সব বক্সে তামিমের টিক চিহ্ন
বাংলাদেশের হাতে যেন রিমোট কন্ট্রোল। যেভাবে চেয়েছে, সেভাবে হয়েছে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জেতা বাংলাদেশে দল যেন রিমোট কন্ট্রোল হাতে নিয়েই খেলেছে।
একটি করে ম্যাচ খেলেছে। জয় এসেছে। সঙ্গে রেকর্ডের নৌকা। প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটে ৩৩৮ রান করে দলগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। সঙ্গে ১৮৩ রানের জয়, যা ছিল আবার রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়। পরের ম্যাচে ৬ উইকেটে ৩৪৯ রান করে দলগক সংগ্রহের নতুন রেকর্ড গড়ে। এই ম্যাচে সেঞ্চুরি করতে মরিয়া মুশফিকুর রহিম শেষ বলে সেই লক্ষ্যও পূরণ করেন। যদিও ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়।
এ তো গেল আগে ব্যাট করার ফায়দা। শেষ ওয়ানডে ম্যাচে পরে ব্যাট করেও তুলে নিয়েছে একই রকম ফায়দা। আগে ব্যাট আয়ারল্যান্ডকে আর নিজেদের মতো রান ফোয়ারার উৎসবে মেতে উঠতে দেয়নি। প্রেসত্রয়ী ছড়ি ঘুরালে আইরিশরা মাত্র ১০১ রানে অলআউট হয়ে যায়। ব্যাটসম্যানরা সেঞ্চুরি করবেন আর বোলারা ৫ উইকেট নেবেন না তা কি হয়? হাসান মাহমুতদ ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট নিয়ে সেখানেও অপূর্ণতা রাখতে দেননি। ম্যাচটি ১০ উইকেটে জিতে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এই স্বাদ নিয়েছে।
দলগত এই সব সাফল্য এসেছে আবার ব্যক্তিগত অর্জনের সমষ্টিগত ফলাফলে। উপরের অর্জনগুলোর পাশাপাশি প্রথম ম্যাচে সাকিব-তাওহিদের ৯০’র বেশি ইনিংস, দ্বিতীয় ম্যাচে নাজমুল-লিটনের সত্তরোর্ধ ইনিংসও ছিল। মুশফিকের এক ইনিংসে ৫টি ক্যাচ।এমন চোখ ধাঁধানো বাংলাদেশ সর্বশেষ কবে খেলেছিল তা খুঁজতে অনুবীক্ষণ যন্ত্রের প্রয়োজন পড়বে। তাইতো অধিনায়ক তামিম ইকবাল খুশির সীমা নেই। সব বক্সে দিয়েছেন টিক চিহ্ন। খেলা শেষে সংবাদ সংম্মেলনে এসে তিনি বলেন , ‘হ্যাঁ এটিকে পারফেক্ট সিরিজই বলতে পারি। দ্বিতীয় ম্যাচটা পরিত্যক্ত না হলে ভালো হতো। এ ছাড়া আমাদের নিয়ন্ত্রণে যা যা ছিল, তার সবই আমরা করতে পেরেছি। অধিনায়ক হিসেবে আমি খুবই সন্তুষ্ট যে,প্রায় সব বক্সেই টিক দিয়েছি।’
প্রথম দুইটি ম্যাচে বাংলাদেশ আগে ব্যাট তিনশোর্ধ রানের ইনিংস গড়তে পারলেও শেষ ম্যাচে আয়ারল্যান্ড পারনি। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তামিম ইকবাল বলেন, ‘ আপনারা আজও (বৃহস্পতিবার) দেখেছেন এই উইকেটে প্রথমে ব্যাট করা সহজ না। বিশেষ করে প্রথম ১৫-২০ ওভার খুবই কঠিন। কিন্তু প্রথম দুই ম্যাচে আমরা সেই চ্যালেঞ্জটা নিতে পেরেছি বলে বড় রান করেছি।
আগে ব্যাটিং করলে তিনশ প্লাস ইনিংস। প্রতিপক্ষ আগে ব্যাট করলে অল্পতেই গুটিয়ে দেওয়া- এই ব্র্যান্ডের ক্রিকেট কি বাংলাদেশ আগামীতেও খেলবে।? তামিম ইকবাল একটু ঘুরিয়ে জবাব দেন, ‘আমি কখনো আমার দলকে বলি না যে আমাদের ৩৫০-৩৬০ রান করতে হবে। আমাদের প্রক্রিয়া অনুসরন করে খেলতে হবে। এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যদি আমরা ২৬০-২৭০ রান করি, তা যেমন ঠিক আছে । আবার ৩৫০ রান করতে পারলেও খুশি। আপনারা যদি খেয়াল করে থাকেন, তা;হলে হয়তো দেখে থাকবেন প্রথম দুই ম্যাচে টসের পর আমাকে বলা হয়েছিল কথ রান করার কথা ভাবছি। কিন্তু আমি কখন লক্ষ্য টিক করে দেই না। দলের প্রতি আমার বার্তা থাকে খুবই সাধারণ।’
এ প্রসঙ্গে তামিম বলেন, ‘এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে কেউ এসে বলে দিল ৩৫০ রান করব আর সেটি হয়ে যাবে। প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।’
দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচের উদাহরণ দিয়ে তামিম ইকবাল বলেন, ‘শেষ (দ্বিতীয়) ম্যাচে আমরা ৩৫০ রান করেছি। কিন্তু শুরুর দশ ওভারে ব্যাটিং করা কঠিন ছিল। আমরা শেষ পর্যন্ত ৩৫০ রান করেতে পেরেছি কারণ প্রথম ১০ ওভারে আমরা কোনো উইকেট হারাইনি। আসলে প্রক্রিয়াটা অনুসরণ করতে হবে।’
এমপি/এমএমএ/