আয়ারল্যান্ডকে ১০ উইকেটে হারিয়ে বাংলাদেশের সিরিজ জয়
আয়ারল্যান্ডকে ১০ উইকেটে হারিয়ে বাংলাদেশ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিয়েছে ২-০ ব্যবধানে। টস হেরে ব্যাট করতে নামা আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশের পেসারদের তোপে পড়ে ২৮.১ ওভারে মাত্র ১০১ রানে অলআউট হয়ে যায়। বাংলাদেশ সেই রান তাড়া করে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৩.১ ওভারে ১০২ রান করে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় সিরিজ জয়। এর আগে বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল ঘরের মাঠে। আবার আয়ারল্যান্ড খেলতে গিয়ে সিরিজ ড্র করেছিল ১-১ ব্যবধানে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এই সিরিজ ছিল বাংলাদেশের নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার মিশন। প্রথম দুই ম্যাচে আগে ব্যাট করে দলগত সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের রেকর্ড গড়েছিল। পরে প্রথম ম্যাচ জিতেছিল রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় ১৮৩ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ নতুন করে দলগত সংগ্রহে নিজেদের আবারও ছাড়িয়ে যায়। এই ম্যাচে মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি করেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি আর শেষ হতে পারেনি। পরিত্যক্ত হয়। আজ শেষ ওয়ানডে ম্যাচে রানের ব্যবধানে নিজেদের ছাড়িয়ে যেতে পারে কি না তা ছিল দেখার। কিন্তু আগে ব্যাট না করায় সেখানে হতাশ হতে হয়েছিল। কিন্তু পরে তা পুষিয়ে দিয়েছে উইকেটের ব্যবধানে জয়ের নতুন রেকর্ড গড়ে। এর আগে বাংলাদেশ ১০ উইকেটে জয় পায়নি। ৯ উইকেটে জয় ছিল ৫টি। শুধু ওয়ানডে ক্রিকেটে নয়, যেকোনো সংস্করণেই বাংলাদেশের ১০ উইকেটে এটি ছিল প্রথম জয়।
আজ বল হাতে বাংলাদেশের বোলাররা বিশেষ করে পেসত্রয়ী হাসান-তাসকিন-এবাদত মিলে যে তাণ্ডব চালান তাতেই টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার স্বার্থকতা মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে যায় আইরিশদের জন্য। বোলারদের রাজত্বে আয়ারল্যান্ড মাত্র ১০১ রানে অলআউট হয়ে যায়। আর ১০০ ওভারের ম্যাচ হয়ে উঠে অনেকটা টি-টোয়েন্টি। ৪১.২ ওভারেই খেলা শেষ। আয়ারল্যান্ড ২৮.১ ওভারে করেছিল ১০১ রান। বাংলাদেশ সেই রান তাড়া করে মাত্র ১৩.১ ওভারে। দিবা-রাত্রির ম্যাচটি তাই আর রাতের আলোয় গড়াতে পারেনি। যদিও ফ্লাড লাইট জ্বলে উঠেছিল। কিন্তু ক্যাম্পায়ারের বলে তামিম ইকবাল যখন জয়সূচক রান নেন, তখন ঢাকায় মাগরিবের আজান হচ্ছে।
অ্যালান ডোলান্ড আগের দিন বলেছিলেন বাংলাদেশের ৪০০ রান দেখছেন তিনি। কিন্তু আগে ব্যাট না করায় সেই সুযোগ তারা আর পাননি। তবে সুযোগ পেলে যে বাংলাদেশ সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারত তা বোঝা গেছে তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের ব্যাটিংয়ে। তামিম ইকবাল ৪১ বলে ৪১ রান করলেও লিটন দাস ৩৭ বলে তুলে নেন দশম হাফ সেঞ্চুরি।
দুইজন যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন, তাতে করে মনে হয়েছে বাংলাদেশ ১০১ রান নয়, ৩০১ রান পাড়ি দিতে নেমেছে কিংবা তাদের কোনো তাড়া আছে। তাই খেলাটা তাড়াতাড়ি শেষ করে দিতে নেমেছেন। ১০ ওভারে দলের রান ছিল ৮১। তামিম ইকবালের ইনিংসে ছিল ২ ছক্কা ও ৫ চার। লিটনের ৩৮ বলের ইনিংসে ছিল ১০ বাউন্ডারি।
লিটন হাফ সেঞ্চুরি করলেও সম্ভাবনা ছিল তামিম ইকবালের। সিরিজে প্রথমবারের মতো রানের দেখা পাওয়া অধিনায়ক তামিম ইকবাল শুরুতে ছিলেন লিটনের চেয়ে বেশ এগিয়ে। তার রান যখন ৩, তখন লিটনের রান ১৪। দলের রান ৫৬। ওভার ৭। এরপর লিটন দাস খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসেন। তামিম ইকবালকে ৩৩ রানে রেখেই লিটন তাকে ছাড়িয়ে যান পরের ২ ওভারে ৪ বাউন্ডারিতে ২০ রান করে। তারপর চলে দুইজনের রান করার লড়াই। লিটনকে ৩৭ রানে রেখে তামিম ইকবাল ছক্কা মেরে ৪০ রানে পৌঁছান। এরপর আবার দৃশ্যপটে আসেন লিটন। ৩ বাউন্ডারির সঙ্গে কয়েকটি সিঙ্গেল রান নিয়ে ৩৭ বলে পৌঁছে যান ফিফটিতে। দলের রান তখন সমান। জয়সূচক রানও আসতে পারত তার ব্যাট থেকে। কিন্তু ওভারের শেষ বলে তিনি রান নিতে পারেননি। যে রানটি আসে পরের ওভারের প্রথম বলে তামিমের ব্যাট থেকে।
২৩ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন হাসান মাহমুদ। আর সিরিজ সেরা মুশফিকুর রহিম। দুই ম্যাচে তার রান ১৪৪। গড়ও ১৪৪.০০।
এমপি/এসজি