নবাগত ঢাকা লিওপার্ডসকে হারিয়ে শুভ সূচনা চ্যাম্পিয়ন শেখ জামালের
সৈকত আলী ও জাতীয় দলের তৌহিদ হৃদয়ের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে চলকিত মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার বিভাগ ক্রিকেট লিগে শুভ সূচনা করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
বুধবার (১৫ মার্চ) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী ম্যাচে তারা ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ থেকে রানার্সআপে হয়ে উঠে আসা নবাগত ঢাকা লিওপার্ডসকে। লিওপার্ডসের ১৬৯ রানের জবাবে শেখ জামাল সেই রান অতিক্রম করে ২ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান করে।
মিরপুরে লিগের উদ্বোধনী আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা ছিল এই ম্যাচকে ঘিরেই। উপস্থিতে ছিলেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন, ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপোলিসের (সিসিডিএম) চেয়ারম্যান ও বিসিবি পরিচালক সালাউদ্দিন চৌধুরী এবং পৃষ্ঠোপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রবিউল ইসলাম মিলটন।
উদ্বোধনী ম্যাচ হয়ে উঠেছিল বোলার বান্ধব। টস জিতে লিওপার্ডসকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে তার পুরো ফায়দা তুলে নেয় জিয়াউর রহমানের শেখ জামাল। মৃত্যুঞ্জয়, পারভেজ রাসুল ও সাইফুলের মারাত্বক বোলিংয়ে ঢাকা লিওপার্ডস ৩৯.৩ ওভারে মাত্র ১৬৮ রানে অলআউট হয়ে যায়।
লিওপার্ডসের শুরুটা কিন্তু একেবারে মন্দ ছিল না। পিনাক ঘোষ ও সাব্বির হোসেনের উদ্বোধনী জুটিতে ৩৫ রান আসে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন মঈন খান। সাব্বির ১৪ রান করে মৃত্যূঞ্জয়ের শিকার হন। এরপরই ধ্বস নামে। বিান উইকেটে ৩৫ রান থেকে ৫ উইকেটে দলের রান দাঁড়ায় ৬৯। ৩৪ রানে হারায় এই ৫ উইকেট। পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪১ রান করে আউট হন পিনাক ঘোষ।
এরপর মঈন খান ও চাতুরাঙ্গা ডি সিলভা ৩৪ রানের জুটি গড়ে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এই জুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর আবার বিপর্যয় শুরু হয়। চাতুরঙ্গা ১৬ বলে ১ ছক্কা ও ৩ চারে ২৫ রান করে পারভেজ রাসুলের শিকার হন। এ সময় দ্রুত আউট হয়ে যান সোহরাওয়ার্দী শুভ ও দেলোয়ার হোসেন। ৫ উইকেটে ১০৩ রান থেকে দলের সংগ্রহ পরিণত হয় ৮ উইকেটে ১১৫। নবম উইকেট জুটিতে মঈন খান ও মেহরাব হোসেন আবার ৪৬ রানের জুটি গড়ে দলের সংগ্রহকে দেড়শ পার করে দেন। ৪৯ বলে ৪০ রান করে সাইফুলের বলে জিউয়ারের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন। মেহরাব ২০ রান করে আউট হন আবর জিয়াউরের বলে। পারভেজ রাসুল ২৩ রানে ও মৃত্যুঞ্জয় ৩১ রানে নেন ৩টি করে উইকেট। সাইফুলের ২ উইকেট ছিল ৩৯ রানে।
ছোট টার্গেটের পেছনে ছুটে শেখ জামাল ওপেনার সৈকতের মারমুখি ব্যাটিংয়ের সামনে পড়ে। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৪৯ রান। সেখানে সৈকতের পার্টনার সাইফ হাসান মাত্র ৮ রান করে আউট হন। এরপর সৈকত ও ফজলে মাহমুদ রাব্বি দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪৩ রান যোগ করে দলের বড় জয়ের পথ তৈরি করে দেন। ৫৬ বলে ২ ছক্কা ও ৯ চারে ৬৩ রান করে সালাহউদ্দিন সাকির বলে দেলোয়ারের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেওয়ার পর ফজলে মাহমুদের সঙ্গে তৌহিদ হৃদয় জুটি বেঁধে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। মঈন খানের বলে ছক্কা মেরে তিনি হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৪৭ বলে।
তৌহিদ হৃদয় খেলেন টি-টোয়ন্টি ধাঁচে। তিনি ক্রিজে আসার সময় দলের জয়ের জন্য প্রয়োজন চিল ৭৮ রানের। সেখানে তার ব্যাট থেকেই আসে মাত্র ৩০ বলে ২ ছক্কা ও ৭ চারে অপরাজিত ৫৪ রানের ইনিংস। সারাহউদ্দিন সাকির বল লং অফে খেলে ২ রান নিয়ে তিনি হাফ সেঞ্চুরি করেন ২৯ বলে।পরে জিতে নেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। তার সঙ্গে তখন ৭৯ বলে ১টি করে চার ও ছয় মেরে ৪১ রানে অপরাজিত ফজলে মাহমুদ রাব্বি।
লিওপার্ডসের চাতুরঙ্গা ডি সিলভা ২৩ ও সালাহউদ্দিন সাকিব ৩৮ রানে নেন ১টি করে উইকেট।
এমপি/এমএমএ/