৯২ রানের পর ৪৯, আক্ষেপের নাম হৃদয়
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম একদিনের ম্যাচে যদি ৮ রান হয়ে যেত তাহলে অভিষেকেই সেঞ্চুরি পেয়ে যেতেন তৌহিদ হৃদয়। ইতিহাসের পাতায় উঠে যেত নাম। হয়ে যেতেন ইতিহাসের ১৭তম ব্যাটার। আর বাংলাদেশের ইতিহাসে খোদাই করে লেখা হতো নাম। কারণ হৃদয়ই হতেন প্রথম বাংলাদেশি। কিন্তু ৮৫ বলে ২ ছক্কা ও ৮ চারে ৯২ রান করে তিনি গ্র্যান্ড হিউমের বলে উইকেটের পেছনে হ্যারি টাকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে সবাইকে আফসোসে পুড়িয়ে ফিরে আসেন।
অথচ হৃদয় যখন নব্বইয়ের ঘরে গিয়েছিলেন, তখনই তাকে ঘিরে সেঞ্চুরির ডাল-পালা বিস্তার করতে শুরু করেছিল সবার মাঝে। এর আগে সাকিব ৯৩ রানে আউট হয়ে সবাইকে হতাশ করেছিলেন। এক ইনিংসে তো আর দুইবার হতাশ হতে হবে না। হৃদয়ের যখন অভিষেক ম্যাচ। খেলছেনও আত্মবিশ্বাস নিয়ে, তখন তিনি রেকর্ড বইয়ে নাম তুলবেনই। কিন্তু এই ভাবনার মাঝেই তিনি সবাইকে হতাশার সাগরে ভাসিয়ে দিন আউট হয়ে। ফুটবলে একবার গোল করতে না পারলে পরে আবার চেষ্টা করা যায়। কিন্তু ক্রিকেটে ব্যাটারদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় কোনো সুযোগ নেই!
অমুছনীয় এক রেকর্ড করা থেকে বঞ্চিত হয়ে হৃদয় দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামেন। এই ম্যাচেও যথারীতি ছিল তার ব্যাটের ঝিলিক। এক একটি রান জানান দিচ্ছিল আগামী দিনে বাংলার ব্যাটিং স্তম্ভের নাম।
প্রথম ম্যাচে নিজের ‘আইডল’ মুশফিকুর রহিমকে পেয়েছিলেন। জুটিকে তারা গড়েছিলেন ৮০ রান। আজও তিনি পেয়ে যান তার আইডলকে। এবার তারা গড়েন ১২৮ রানের জুটি। মুশফিক ছিলেন বেশি মারমুখী। সে তুলনায় হৃদয় একটু পেছনে ছিলেন। কিন্তু বলের অপব্যবহার করেননি।
একপর্যায়ে অবশ্য দুইজনেই সমান তালে এগোচ্ছিলেন। ৪২তম ওভার শেষে দলের রান যখন ৪ উইকেটে ২৬১, তখন হৃদয়ের রান ছিল ২৫ বলে ৩৪। মুশফিকুর রহিমের রান ছিল ২৯ বলে ৩৬। এরপরই মুশফিক এগিয়ে যেতে থাকেন। অ্যাডায়ারের করা ইনিংসের ৪৩তম ওভারে ১৭ রান নিয়ে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। পরের ওভারে কার্টিস ক্যাম্ফারের ওভারে চড়াও হয়ে নিজের রানকে নিয়ে যান ৬৫-এ। তাই বলে হদয় থমকে যাননি। তিনিও এগিয়ে যেতে থাকেন হাফ সেঞ্চুরির দিকে।
মুশফিকের ৬৫ রানের সময় হৃদয়ের রান ৪০। এভাবে তিনি এগিয়ে যেতে থাকেন হাফ সেঞ্চুরির দিকে। ইনিংসের ৪৭তম ওভার করতে আসেন অ্যাডায়ার। তার প্রথম বলেই হৃদয় ২ রান নিয়ে পৌঁছে যান ৪৯ রানে। আর বাকি মাত্র ১ রান। তাহলেই হয়ে যাবে অভিষেকে পরপর দুই ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি। কিন্তু পরের বলেই তিনি উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসেন। হতাশার চাদর দূর করতে তিনি রিভিউ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ হয় ৩৪ বলে ১ ছক্কা ও ৪ চারে সাজানো ৪৯ রানের ইনিংসের।
অভিষেকে সেঞ্চুরি করতে না পারার আক্ষেপের পর এবার হাফ সেঞ্চুরি করতে না পারার আক্ষেপে পুড়ছেন হৃদয়। সঙ্গে সমর্থকরাও।
এমপি/এসজি