বৃথা গেলে তানজিদের ১৪২ রান
কোনো কাজেই আসেনি তানজিদ হাসান তামিমের ১৪২ রানের ইনিংস। তার এই ইনিংসও তার দল ব্রাদার্স ইউনিয়নের হার বাঁচাতে পারেনি। হেরে গেছে মাশরাফি বিন মর্তুজার লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের কাছে ৩ উইকেটে। বিকেএসপির ৩ নাম্বার মাঠে তানজিদের ১৪২ রানের ইনিংসে ভর করে ব্রাদার্স ইউনিয়ন ৫ উইকেটে ২৯৯ রান সংগ্রহ করে। সেই রান লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ পাড়ি দেয় ৪৮.৪ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩০২ রান করে।
টস হেরে ব্যাট করতে নামার পর ব্রাদার্সের ইনিংস গড়ে উঠে মূলত তানজিদের ব্যাটে ভরে করেই। উইকেট পতনের মড়ক লাগেনি অবশ্য, তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে তানজিদ নিজের রান বাড়ানোর পাশাপাশি দলের রানও বাড়িয়ে নিতে থাকেন। তিনি আউট হন ২৬ বল বাকি থাকতে। দলের রান ছিল তখন ৪ উইকেটে ২৬৮।
দীর্ঘ এই যাত্রা পথে তানজিদকে সঙ্গ দেন ওপেনার ও অধিনায়ক মিজানুর রহমান (২০) ৪০, সাব্বির হোসেন (৩৭) ৮০, আনিসুল ইসলাম (২৮) ৬১ ও মায়শাকুর রহমান (অপরাজিত ৫৩) ৮৭ রানের জুটি গড়ে। তানজিদ হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৫৪ বলে নাঈম ইসলাম জুনিয়রের ইনিংসের করা ১৮তম ওভারের তৃতীয় বল ডিপ স্কয়ার লেগে বাউন্ডারি মেরে। সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১১১ বলে সোহাগ গাজীর বলে ২ রান নিয়ে।
সেঞ্চুরি করার পর তানজিদ হাত খুলে খেলতে থাকেন। মাশরাফির এক ওভারে চার ও ছয় মেরে ১২ রান আদায় করে নেন। আল আমিনের এক ওভারে পরপর দুই চারে নেন ১১ রান। পরে তাকে আউট করেন অভিজ্ঞ মাশরাফি বোল্ড করে। তার ১৪২ বলে ১৪২ রানের ইনিংসে ছিল ৪টি ছক্কা ও ১৪টি চার। মায়শাকুর ৪৯ বলে ১ ছক্কা ও ২ চারে ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন।
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের চেরাগ জানি ৪৭ রানে নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন মাশরাফি, আল আমিন হোসেন ও সোহাগ গাজী।
জবাব দিতে নেমে দলীয় ৩০ রানে মুনিম শাহরিয়ার ফিরে গেলেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে পারভেজ হোসেন ইমন ও সাব্বির রহমান ৮৩ রান যোগ করে দলকে খেলায় রাখেন। ইমন ৭ ছক্কা ও ৪ চারে ৩৭ বলে ৬৬ রান করে তিনি সাব্বির রহমানের বলে জাহিদুজ্জামানের হাতে ধরা পড়েন। তিনি হাফ সেঞ্চুরি করেন মাত্র ২৬ বলে। সাকলায়েন সজিবের করা ওই ওভারে তিনি ২৭ রান আদায় করেন। এই ওভারের আগে তার রান ছিল ২০ বলে ৩১। ইমন আউট হওয়ার পর সাব্বির রহমানও ৩৪ রান করে ফিরে যাওয়ার পর ইরফান শুক্কুর ও চেরাগ জানি আবার হাল ধরে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যেতে থাকেন। দুইজনেই হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে যান।
সাকলায়েন সজিবের ওভারে ১ রান নিয়ে চেরাগ জানি হাফ সেঞ্চুরি করেন ৪৮ বলে। ইরফান তার হাফ সেঞ্চুরি করেন ৬৩ বলে রাহাতুল ফেরদৌসের ওভারে ১ রান নিয়ে। এই রাহাতুল ফেরদৌসই পরে আবার রূপগঞ্জের ভালো অবস্থানকে নড়বড়ে করে দেন। পরপর দুই বলে তুরে নেন ২ উইকটে। ইরফান-চেরাগের ৯৯ রানের জুটি ভাঙেন ইরফানকে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে মোহর শেখের ক্যাচে পরিণত করে। ইরফান ৬৯ বলে ৩ চারে ৫৩ রান করেন। পরের বলে মাশরাফি আউট হন বোল্ড হয়ে। এসময় দলের রান ছিল ৩৭.৫ ওভারে ৫ উইকেটে ২৩৫। জয়ের জন্য রূপগঞ্জের প্রয়োজন ১২.১ ওভারে ৫ উইকেটে ৬৫ রানের।
জয়ের বাকি কাজটি সারেন চেরাগ জানি। তানভীর হায়দারের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে যে ৪০ রান আসে, সেখানে তানভীরের অবদান ছিল মাত্র ১৩ রানের। তানভীর আউট হওয়ার পর চেরাগ জানি সোহাগ গাজীকে নিয়ে জয়ের কাজ সেরে ফেলেন অনেকটা। ৮৪ বলে ১ ছক্কা ও ৭ চারে ৯৪ রান করে চেরাগ জানি তিনি যখন আউট হন, তখন দলের রান ৭ উইকেটে ২৯২। সাব্বির হোসেনের বলে আনিসুল ইসলামের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তিনি আউট হওয়ার পরের ওভারে গালিবকে ছক্কা মেরে সোহাগ গাজী জয় এনে দেন। তিন ম্যাচে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের এটি ছিল তৃতীয় জয়।
এমপি/এসজি