টি-টোয়েন্টিতেও আইরিশদের কাছে প্রথম ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদেশ
বাংলাদেশের জন্য কপাল ভালো। ওয়ানডে ক্রিকেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হারের পর ( বিশ্বকাপে) আর সেই বৃত্তে ধরা পড়েনি। তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটের মাঝে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেদের প্রভুত উন্নতি ঘটিয়ে আয়ারল্যান্ডকে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয়নি। একের পর এক ম্যাচ জিতে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে। যার সর্বশেষ নজির ছিল সিলেটে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জেতা। দ্বিতীয় ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত না হলে ফলাফল ৩-০ ব্যবধানই হতো। আয়ারল্যোন্ডের বিপক্ষে ১৩ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ৯টিতে। হার ২টিতে। ২টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
বিষয়টি কাকতলীয়। ওয়ানডে ক্রিকেটের মতো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল। ওয়ানডেতে হেরেছিল ২০০৭ সালে উইন্ডিজের বার্বডোজে সুপার সিক্সে ৭৪ রানের বিশাল ব্যবধানে। আর টি-টোয়েন্টিতে হেরেছিল ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের নটিংহ্যামে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ৬ উইকেটে। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে মাত্র ১৩৭ রান করেছিল। আইরিশরা সেই রান তাড়া করেছিল ১৮.২ ওভারে ৪ উইকেটে হারিয়ে ১৩৮ রান করে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। শতরানের আগেই ৯৪ রানে হারিয়েছিল ৭ উইকেট। তামিম ২২, জুনায়েদ সিদ্দিকী ১৩, অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল ১৪, সাকিব ৭, মাহমুদউল্লাহ ৭, রকিবুল ১৩ ও মুশফিকুর রহিম ১৪ রান করে আউট হয়েছিলেন। পরে মাশরাফি ১৬ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারে ৩৩ রান করলে বাংলাদেশ অলআউট না হয়ে ৮ উইকেটে ১৩৭ রান পর্যন্ত যেতে পেরেছিল। আয়ারল্যান্ড ১৮.২ ওভারে ৪ উইকেটে ১৩৮ রান করেছিল। মাশরাফি ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব ও রাজ্জাক।
এই ম্যাচ বাংলাদেশের জন্য শুধু একটি হারই ছিল না, আসর থেকেই বিদায়ের ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছিল। কারণ আগের ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ভারতের কাছে। গ্রুপ পর্ব থেকে দুই দল উঠেছিল পরের রাউন্ডে। এর আগের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলেছিল দ্বিতীয় পর্বে।
ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ পরে যেমন আর আয়ারল্যান্ডকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয়নি তেমনি টি-টোয়েন্টিতেও। এরপর আইরিশরা বাংলাদেশের বিপক্ষে আর কোনও ম্যাচ জিততে পারেনি। ৪ ম্যাচ খেলে ৩টিতে জিতেছিল বাংলাদেশ। ১টি ম্যাচ হয়েছিল পরিত্যক্ত।
বাংলাদেশ ৩ ম্যাচ জিতেছিল দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে। ২০১২ সালে বাংলাদেশ খেলতে গিয়েছিল আয়ারল্যান্ডে। ৩টি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হয়েছিল বেলফাস্টে। প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশ ৭১ রানের ব্যবধানে জয়ী হলেও পরের ২ ম্যাচ জিতেছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়েইয়ের পর ১ রানে ও ২ উইকেটে। শেষ ২ ম্যাচের ফলাফল নির্ধিারিত হয়েছিল শেষ বলে।
পরিত্যক্ত হওয়া ম্যাচটি ছিল ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রাথমিক রাউন্ডে। ভারতের হিমাচলে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছিল। পরিত্যক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৮ ওভারে ২ উইকেটে করেছিল ৯৪ রান।
প্রথম ম্যাচ জেতার পর আইরিশরা পরে আর কোনও ম্যাচ জিততে না পারলেও বাংলাদেশকে কিন্তু সহজে ছেড়ে কথা বলেনি। আবার ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ যেমন নিজেদের উন্নতি ঘটিয়েছে কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে সেভাবে পারেনি। ব্যর্থতার বলয়েই জড়িয়ে আছে। অনেক চেষ্টার পর সম্প্রতি ঘরের মাঠে তারা ইংল্যান্ডকে ‘বাংলাওয়াশ’ করে নিজেদের পরিবর্তনের ডাক দিয়েছে। সেই পরিবর্তন আসলেই কতটা হয়েছে, তার একটা পরীক্ষা হয়ে যাবে আইরিশদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে। ২৭, ২৯ ও ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে।
এসআইএইচ