হাথুরুসিংহের দৃষ্টি সীমানায় মাহমুদউল্লাহ
বাংলাদেশের ক্রিকেট আজ যে পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে আছে পঞ্চপাণ্ডবের এক বিরাট ভূমিকা। এই পঞ্চপাণ্ডবের এক পাণ্ডব হলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২০১৫ সালে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের জমানায় ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে বাংলাদেশ যে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিল, তাতে ছিল মাহমুদউল্লাহর বিশেষ অবদান। ব্যাট হাতে ইংল্যান্ড ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ছিল তার ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৩ রান করার পর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৮ রানে ছিলেন অপরাজিত।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সেমিফাইনাল খেলেছিল ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে। এখানে বাংলাদেশকে সেমিতে নিয়ে আসার পেছনেও ছিল মাহমুদউল্লাহর বিশাল অবদান। কার্ডিফে খেলেছিলেন অপরাজিত ১০২ রানের ইনিংস। নিউ জিল্যান্ডের ২৬৫ রান টপকাতে গিয়ে বাংলাদেশ ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বড় হারের শঙ্কায় ছিল। কিন্তু পঞ্চম উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব ২২৪ রান যোগ করে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান। ৪৭.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে পৌঁছে গিয়েছিল সেমি ফাইনালে। সাকিব ১১৪ রান করে আউট হয়েছিলেন।
সামনে আরও একটি বিশ্বকাপ। নতুন করে ফিরে আসা চন্ডিকা হাথুরুসিংহের অধীনে চলছে যাচাই-বাছাই। সেখানে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে আপাতত নেই মাহমুদউল্লাহ। তার এই না থাকাটা ফর্মহীনতা। টেস্ট দল থেকে নিয়েছেন আগেই অবসর। ছিলেন টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক। নেতৃত্ব হারানোর পাশাপাশি পরে দলে জায়গাও হারিয়েছেন। এরপর টিকে ছিলেন শুধু ওয়ানডে ক্রিকেটে। এখন সেখানেও নড়বড়ে। তাহলে কি মাহমুদউল্লাহর বিদায় ঘণ্টা বেজে গেল? দেখা যাবে না আর লাল-সবুজের জার্সিতে? খেলা হবে না ভারতে অক্টোবর অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপ? নির্বাচকরা জানিয়েছেন মাহমুদউল্লাহকে বাদ দেয়াও হয়নি। বিশ্বকাপের জন্য চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে তা মনে করেন না। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহকে ৩ ম্যাচই খেলিয়েছেন হাথুরুসিংহে। মাহমুদউল্লাহ রান করেছিলেন ৩১, ৩২ ও ৮। দলের অন্যদের সঙ্গে তুলনা করলে একেবারে মন্দ নয়। তাই মাহমুদউল্লাহ হাথুরুসিংহের দৃষ্টির আড়ালে চলে যাননি। বহাল তবিয়তেই আছেন দৃষ্টি সীমানায়।
তিনি বলেন, ‘আমি করি না যে মাহমুদউল্লাহ তার সেরা সময় পেছনে ফেলে এসেছে। আমাদের লক্ষ্য বিশ্বকাপ। তাই আমরা খেলোয়াড়দের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। যাতে আমাদের হাতে পর্যাপ্ত সংখ্যক ক্রিকেটার থাকে। কারণ যখন-তখন একজন ক্রিকেটারের যেকোনো সমস্যা হতে পারে। তাই আমরা খেলোয়াড় পরখ করছি যাদের উপর আমরা ভরসা করতে পারি।’
বিশ্বকাপ নিয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আমরা তরুণ কিছু ক্রিকেটারকে বাজিয়ে দেখতে চাই। বিশ্বকাপের অনেক সময় বাকি থাকলেও আমরা ওয়ানডে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাব মাত্র ১৫টি। যে কারণে আমরা এমন কিছু খেলোয়াড়কে দেখতে চাই, যারা সুযোগ পেয়ে দলে অবদান রাখতে পারে। রিয়াদ আমাদের পরিকল্পনায় এখনো আছে।’
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সর্ম্পকে চন্ডিকা বলেন, ‘রিয়াদ দলের জন্য অনেক করেছে। এখনো করছে। সে অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। সে ফুরিয়ে গেছে বা সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে এমনটি ভাবার কারণ নেই। আমরা জানি তার যোগ্যতা সম্বন্ধে। সে কী দিতে পারবে দলকে। আমরা কিছু খেলোয়াড় দেখছি, যারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করতে পারে।’
এমপি/এসজি