চ্যালেঞ্জ নিয়ে দলে টিকে থাকতে চান জাকের
আবাহনী-মোহামেডানের খেলা চলছে তখন মাঠে। সে সময়ই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দলে সুযোগ পাওয়ার খবর জানতে পারেন উইকেটকিপার ব্যাটার জাকের আলী অনিক। তার এই সুযোগ পাওয়া ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করে। বিশেষ করে বিসিএলে ৬ ইনিংসে ৩ সেঞ্চুরি আর ১ হাফ সেঞ্চুরিতে ৯৮.৪০ গড়ে রান করেছিলেন ৪৯২।
বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে তিনি ১২০.৬৮ স্ট্রাইক রেটে ১১ ম্যাচে ১৭৫ রান করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় তার এই সুযোগ। প্রধান নির্বাচকও তার ভিডিও বার্তায় জাকেরের এই ঘরোয়া সাফল্যের কথাই তুলে ধরেন।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নতুন মুখ যে দুইজন, তাদের একজন হলেন এই জাকের আলী অনিক। স্বাভাবিক কারণে মোহামেডান-আবাহনীর ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন তিনি। নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে ২৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ! আমি স্বাভাবিকই আছি। অন্যান্য ম্যাচগুলো আমি যেরকম ফোকাস নিয়ে খেলি, একই ফোকাস নিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।’
জাতীয় দলে সুযোগ পেলেও আবেগে গা ভাসাননি জাকের। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে এসেই প্রথমে বলেন, ‘দ্রুত করতে হবে। টিম মিটিং আছে।’ এমন সংবাদ প্রথম পাওয়ার সুখ স্মৃতি বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘(খালেদ মাহমুদ) স্যার আমাকে জানিয়েছিলেন যে, ‘প্রস্তুত থাকিস। হয়তোবা (জাতীয় দলে ডাক পাওয়া) হতে পারে। নিশ্চিত খবরটা কিছুক্ষণ আগে ডাগআউটে জানতে পেরেছি। আমি তো ম্যাচে ছিলাম। এই আর কি।’
স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা ধরে রাখা যেমন কঠিন, তেমনি জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর তা ধরে রাখার ক্রিকেটারদের কাছে খুবই কঠিন। এখন জাতীয় দলের পাইপলাইন সমৃদ্ধ। ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরমারদের অভাব নেই। সবাই ‘নক’ করছেন। সুযোগ পেলেই নির্বাচকরা বাজিয়ে দেখছেন। আবার সুযোগ পাওয়ার পর ভালো করতে না পারলে ‘প্রস্থান’ পথও তৈরি থাকে।
জাকের যে সুযোগ পেয়েছেন, সেখানে বাদ পড়ার তালিকাটা বেশ বড়ই। চারজন। তাদের একজন রেজাউর রহমান রাজা না খেলেই বাদ পড়েছেন। তানভীর ইসলাম এক ম্যাচে খেলে মোটামুটি ভালো করলেও নেই দলে। নুরুল হাসান সোহান ও আফিফ হোসেনের মতো জাতীয় দলে অনেক পুরোনো হয়ে যাওয়া দুই ক্রিকেটারও আছেন বাদ পড়ার তালিকায়। এসবই অবগত জাকের। লংগার ভার্সন ম্যাচে বেশি সফল হওয়ায় তাকে হয়তো ফিনিশারের ভূমিকায় দেখতে চাইবে দল।
জাকের বলেন, ‘আমি বিপিএলে এরকম জায়গায়ই (শেষ দিকে) ব্যাটিং করেছিলাম। ওরকম পরিকল্পনা নিয়ে অনুশীলন করার অভিজ্ঞতা আমার আছে। আমি আবাহনীতে যে অনুশীলন করি, ওখানেও স্লগ ওভারের কিছু অনুশীলন করে নিয়েছি। তো আমার ব্যক্তিগত কিছু প্রস্তুতি আছে। এরকমভাবেই নিজেকে আমি প্রস্তুত করেছি।’
জাকের তার এই সুযোগকে নিয়েছেন চ্যালেঞ্জ হিসেবে। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ক্রিকেটারের জন্যই চ্যালেঞ্জিং। অন্যান্য যারা কিপার আছে, তারাও হয়তো এভাবেই দেখেন জিনিসগুলো। চেষ্টা করব নিজের কাজটা ঠিকঠাক করার। যেমন দায়িত্ব থাকে, ওইটা পালন করার চেষ্টা করব।’
বিপিএলে নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে জাকের আলী বলেন, ‘সবশেষ বিপিএলে আমি প্রতিটি ম্যাচ খেলেছি। আগের বিপিএলগুলোয় আমি ম্যাচ পাচ্ছিলাম না। এবার ম্যাচ পাওয়ার কারণে আমি বিভিন্ন জায়গায় ব্যাটিং করার সুযোগ পাই। আমি বলব না যে পুরোপুরি ভালো খেলতে পেরেছি। তবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইনিংস আমি খেলেছি। যেগুলো আমার ক্যারিয়ারের জন্য অনেক ভালো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উনারা (নির্বাচকরা) আগেও বলেছেন, ক্রিকেটারদের বাজিয়ে দেখছেন। ওই প্রক্রিয়ার মধ্যে আমিও হয়তো পড়েছি। আমাকে প্রমাণ করার জন্যই ওখানে ডাকা হয়েছে। আমি চেষ্টা করব। যেহেতু টি-টোয়েন্টিতে ডাকা হয়েছে, বিপিএলে আমি যে ধরনের দায়িত্ব পালন করেছিলাম, চেষ্টা করব ওই ধরনের ক্যামিও ইনিংসগুলো খেলার।’
এমপি/এসজি