অনেক ‘প্রথম‘র এক সিরিজ বাংলাদেশের
যেকোনো কাজের ‘প্রথম’ হৃদয়ের মনি কোঠায় অন্য রকম দোলা দিয়ে যায়। স্মৃতির আয়না ভাসতে থাকে চির জাগ্রত হয়ে। এ রকম অর্জন পরবর্তী সময়ে আরও অনেক আসলেও ‘প্রথম’ অর্জন হিসেবে অমুছনীয় হয়ে থাকে আজীবন। যে কারণে কলেজে প্রথম দিন কিংবা কর্মক্ষেত্রের প্রথম দিনের সঙ্গে অন্য সব দিনের তুলনা চলে না। এবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে সিরিজ তেমনি অনেক ‘প্রথম’ এর পসরা সাজিয়ে হাজির হয়েছিল। সঙ্গে ছিল রেকর্ড ভেঙে রেকর্ড গড়ার খেলা।
২০১৭ সালে আইসিসির পূর্ণ সদস্য পদ প্রাপ্তির পর আয়ারল্যান্ড প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে। কিন্তু তাই বলে ভাবার কোনো কারণ নেই যে দুর্বল পেয়ে আয়ারল্যান্ডের উপর চড়াও হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে এই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নেমে হেরেছিল। তাও বিশ্বকাপের মতো প্লাটফর্মে। ২০০৭ সালে উইন্ডিজ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ হেরেছিল ৭৪ রানের বড় ব্যবধানে। এরপর ২০১০ সালে আয়ারল্যান্ড খেলতে গিয়ে ২ ম্যাচের সিরিজ বাংলাদেশ জিতে আসতে পারেনি ১-১ ড্র করেছিল। সেই আয়রর্যান্ডের বিপক্ষে এবারের বাংলাদেশ ছিল অপ্রতিরোধ্য। বাংলাদেশের এই অর্জন ক্রমোন্নতির ছাপ। এগিয়ে যাওয়ার পালে নতুন করে হাওয়া।
সিরিজে রেকর্ডের ছড়াছড়িতে ‘প্রথম‘ হিসেবে দেখা পেয়েছে ১০ উইকেটে জয়। শেষ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে মাত্র ১০১ রানে গুটিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ সেই রান অতিক্রম করেছিল মাত্র ১৩.১ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে। এই ১০ উইকেটে জেতা ম্যাচে বাংলাদেশ আরেকটি ‘প্রথম’র সঙ্গে সেতুবন্ধন করেছিল দলের তিন পেসার হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ ও এবাদত হোসেন ১০ উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়ে। এর আগে ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশের পেসাররা কখনো এ রকম ১০ উইকেট নিতে পারেননি। এই ম্যাচেই হাসান মাহমুদ ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৩২ রান নেন ৫ উইকেট। হাসানের এই ৫ উইকেট ছিল অপার সৌন্দর্যে ভরা সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামেরও কোনো বোলারের প্রথম ৫ উইকেট পাওয়া।
সিরিজ জেতা তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের অর্জন ছিল এই সব ‘প্রথম’।
ফিরে যাওয়া যাক দ্বিতীয় ম্যাচে। মেঘলা কন্ডিশনে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ৩৪৯ রান করে দলগত সংগ্রহের নতুন রের্কড গড়ে। এই ম্যাচেই মুশফিক ৬০ বলে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি করেন। তার সেঞ্চুরি এসেছিল ইনিংসের শেষ বলে। এর আগে দ্রুততম সেঞ্চুরি ছিল ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাকিবের ৬৩ বলে।
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৮ উইেকেটে ৩৩৮ রান করে দলীয় সংগ্রহের নতুন রেকর্ড গড়েছিল পেছনে ফেলে দিয়েছিল ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করা ৩৩৩ রানের সংগ্রহকে।
শেষ ম্যাচে বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের ১০১ রান পাড়ি দিয়েছে ১৩.১ ওভারে । অবশিষ্ঠ ছিল ৩৬.৫টি। বলের হিসেবে অব্যবহৃত সংখ্যা ছিল ২২১টি। এরচেয়ে বেশি বল অবশিষ্ট রেখে বাংলাদেশের জয়ের নজির আছে একটি। ২০০৯ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়েকে মাত্র ৪৪ রানে অলআউট করেছিল। কিন্তু সেই রান তারা তাড়া করেছিল ১১.৫ ওভারে। ম্যাচ জিতেছিল ৬ উইকেটে।
এমপি/এসএন