নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে শ্রীলঙ্কার স্বপ্ন ভঙ্গ, ফাইনালে ভারত
ওয়ানডে ক্রিকেটের পর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের চাকচিক্যে টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি অনেকেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে শুরু করেছেন। কিন্তু ক্রিকেটের আসল সৌন্দর্য্য টেস্ট ক্রিকেটেই। ক্রিকেটের সমস্ত ব্যাকরণ টেস্টে ক্রিকেটেই। ক্রাইস্টচার্চে বিশ্ব ক্রিকেটে দেখল স্বল্প সময়ের ব্যবধানে আরও একটি উত্তেজনাকর টেস্ট।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ বলে ১ রান নিয়ে ২ উইকেটে টেস্ট জিতেছে নিউজিল্যান্ড। রানটি আবার এমনি এমনি আসেনি। খুবিই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল সেই রান। আশিতা ফার্নান্ডোর করা বাউন্সারে কেন উইলিয়ামসন পরাস্ত হন।
পরে জয় সূচকে রান নিতে পড়িমরি করে দৌড় দেন। এদিকে লঙ্কান কিপার নিরোশাস ডিকাবেলা সরাসরি নন স্ট্রাইকিং প্রান্তের স্ট্যাম্পে আঘাত করে। রিপ্লেতে দেখা যায় ভগ্নাংশ সেকেন্ডের ব্যবধানে ক্রিজে পৌছে গেছেন উইলিয়ামসন। রান আউট না হওয়া নিশ্চিত হয়ে যাওয়াতে দেন বিজয়ের হাসি।
এর আগে শেষ ওভারের নাটকীয়তা ছিল ভরপুর। নিউজিল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৮ রানের। প্রথম ২ বরে আসে ২ রান। তৃতীয় বলে ম্যাট হ্যারি ১ রান নিয়ে রান আউট হয়ে যান। চতুর্থ বলে উইলিয়ামসনের ব্যাট থেকে আসে বাউন্ডারি। রান হয়ে যায় সমান। কিন্তু পঞ্চম বলে কোন রান না হওয়াতে শেষ বলে গিয়ে সৃষ্টি হয় সেই চরম নাটকীয়তা।
এর আগে নিউ জিল্যান্ড ইংল্যন্ডের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল ১ রানে। সেই ম্যাচেও উইলিয়ামস সেঞ্চুরি করেছিলেন। এবারও তিনি সেঞ্চুরি করেন। অপরাজিত থাকেন ১২১ রান করে।
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে শেষ বলে জয়ের এটি দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে ১৯৪৮ সালে ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইংল্যান্ড জিতেছিল একই ব্যবধানে। সেই টেস্টেও শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৮ রানের।
এই জয়ে নিউজিল্যান্ডের কোন লাভ হয়নি। ক্ষতি হয়েছে শ্রীলঙ্কার। যেতে পারেনি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। তাদের হারে ফাইনালে খেলার সুযোগ করে নিয়েছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার ৬৮.৫২, ভারতের ৬৪.০৬ ও শ্রীলঙ্কার ৫৩.৩৩।
আগমী জুন ওভারে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনাল খেলবে ভারত। গতবারও ভারত ফাইনাল খেলেছিল। হেরেছিল নিউ জিল্যান্ডের কাছে।
শেষ দিন নিউ জিল্যান্ড ১ উইকেটে ২৮ রান নিয়ে খেলতে নেমে বৃষ্টির কারণে লাঞ্চের কিছৃ সময় পরে খেলা শুরু হয়। ৯০ রানে ৩ উইকেট হারানার পর নিউজিল্যান্ডের জয় কিছুটা শঙ্কায় পড়েছিল। চতুর্থ উিইকেট জুটিতে উইলিয়ামসন ও ড্যারেল মিচেল ২৬.১ ওভারে ১৪২ রান যোগ করে দলের জয়ের সম্ভবনা জাগিয়ে তুলেন। জুটি ভাঙ্গে মিচেল ৮১ রান করে ফার্নান্ডোর বলে বোল্ড হলে।
এ সময় তাদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৪৯ বলে ৫৩ রানের। সেটি ক্রমান্বয়ে কঠিন হয়ে পড়ে দ্রুত উইকেট পড়তে থাকলে। কিন্তু এক প্রান্তে উইলিয়ামসন টিকে থাকায় শেষ পর্যন্ত জয় এসে ধরা দেয় শেষ বলে। উইলিয়ামসন তার ক্যারিয়ারের ২৭তম সেঞ্চুরি তুলে নেন ১৭৭ বলে ১ ছক্কা ও ১০ চারে। তিনি শেষ পর্যন্ত ১৯৪ বলে ১ ছক্কা ও ১১ চারে ১২১ রান করে অপরাজিত থাকেন।
এমপি/এমএমএ/