাওয়ার কথা নয়। কিন্তু এখানেও কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে সাবধানী। তিনি চান ওয়ানডে সিরিজে যে ফলাফল হয়েছে, এখানেও একই ফলাফল হবে। কিন্তু তাই বলে তিনি প্রতিপক্ষকে মোটেই হালকাভাবে দেখতে নারাজ এবং তিনি দেখতে চানও না।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি প্রতিপক্ষকে হালকা করে দেখি, তা হবে আমাদের ক্ষতির কারণ। আমাদের বিপক্ষে খেলা প্রতিটি দলকেই আমরা একইভাবে দেখে থাকি। একই সঙ্গে আমরা কোনো দলকে ভয় পাই না। এটাই আমাদের মূল মন্ত্র।’
অতীতে দেখা গেছে বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজ জেতার পরও একই দলের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে আবার পেরে উঠেনি। এই পেরে না উঠার কারণ ছিল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের দুর্বলতা। বাংলাদেশর কাছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট যেন এক ধাঁধার নাম ছিল। খেলতে নামলেই খেত হাবাডুবু। খেলা দেখে মনে হতো দুগ্ধশিশু। কিন্তু হাথুরুসিংহের পরশে বাংলাদেশ দল যেন রাতারাতি বদলে গেছে। তাইতো আইরিশদের প্রতিপক্ষ হিসেবে সম্মান করলেও মাথায় ঘুর-পাক খাচ্ছে সবার আগে জয়।
কিন্তু আইরিশরাও কিন্তু হুংকার দিচ্ছে। ফরম্যাট পরিবর্তন হওয়াতেই তাদের এ রকম হুংকার। দলের কোচ হাইনরিখ মালান। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে যা হয়েছে, তা অতীত। এ নিয়ে কথা হয়েছে। এখন আমরা খেলব ভিন্ন ফরম্যাটে। টি-টোয়েন্টিতে আমরা সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু ভালো ফলাফল করেছি। সেই ধারাবাহিকতা আমরা বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের হোম কন্ডিশনে ধরে রাখার মিশন নিয়ে নামব।’
টি-টোয়েন্টি সিরিজে আয়ারল্যান্ড দলে হঠাৎ করে অধিনায়ক বদল করা হয়েছে। নিয়মিত অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নিকে বিশ্রাম রাখা হয়েছে। তার পরিবর্তে অধিনায়ক করা হয়েছে সহ-অধিনায়ক পল স্ট্যার্লিংকে। আর সহ অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে লরকান টাকারকে।
আজকের ম্যাচে উইকেট ফ্ল্যাট। রান উঠবে অনেক। টস জিতলে তাই ব্যাটিং বেছে নিতে দ্বিধা করবেন না অধিনায়ক। বাংলাদেশ অবশ্য সব সময় লম্বা ব্যাটিং লাইন নিয়ে খেলতে নামে। আজকের ম্যাচেও তার ব্যতিক্রম হবে না। সর্বশেষ খেলা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সেরা একাদশে একটি পরিবর্তন হবেই। সেই ম্যাচ খেলা স্পিনার তানভীর ইসলাম এবার দলেই নেই। সেই ম্যাচে তার অভিষেক হয়েছিল। তার পরিবর্তে আজ নাসুম আহমেদের খেলার কথা। কিন্তু লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে যেভাবে পছন্দ করে দলে নিয়েছেন, তাতে করে তার অভিষক হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সেই ম্যাচে আরও খেলেছিলেন সাকিব, লিটন, রনি, নাজমুল, তাওহিদ, শামীম, মেহেদি, তাসকিন, মোস্তাফিজ, হাসান মাহমুদ। এ ছাড়া দলে আছেন জাকের আলী অনিক ও শরিফুল ইসলাম।
দুই দল এখন পর্যন্ত ৫ বার মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে প্রথম সাক্ষাতে আইরিশরা বাংলাদেশকে হারের লজ্জ্বা দিয়েছিল ২০০৯ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এরপর আর কিন্তু বাংলাদেশ তাদের কাছে হারেনি। অবশ্য ম্যাচও খেলেছে কম। ৪ ম্যাচ খেলে তিনটিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই ৩টি ম্যাচই ছিল দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ। আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে সেই তিন ম্যাচই জিতেছিল বাংলাদেশ। সর্বশেষ দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল ২০১৬ সালের টি-টেয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে খেলাটি পরিত্যক্ত হয়েছিল।
এমপি/আরএ/